নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
খদ্দের সেজে এসে পেট্রোল পাম্পের কর্মীদের মারধর করে লক্ষাধিক টাকা লুঠ করে পালাল একদল দুষ্কৃতী। আসানসোল দক্ষিণ থানার ভগৎপাড়া এলাকায় মঙ্গলবার রাতের ঘটনা। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত চলছে। এখনও কেউ ধরা পড়েনি। আহতদের আসানসোল মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পেট্রোল পাম্পের মালিক ও কর্মীরা জানান, মঙ্গলবার রাত ১০ টা নাগাদ তিনটি মোটরবাইকে চেপে ছয়জন ওই পেট্রোল পাম্পে আসে। বাইকে তেল ভরে ক্যাশ কাউন্টারে টাকা জমা দিয়ে তেলের স্লিপ নিতে যায়। এর পরই হঠাৎ এদের একজন রিভলভার বার করে বাট দিয়ে এক কর্মীর মাথায় মারে। এর পর অন্যান্য কর্মীদের ভয় দেখিয়ে কাউন্টারের দরজার তালা খুলে দিতে বাধ্য করে। ভিতরে ঢুকে সে দিনের তেল বিক্রির লক্ষাধিক টাকা লুঠ করে চম্পট দেয়। মাত্র ১০ মিনিটে কাজ উদ্ধার করে চলে যায়। পেট্রোল পাম্পের মালিক সঞ্জীব রায় বলেন, “রাত বাড়ছিল। এলাকাও ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। আমরা পাম্প বন্ধ করার উদ্যোগ নিচ্ছিলাম। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দশ মিনিটের মধ্যে ওরা সব লুঠ করে নিয়ে পালাল।” |
মঙ্গলবার রাতে ঘটনার পরে জমায়েত জনতা।—নিজস্ব চিত্র। |
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব সম্প্রতিই খুলেছে আসানসোলের গড়াই রোড সংলগ্ন ভগৎপাড়ার এই পেট্রোল পাম্পটি। জিটি রোড থেকে এক কিলোমিটার ও দক্ষিণ থানা থেকে মাত্র দুই কিমি দূরে ওই জনবহুল এলাকায় রাত দশটা নাগাদ এ ধরনের দুঃসাহসিক লুঠপাটের ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। মঙ্গলবার রাতে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যাওয়ার পরেই পাম্পের কর্মীদের চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। কর্মীদের আহত দেখে স্থানীয় লোক জন প্রথমে থানায় খবর পাঠান। পরে আহতদের আসানসোল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অল্প সময়ের মধ্যেই ঘটনাস্থলে চলে আসেন আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। দুষ্কৃতীদের মারে জখম হন পাম্পের মালিক সঞ্জীব রায় ও আর এক কর্মী বিদ্যুৎ মণ্ডল। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সঞ্জীববাবুকে ছেড়ে দেওয়া হলেও হাসপাতালে ভর্তি করে নেওয়া হয় বিদ্যুৎবাবুকে। হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে তিনি বলেন, “ওরা বন্দুক উঁচিয়ে গুলি করে দেবে বলছিল। খুব বেঁচে গিয়েছি।”
গত দু’মাস ধরে বাইকবাহিনী দুষ্কৃতীদের লুঠ ও ছিনতাইয়ে আতঙ্কিত পথচলতি মানুষজন ও রাতবিরেতের ব্যবসায়ীরা। গত ২৯ নভেম্বর আসানসোলের দক্ষিণ পুলিশ ফাঁড়ি থেকে মাত্র ১৫ মিটার দূরে এক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা ছিনতাই করে পালায় দুই বাইক আরোহী। একই ভাবে গত ১৮ ডিসেম্বর আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) পুলিশ কর্তার অফিস থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে কোর্ট রোডের উপর এক ব্যক্তির কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা ছিনিয়ে পালায় দুই দুষ্কৃতী। অথচ এই দুই ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের এখনও ধরতে পারে না পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে ফের ওই ঘটনায় নতুন করে আতঙ্ক চেপে বসেছে শহরবাসীর বুকে। পুলিশের অবশ্য দাবি, গুরুত্ব দিয়ে এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীরা দ্রুত ধরা পড়বে। |