নিলাম করলেও কেউ এই সরকার কিনবে না: মমতা
|
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যে শিল্প পরিকাঠামোর অভাব নিয়ে শিল্পমহল মুখর তো বটেই। সেই সঙ্গে গোয়া ও ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রীরা, মায় জার্মানির রাষ্ট্রদূতও সমালোচনা করেছেন বাংলার শিল্প পরিকাঠামোর। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন তাঁর নিজের জায়গাতেই।
পরিকাঠামোর অভাব এবং জমি-সঙ্কট দূর করে কী ভাবে রাজ্যে শিল্প-পরিবেশ তৈরি হবে, তার কোনও দিশা দেখানো দূরস্থান। মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এখনও শুধুই বেহাল রাজকোষ আর পঙ্গু অর্থনীতির কথা। বুধবার রাজ্য পুলিশের এক অনুষ্ঠানে মমতা বলেন, “প্রতি মাসেই ভাবি, মাইনে হবে কি না। অন্য রাজ্য যা পায়, তার এক-চতুর্থাংশ পেলেই অনেক কাজ হত। তবু আমি বলব, আমাদের রাজ্যে আর্থিক বৃদ্ধির হার বেড়েছে।”
এখানেই শেষ নয়। বেহাল অর্থনীতির ফাঁসে যে তাঁর সরকারের জেরবার অবস্থা, তা বোঝাতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আগে জানলে (ক্ষমতায়) আসতাম না। নিলাম করলেও কেউ এই সরকার কিনবে না!”
ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ ও গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পারিক্কর গত শনিবার কলকাতায় এসে শুনিয়ে গিয়েছেন, তাঁদের রাজ্য কী ভাবে পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দিয়েছে। শিল্প আনতে রাজ্য সরকার কতটা আন্তরিক, সোমবার কলকাতায় এসে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে গিয়েছেন ভারতে জার্মানির রাষ্ট্রদূত মাইকেল স্টাইনারও। মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু দাবি করছেন, এর মধ্যেই তাঁরা ‘বুদ্ধি করে’ সরকার চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, “আমাদের হাতে ২১ হাজার কোটি টাকা। অথচ সুদ নিয়ে খরচ ২৬ হাজার কোটি। চলবে কী করে? সবই তো আগের সরকার করে গিয়েছে। আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছি।”
এই চ্যালেঞ্জ নিয়েই পুলিশে ৪০ হাজার এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ১০ হাজার কর্মী নিয়োগের কথা এ দিন ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “রাজ্যে পুলিশ কম, মানুষ বেশি। নিরাপত্তাই তো বহু জায়গায় দেওয়া যায় না। আমি তো মাঝেমধ্যে ভাবি, চলছে কী করে!” চার হাজার গ্রামীণ পুলিশ নিয়োগের কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথম পাঁচ জন গ্রামীণ পুলিশ এ দিনই মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে নিয়োগপত্র পেয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে সাহসিকতার জন্য পদক, সম্মান এবং ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার পেয়েছেন চার পুলিশকর্মী। সেরা থানা হয়েছে নিউ টাউন এবং সেরা ‘পুলিশ জেলা’ হয়েছে পুরুলিয়া।
তেহট্ট বা দুবরাজপুরের লোবা গ্রামের ঘটনার কথা এ দিন অবশ্য সরাসরি উল্লেখ করেননি মুখ্যমন্ত্রী। তবে পরোক্ষে ওই প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “ভাল কাজের প্রশংসা করতে হবে। পুলিশ মানেই খারাপ, মানতে রাজি নই। দু’টো কাজে সমস্যা হয়েছে। তাতেই কত সমালোচনা!” |