বিশ্ব জুড়ে মন্দার জেরে গয়না রফতানিতে কোপ মণিকাঞ্চনে
গোদের উপর বিষফোড়া।
বিশ্ব মন্দায় মার খাচ্ছে গয়না রফতানি। তার উপর পুরোপুরি কাজে লাগানো হয়নি তৈরি কাঠামো। ফলে এ রাজ্যে গয়না শিল্পের এক মাত্র বিশেষ আর্থিক অঞ্চল (এসইজেড) মণিকাঞ্চনে ব্যবসার হাল এতটাই খারাপ যে, সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা চলতি অর্থবর্ষে এক ধাক্কায় ১৫% রফতানি কমবে। ২০১১-’১২ সালে এখান থেকে মোট ১০,৪২৭ কোটি টাকার গয়না রফতানি হয়েছে। সোনার দাম ১০% বাড়লেও এ বার এই রফতানির পরিমাণ ধরে রাখা যাবে না।
ধুঁকছে দেশে গয়না তৈরির অন্যান্য এসইজেড-ও। কিন্তু মণিকাঞ্চনের সমস্যা দ্বিগুণ, কারণ সময় থাকতে সুযোগের সদ্ব্যবহার করা যায়নি। তৈরি কাঠামো পুরোপুরি কাজে লাগানো না-হওয়ায় ব্যবসাও মুম্বই, সুরতের মতো ফুলেফেঁপে ওঠেনি। অবস্থা এতটাই বেহাল যে, এস ই জেড-এর শর্ত মেনে শুধুমাত্র রফতানির জন্য কতদিন উৎপাদন চালু রাখা যাবে তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। অধিকাংশ ছোট ও মাঝারি সংস্থা নামমাত্র ব্যবসা করছে। স্বস্তিতে নেই বড় সংস্থাও। বি সি সেন-এর প্রধান সুবীর সেন বলেন, “বিশ্ব বাজারে চাহিদা অল্প। এসইজেড-এর সুযোগ-সুবিধাও আগের মতো নেই। নেই আয়কর ছাড়ের সুযোগ। ফলে মণিকাঞ্চনে ব্যবসা করা আর লাভজনক নয়।”
লাভের মুখ দেখা যাবে না বলে মণিকাঞ্চনে নতুন লগ্নির সম্ভাবনাও নেই। এখানে ৩১টি কারখানার পরিকাঠামো তৈরি। তার মধ্যে মাত্র ১৯টি কারখানা আছে। বাকি জায়গার আপাতত কোনও চাহিদা নেই বলে জানান কর্তৃপক্ষ।
নতুন পরিকাঠামো তৈরির জায়গাও রয়েছে। পাঁচ একরের এই আর্থিক অঞ্চলে ২ লক্ষ বর্গ ফুট জায়গা তৈরি হয়েছে। বাকি জমিতে আরও ৪ লক্ষ বর্গ ফুট পরিকাঠামো তৈরির ছাড়পত্র রাজ্যের হাতে রয়েছে। সেই জমি ব্যবহার করার জন্য লগ্নি প্রস্তাবও পেয়েছিল রাজ্য। বিশ্ব বাজার তুঙ্গে থাকার সময়ে এখানে লগ্নি করতে চেয়েছিল মুম্বইয়ের সংস্থা গীতাঞ্জলি ও শ্রী গণেশ। অভিযোগ, প্রশাসনিক গড়িমসিতে ভেস্তে গিয়েছে পরিকল্পনা।
১০০ কোটি টাকার বেশি লগ্নির পরিকল্পনা করে শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত সংস্থা শ্রী গণেশ। কারখানা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য সব মিলিয়ে ১ লক্ষ ২০ হাজার বর্গ ফুট জায়গা জুড়ে পরিকাঠামো গড়ে তুলতে চায় তারা। বিগত সরকারের আমলে সেই প্রস্তাব দু’বছর ফাইলবন্দি হয়ে পড়ে থাকে। এর পরে প্রকল্প নিয়ে আর আগ্রহ দেখায়নি সংস্থা। বর্তমান সরকারের সঙ্গেও আলোচনা করে কাজের কাজ হয়নি।
জয়পুর, সুরত ও হায়দরাবাদেও আছে এ ধরনের এসইজেড। কোচি, চেন্নাই, নয়ডার বহুপণ্য এসইজেডে রয়েছে গয়না শিল্পের কারখানা। জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের মতে আমেরিকা, ইউরোপ ও জাপানের বাজার পড়ে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে। দেশে গয়নার চাহিদা যথেষ্ট। কিন্তু এসইজেডে তৈরি জিনিস দেশে বিক্রি করতে যা কর দিতে হয়, তাতে লাভের মুখ দেখা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে সম্প্রসারণের অন্য পরিকল্পনা ছাড়া পথ নেই বলে মনে করছে শ্রী গণেশও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.