ধুবুলিয়ার কাছে জাতীয় সড়ক ঠিক কতটা নিরাপদ সোমবারের ঘাটেশ্বরের দুর্ঘটনা তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিল। ওই দিন কাকভোরে একটি বরযাত্রীর গাড়ির সঙ্গে পাথর বোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৮ জন নিহত হন। জখম হন জনা চারেক। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক বছরে ধুবুলিয়া থানা এলাকায় ছোট বড় ১৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাতে প্রাণ গেছে ২৪ জনের। কিন্তু প্রশ্ন হল ওই নির্দিষ্ট এলাকায় কেন ঘনঘন দুর্ঘটনা ঘটছে? এর উত্তর হাতড়াচ্ছেন জেলা পুলিশের কর্তা থেকে শুরু করে সকলেই। জেলা পুলিশ প্রশাসন ধুবুলিয়ার টিবি হাসপাতাল থেকে নাকাশিপাড়ার যুগপুর পর্যন্ত এলাকাকে দুর্ঘটনাপ্রবণ বলে ঘোষণা করেছে। ওই এলাকায় জাতীয় সড়ক সম্পসারণের কাজ যাতে দ্রুত শেষ হয় সে ব্যাপারে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। তবে ওই এলাকায় রাস্তার বেহাল দশাই যে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী তা কিন্তু নয়। দীর্ঘ দিন ধরে হাইওয়েতে ছোট গাড়ি চালাচ্ছেন কাজল প্রামাণিক। অভিজ্ঞ এই চালকের কথায়, “ওই এলাকায় রাস্তা কিন্তু ভাল। তবে অপেক্ষাকৃত সংকীর্ণ। তা ছাড়া কম জনবসতিপূর্ণ ওই এলাকায় চালকেরা বেশ জোরেই গাড়ি চালান। একে অপরকে ওভারটেক করার চেষ্টা করেন। |
তখনই সংকীর্ণ রাস্তায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গাড়ি। প্রাণহানি হয়।” একই সুর জেলার পুলিশ কর্তাদের গলাতেও। তাঁদের দাবি, দীর্ঘ রাস্তার দু’ধারে তেমন কোনও জনবসতি না থাকায় চালকেরা বেশ গতিতেই গাড়ি চালান। আর এতেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গাড়ি। প্রাণহানি ঘটে। জেলা পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমণ মিশ্র বলেন, “গতিতে গাড়ি চালানোর জন্যই ওই এলাকায় এত ঘনঘন দুর্ঘটনা ঘটছে। এলাকাটিকে আমরা দুর্ঘটনাপ্রবণ বলে ঘোষণা করেছি। অনেক সময় সারা রাত গাড়ি চালিয়ে ভোরের দিকে চালকের চোখে ঘুম আসে। তখন আচমকা সামনে কোনও গাড়ি এলে নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে ধাক্কা মারে।” পুলিশ সুপারের বক্তব্য, “তবে রাস্তা অনেকটাই সংকীণর্। ওই এলাকায় জাতীয় সড়ক সম্পসারণের কাজ শেষ হলে দুর্ঘটনা কমবে। এ ব্যাপারে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে চিঠি দেওয়া হবে।” ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার নদিয়া-মুর্শিদাবাদ ডিভিশনের প্রজেক্ট ডিরেক্টর জগন্নাথ সামন্ত বলেন, “জমি পেলেই আমরা তৎপরতার সঙ্গে ফোর লেন রাস্তা তৈরির কাজ শেষ করছি। ওই এলাকাতেও কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি খুব শীঘ্রই কাজ শেষ হবে।” রাস্তা সম্পসারণ শেষ হলেই সড়ক দুর্ঘটনা অনেকটাই কমবে বলে আশা জেলা প্রশাসনের কর্তাদের। |