বামেরা নকল বিধানসভায়, হেলমেট মাথায় কংগ্রেস
|
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, “এত গরিবকে আমাদের ভোট দিতে কে বলেছিল? আমরা উৎসব করব! বিধানসভায় কেউ প্রতিবাদ করলে সাসপেন্ড করব!” স্পিকার মৃদু হেসে হাত নেড়ে বলছেন, “চালিয়ে যান!” বিরোধী পক্ষের বর্ষীয়ান বিধায়কের হুঁশিয়ারি পরিষদীয় মন্ত্রীকে, “সংখ্যার গরম দেখাবেন না! সংখ্যার গরম দেখিয়ে বুদ্ধদেব ভটচাজ্জি ডুবেছিল! আপনারও সেই দশা হবে!” দলের বিধায়কদের উজ্জীবিত করে তাঁর আরও ঘোষণা, “১৮ মাসে হোঁচট খাচ্ছে। আর আট মাস পরে সরকার মুখ থুবড়ে পড়বে!”
নাহ! বাস্তবে ঘটার কথা নয়। ঘটেওনি! বিধানসভা ভবনের সিঁড়িতে এবং পোর্টিকোর নীচে দাঁড়িয়ে বুধবার এই ভাবেই নকল অধিবেশন চালালেন বাম বিধায়কেরা। যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকায় কখনও সাসপেন্ড হওয়া সিপিএম বিধায়ক শেখ আমজাদ হোসেন, কখনও ফব-র বিধায়ক আলি ইমরান রাম্জ (ভিক্টর)! |
বিধানসভায় মঙ্গলবারের হাঙ্গামার বিরুদ্ধে কংগ্রেস বিধায়কদের প্রতিবাদ।—নিজস্ব চিত্র |
স্পিকারের ভূমিকায় উদয়ন গুহ। বিরোধীদের মুখ আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা। তিন শাস্তিপ্রাপ্ত বিধায়কের সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবি ও বিধানসভায় শাসক দলের হাতে বিরোধী বিধায়কদের আক্রান্ত হওয়ার প্রতিবাদে নকল বিধানসভা চালিয়েই সরকারকে পরিহাস করল ফ্রন্ট। রেজ্জাকের কথায়, “আমরা যে বেড়াল ছানা নই, বাঘের বাচ্চা, তা বোঝাতে হত!” দাবি না মিটলে আজ, বৃহস্পতিবারও প্রতিবাদ চলার কথা।
ঘটনার প্রতিবাদে বহু কংগ্রেস বিধায়ক হেলমেট মাথায় বিধানসভায় ঢোকেন। সঙ্গে পোস্টার, ‘আগে বাঁচাও মাথা, পরে অন্য কথা’! বিদ্যুতের বর্ধিত মাসুলের জন্য চাষ ও ক্ষুদ্রশিল্পে ক্ষতির প্রতিবাদে তাদের আনা মুলতবি প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ায় সারা দিনের জন্য ওয়াকআউট করেন তারা। কিছু কংগ্রেস বিধায়ক বৈঠকে দাবি তোলেন, পক্ষপাতমূলক ভূমিকার প্রতিবাদে স্পিকারেরও পদত্যাগ দাবি করা উচিত। সেই দাবিতেই বিধানসভার ফটকে যুব কংগ্রেসের বিক্ষোভ হচ্ছে দেখে দুই বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন ও মনোজ চক্রবর্তী তাতে সামিল হন।
জোড়া আক্রমণের মুখে তৃণমূলের পরিষদীয় দল বৈঠকে বসে এ দিন। অধিবেশন শেষ হওয়ার ২৪ ঘণ্টা আগে! অধিবেশনে মারামারির কথা মাথায় রেখে সেই বৈঠকে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পরামশ, বিরোধীদের পাতা ফাঁদে কেউ যেন পা না দেন। |