বেহাল টাকি রোড সারাইয়ের দাবিতে বসিরহাটের খোলাপোতায় ঘণ্টা তিনেক রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন যুব কংগ্রেস কর্মীরা। বুধবার সকালে এই ঘটনার জেরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দ্রুত রাস্তা মেরামতির প্রতিশ্রুতি দেন পূর্ত দফতর (সড়ক) বিভাগের কর্তা। এরপরেই অবরোধ ওঠে।
এ দিন বেলা ১০টা নাগাদ যুব কংগ্রেস নেতা দিলীপ ঘোষ, আবদুল হান্নানের নেতৃত্বে শুরু হয় অবরোধ। যুব কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে মেরামতির অভাবে টাকি রোডের হাল খুবই খারাপ। যেখানে সেখানে পিচ উঠে ইট-পাথর বেরিয়ে গিয়েছে। বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। মাঝে মধ্যে তালি-তাপ্পি দিয়ে রাস্তা সারানো হলেও তাতে সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধান মেলে না। রাস্তার উপরে যত্রতত্র দোকান, গ্যারাজ, গাড়ির স্ট্যান্ড গজিয়ে ওঠার ফলেও যানজট দেখা দিচ্ছে। সব মিলিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই করে গাড়ি চলাচলের ফলেও রাস্তার হাল খারাপ হচ্ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনা।
|
প্রশাসন সূত্রের খবর, গত কয়েক মাসে টাকি রোডে দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন অন্তত ২০ জন। এ সব নিয়ে প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। টাকি রাস্তা চওড়া করার কথা বলে একাধিক বার মাপজোক হওয়া সত্ত্বেও সেই কাজ কিছুই এগোয়নি।
এ দিনের বিক্ষোভ সভায় টাকি রাস্তা সংস্কারের দাবিকে কেন্দ্র করে বর্তমান সরকারের সমালোচনায় সরব হয় কংগ্রেস। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, “বামেদের হঠাতে জোট বাঁধার সময়ে ভেবেছিলাম, হয়তো পরিবর্তনের সরকার মানুষের কথা ভাববে। এখন দেখছি, এই সরকার সব কিছুতেই ব্যর্থ। মানুষ এই পরিবর্তন চায়নি। এই পরিবর্তনের পরিবর্তন হওয়া দরকার।” অবিলম্বে টাকি রাস্তা সারানো না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে কংগ্রেস।
অন্য দিকে, কংগ্রেসের কর্মসূচিকে নেহাতই ‘লোক দেখানো’ বলে কটাক্ষ করেছেন বসিরহাট (উত্তর) কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক এটিএম আবদুল্লা রনি। তিনি বলেন, “বাম জমানা থেকে দেখে আসছি টাকি রাস্তার এই হাল। তা হলে এত দিন কেন বিক্ষোভ দেখানো হল না? বর্তমান সরকার যখন অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও রাস্তা সারানোর টাকা অনুমোদন করেছে, সে সময়ে সস্তা প্রচার পাওয়ার জন্য রাজনীতি করা হচ্ছে। ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে কংগ্রেস আসলে সিপিএমেরই হাত শক্তিশালী করছে।” |
এ দিন দীর্ঘ সময় অবরোধ চলায় দুর্ভোগ পোয়াতে হয়েছে অসংখ্য সাধারণ মানুষকে। তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন বসিরহাটের এসডিপিও আনন্দ সরকার। বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ আসেন পূর্ত দফতরের বসিরহাট ডিভিশনের সহকারী বাস্তুকার তপন নস্কর। তিনি বলেন, “কাউকেপাড়া থেকে কুলিনগ্রাম পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি টাকা এবং দন্ডিরহাট আমতলা থেকে থুবা ও সেখান থেকে হাসনাবাদ পর্যন্ত আরও ১ কোটি টাকার কাজ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই শুরু হবে। শিকড়া থেকে খোলাপোতা হয়ে পালপাড়া পর্যন্ত টাকি রোড সংস্কারের কাজের টেন্ডার আগামী ১৯ ডিসেম্বর খোলা হবে। তারপরে কাজ শুরু হতে আরও কয়েকটা দিন লাগবে।” প্রতিশ্রুতি তো মিলল, সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, সত্যি কাজের কাজ হবে তো? |
বুধবার ছবি দু’টি তুলেছেন নির্মল বসু। |