বন্দিদের জন্য জেলে জিম, পাঠাগার তৈরির সিদ্ধান্ত
ন্দিরা প্রাতভ্রর্মণের অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু জেলের মধ্যে পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে বন্দিদের সেই দাবি পূরণ করা যায়নি। পরিবর্ত হিসেবে জেলের মধ্যে স্বাস্থ্যচর্চার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর গড়ার ব্যবস্থা করছে বিহার কারা দফতর। ইতিমধ্যেই দু’টি জেল বা সংশোধনাগারে তৈরি করা হয়েছে জিম।
রাজ্যের আর আটটি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ও ৩১টি জেলা সংশোধনাগারে তৈরি হচ্ছে স্বাস্থ্যচর্চার কেন্দ্র। জিমের প্রশিক্ষক হিসেবে স্থানীয় স্তরেই কাউকে নিয়োগ করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, বিহার কারা দফতর সংশোধনাগারগুলিতে একটি করে পাঠাগার তৈরি করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে। আইজি (কারা) আনন্দ কিশোরের ব্যাখ্যা, “বন্দিদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার এটা একটা প্রয়াস মাত্র। স্বাস্থ্যচর্চা এবং পঠন-পাঠনের মধ্যে থাকলে তারা অপরাধমূলক চিন্তা-ভাবনা থেকে দূরে থাকবে। এটাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।” তিনি জানান, ইতিমধ্যেই বেউর ও বক্সারের উন্মুক্ত সংশোধনাগারে জিম চালু হয়েছে। উল্লেখ্য, দিল্লির তিহার জেলের দায়িত্বে থাকার সময় কিরণ বেদী সেখানে বন্দিদের জন্য নানা ধরণের প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন। বন্দিদের মানসিক ও শারীরিক উৎকর্ষতা বাড়াতে হাতে নেওয়া হয়েছিল নানা পরিকল্পনা। কার্যত তিহারের অনুসরণেই এই প্রকল্প।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলে এখন বন্দির সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। বিভিন্ন সংশোধনাগার থেকে কারা প্রশাসনকে জানানো হয়, বন্দিরা প্রাতর্ভ্রমণে যেতে চাইছে। কিন্তু এমনিতেই জেলের মধ্যে জায়গা অকুলান। বহু জেলেই নির্দিষ্ট সংখ্যার থেকে বন্দির সংখ্যা বেশি। সেই কারণেই অল্প জায়গার মধ্যে স্বাস্থ্যচর্চার ব্যবস্থা করতে জিম তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
কারা দফতরের কর্তাদের দাবি, বিহারের জেলগুলিতে গত তিন বছরে তুলনামূলক ভাবে পরিকাঠামোর অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে কৈমুরের ভাগুয়া জেলে ক্ষমতার তুলনায় অতিরিক্ত বন্দি আছে। সেখানে থাকতে পারে ৮২ পুরুষ ও ৩ মহিলা বন্দি। রয়েছে ২৫০ পুরুষ এবং ৬ মহিলা। জহানাবাদ জেলে ১২৫ পুরুষ ও ৬ মহিলা বন্দি রাখার জায়গা রয়েছে। অথচ রয়েছে ২৫৭ পুরুষ ও ১৫ মহিলা বন্দি। এ ছাড়াও বেশি সংখ্যায় বন্দি আছে জামুই, ঔরঙ্গাবাদ, আরারিয়া, সীতামঢ়ী প্রভৃতি জেলে। এই সব জায়গায় আরও বেশি জায়গা নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে নতুন জেল। আইজি-র কথায়, “তিন বছর ধরে জেলের পরিকাঠামো তৈরির জন্য টাকা খরচ করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যায় ঘর, পানীয় জল এবং শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ২০টি সংশোধনাগারে এই কাজ শেষ হয়েছে।” জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, গত দু’বছরে প্রতিটি জেলে পানীয় জলের জন্য অতিরিক্ত গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। শৌচাগারের সংখ্যা পর্যাপ্ত বলেই তাঁদের দাবি। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি ২০ জনে একটি করে শৌচাগার প্রতিটি জেলেই রয়েছে। রাতের শৌচাগারও সঠিক সংখ্যায় রয়েছে। তবে নিকাশী সমস্যার কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন জেল কর্তারা। তবে এই সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় প্রকল্প খুব শীঘ্রই হাতে নেওয়া হচ্ছে। এক জেল কর্তার কথায়, অধিকাংশ জেলই বহু দিন আগে তৈরি। বেশ কিছু জেল তৈরি ব্রিটিশ আমলে। তখন যে ভাবে ভাবা হত, সেই ভাবনাতেই আজ বিরাট পরিবর্তন এসেছে। মানবাধিকারের বিষয়টি এখন অনেক বড় করে দেখা হয়। সেই কারণে ইদানীং কালে জেলকে আর জেলই বলা হয় না, বলা হয় সংশোধনাগার। অনেক বেশি জায়গা নিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে এই সব সংশোধনাগার তৈরি করার কথা। জেলের ‘অন্ধকুঠুরি’ আগামী দিনে গল্প কথায় ঠাঁই পাবে বলে এই জেলকর্তা মনে করেন। কিন্তু পুরনো জেলে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার মূল বাধা অপর্যাপ্ত জায়গা। প্রতিটি জেলেই জায়গার সমস্যা রয়েছে। এবং এই জায়গা-সমস্যার সমাধান কী ভাবে করা যায়, তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা চলছে। কম জায়গায় শরীর ও মনের বিকাশের ব্যবস্থায় জিম বা পাঠাগার তৈরির সিদ্ধান্ত, কার্যত সেই চিন্তারই ফল।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.