রাজসাক্ষী হতে চায় ২ অভিযুক্ত
মেয়ের নাম বলে দিলেন বাবা, দাবি ট্যাবলয়েডের
দুনিয়া তাঁর নাম দিয়েছে দামিনী। তবে এক ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডের দাবি, মেয়েটির আসল নাম প্রকাশ করেছেন তার বাবা।
রবিবার মেয়েটির বাবার একটি সাক্ষাৎকার ছেপেছে ট্যাবলয়েডটি। মেয়েটির পরিবার এখন উত্তরপ্রদেশের বালিয়ায় গ্রামের বাড়িতে রয়েছে। সেখানেই সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে ওই ট্যাবলয়েড। সেখানে মেয়েটির নাম প্রকাশ করে বাবা বলেছেন, “আমি মেয়েকে নিয়ে গর্বিত। আমরা চাই গোটা দুনিয়া আমার মেয়ের নাম জানুক। তার নাম প্রকাশ করলে এই ধরনের ঘটনায় বেঁচে যাওয়া মহিলারা সাহস পাবেন।” অভিযুক্ত ছ’জনের ফাঁসি চাইছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, “ওরা মানুষ নয়, পশুও নয়। পশুরাও এত নিকৃষ্ট ব্যবহার করে না কারও সঙ্গে।”
অভিযুক্ত ছ ’জনের ফাঁসির দাবি অবশ্য গোটা ভারত জুড়েই উঠছে। সংবাদসংস্থা জানাচ্ছে, তাদের মধ্যে দু’জন এখন শাস্তি কমাবার জন্যে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন জানিয়েছে। অথচ এই পবন গুপ্ত আর বিনয় শর্মা আগে বলেছিল, “আমাদের ফাঁসিই দিন!’’ সেটা তাদের বোধোদয় নাকি শাস্তি কমানোর কৌশল, তা নিয়ে তখনই প্রশ্ন উঠেছিল। আজ তারা রাজসাক্ষী হতে চাওয়ায় উদ্দেশ্যটা পরিষ্কার হয়ে গেল। তবে, তাদের সে আশায় জল ঢেলে দিয়েছেন আইনজীবীরা। এক আইন বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, যে সব মামলায় তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায় না, তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তদের রাজসাক্ষী হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। পরিবর্তে তাদের লঘু সাজা মেলে।
এ ক্ষেত্রে বিষয়টা একেবারেই তেমন নয়। তা ছাড়া দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের মতো বীভৎস অপরাধে রাজসাক্ষীর প্রশ্নই ওঠে না, জানিয়েছেন তিনি। ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, “অভিযুক্তদের জানানো হয়েছিল, নিজেদের কোনও কৌঁসুলি না থাকলে তারা আইনি সাহায্য চাইতে পারে। পবন ও বিনয় সে সব চায়নি। তারা রাজসাক্ষী হওয়ার আর্জি জানিয়েছে।”
রাম সিংহ এবং তার ভাই মুকেশ সিংহ অবশ্য তাদের হয়ে লড়ার জন্য আদালতের কাছে আইনি সাহায্য চেয়েছে। ইতিমধ্যে, অভিযুক্ত পাঁচ জনকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেট। এবং পূর্ব নির্ধারিত ভাবেই আগামিকাল তাদের আদালতে পেশ করা হবে। জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে ষষ্ঠ অভিযুক্তের বিচার চলছে।
ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডটিকে দামিনীর বাবা জানিয়েছেন, এই ছ’জনের মুখোমুখি গিয়ে দাঁড়ানোর কথাও এক বার ভেবেছিলেন। কিন্তু এখন আর তা করতে চান না। আদালতই যা করার করুক, বলেছেন তিনি। তাঁর মেয়ের নামটা যাতে মুছে না যায়, সেটাই এথন চাইছেন তিনি। এর আগে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী শশী তারুর প্রস্তাব করেছিলেন, ওই তরুণীর নাম প্রকাশ করা হোক এবং ভারতের ধর্ষণ-বিরোধী আইনের নামকরণ তার নামে হোক। সেই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছিলেন বাবা। বলেছিলেন, মেয়ের নামে আইনের নাম হলে সেটা হবে বিরল সম্মান।
এমনিতে ভারতীয় আইনে ধর্ষিতার নাম প্রকাশ করার নিয়ম নেই। ধর্ষিতা নিজে অথবা তাঁর অবর্তমানে তাঁর পরিবার নাম প্রকাশে অনুমতি দিতে পারে। তা বাদে প্রশাসন বা সংবাদমাধ্যম বা বিচারবিভাগ নিজে থেকে নাম প্রকাশ করতে পারে না।
বাস্তবেও ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মহিলারা নিরাপত্তার খাতিরে নিজেদের নাম প্রকাশ করতে চান না। পরিবারের লোকজনও তা চায় না। কিন্তু কিছু ব্যতিক্রমী ঘটনায় অনেক সময় মহিলারা যথেষ্ট সাহসের পরিচয় দিয়ে নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করেছেন। দামিনীর বাবার স্পষ্ট বক্তব্য, “অপরাধের শিকার যে, তার লজ্জা পাওয়ার কোনও কারণ নেই। ফলে নাম প্রকাশেও বাধা নেই। লজ্জাটা দোষীদেরই পাওয়া উচিত।” মেয়ের জন্য সরব হওয়ায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেছেন, ছেলেরা যাতে মেয়েদের সম্মান দিতে শেখে, সেটা দেখা বাবা-মায়েদের দায়িত্ব।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.