শনিবারের ম্যাচ স্থগিত, আদালতে মোহনবাগান |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ক্লাবের ইতিহাসে ভয়ঙ্করতম শাস্তি থেকে বাঁচতে শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হল মোহনবাগান।
বুধবার নগর দেওয়ানি আদালতে শতবর্ষপ্রাচীন ক্লাবের আইনজীবীদের আবেদন শোনার পর বিচারক সন্দীপকুমার রায়চৌধুরী তাঁর রায়ে বলেন
এক) ভেস্তে যাওয়া রবিবারের ডার্বি ম্যাচ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ফেডারেশনকে মোহনবাগানের বক্তব্য শুনতে হবে।
দুই) যত দিন না ডার্বি ম্যাচ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হচ্ছে, তত দিন আই লিগে মোহনবাগানের যোগদানের অধিকার বজায় থাকবে।
আদালত রায় দেওয়ার আগেই অবশ্য ১৫ ডিসেম্বরের মোহনবাগান-পৈলান অ্যারোজ ম্যাচ স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন ফেডারেশন কর্তারা। জানিয়ে দেওয়া হয়, ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ম্যাচ স্থগিত রাখা হয়েছে। তাতে অবশ্য বাগান কর্তাদের কোনও হেলদোল নেই। তাঁরা বরং খুশি টিমের চোট-আঘাত সারিয়ে ফুটবলাররা ফিরে আসতে পারবেন এই আশায়। আই লিগে করিম বেঞ্চারিফার দলের পরের ম্যাচ ২৩ ডিসেম্বর ভাইচুং ভুটিয়ার দল সিকিম ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচের আগেই নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিতে পারে ফেডারেশন।
বিশ্ব ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা ফিফা কখনও চায় না দেশ বা রাজ্য সংস্থার বিরুদ্ধে কোনও ক্লাব আদালতে যাক। এটা জানা সত্ত্বেও কেন আদালতে গেলেন বাগান কর্তারা তা নিয়ে তুমুল জল্পনা শুরু হয়েছে ময়দানে। বিশেষ করে ফেডারেশন যখন এখনও তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি। দু’রকম ব্যাখ্যা শোনা যাচ্ছে।
এক) মোহনবাগান কর্তারা ধরেই নিয়েছেন টিম তুলে নেওয়ার জন্য শাস্তি পেতেই হবে। সেটা যাতে একতরফা না হয় সে জন্য রক্ষাকবচ হিসাবে আদালতে যাওয়া।
দুই) গণ্ডগোলের জন্য ম্যাচ ভেস্তে গিয়েছে এটা প্রমাণ করার জন্য ফেডারেশন যাতে তাদের ডাকে তা সুনিশ্চিত করা। ফেডারেশনকে আইনি সাহায্য দেওয়া ময়দানের এক নামী আইনজীবী অবশ্য বললেন, “ফেডারেশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মোহনবাগান আদালতে গিয়ে ভুল করেছে। ঠিক যে ভাবে ডার্বি ম্যাচে টিম তুলে নিয়ে ভুল করেছিল।”
মোহনবাগান কর্তারা অবশ্য দাবি করছেন, তাঁরা ফেডারেশনের বিরুদ্ধে আদালতে যাননি। অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, “ফেডারেশনের উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। কিন্তু আই লিগের সি ই ও সুনন্দ ধর যে ভাবে ম্যাচের পরই মোহনবাগানের শাস্তি নিয়ে মত দিয়েছেন সেটা আমাদের আশঙ্কিত করেছে। একতরফা সিদ্ধান্ত যাতে না হয় সে জন্যই আদালতে যেতে বাধ্য হয়েছি।” মোহনবাগানে মামলা নতুন কিছু নয়। নির্বাচন থেকে আর্থিক হিসাব অসংখ্য মামলায় কয়েক বছর আগেও জর্জরিত ছিল ক্লাব। মাঝে কয়েক বছর তা থেকে মুক্তি পেয়েছিল গঙ্গাপারের তাঁবু। আবার আদালত! আবার মামলা!
কিন্তু কবে হবে ডার্বি ম্যাচ নিয়ে সিদ্ধান্ত? এ দিন ইস্টবেঙ্গলের পক্ষ থেকে ওই ম্যাচ নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানানোর দাবি জানানো হয়েছে। ক্লাবের অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, “ওই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট পেয়ে গেলে প্রয়াগ ম্যাচের আগে ফুটবলাররা উদ্দীপ্ত থাকবে।” দিল্লিতে যোগাযোগ করে জানা গিয়েছে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আইনজীবীদের পরামর্শ নিচ্ছে ফেডারেশন। সেটা হাতে পেলেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে ১৮ বা ১৯ ডিসেম্বর। ডার্বি ম্যাচে দল তুলে নেওয়ায় মোহনবাগানের শাস্তি হচ্ছেই। কিন্তু সেটা কতটা কঠোর হবে তা নিয়েই সবার সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফু্ল্ল পটেল। |