পঞ্চায়েত ভোটকে পাখির চোখ করে জেলায় ঘর গোছানোর কাজ শুরু করেছে সিপিএম। দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে বড় সমাবেশের আয়োজনের পাশাপাশি, শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে একের পর এক সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলছেন সিপিএম নেতারা। আগেও জেলার নানা এলাকায় তাদের কর্মীরা মার খাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে সিপিএম। এ বার তা থেকে এক কদম এগিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের সভাতেও গোলমালের ‘আশঙ্কা’র কথা জানালেন দলের জেলা সম্পাদক অমল হালদার।
আগামী ২১ ডিসেম্বর সগড়াই ফুটবল মাঠে সূর্যকান্তের সভা। বুধবার দলের জেলা কার্যালয়ে বসে অমলবাবুর দাবি, “ওই সভার কয়েক দিন আগেই তৃণমূল সন্ত্রাস চালাবে বলে খবর পেয়েছি আমরা। এর অঙ্গ হিসেবে চলবে প্রচণ্ড বোমাবাজি। উদ্দেশ্য, ওই এলাকায় আমাদের সভার আগে প্রশাসনকে ১৪৪ ধারা জারি করতে বাধ্য করা। যাতে আমাদের সভা ভন্ডুল করা যায়।” তিনি জানান, রাজ্যে পরিবর্তনের পরে এই প্রথম কোনও সভা করার জন্য প্রশাসনের অনুমতি মিলেছে দক্ষিণ দামোদরে। আগে দলের সভা করা দূর, নিহত কর্মীদের জন্য শোকসভার অনুমতিও মেলেনি বলে তাঁর দাবি। এই সভা যাতে ভেস্তে না যায়, সে জন্য প্রশাসনের কাছে হামলার আশঙ্কার কথা জানানো হবে জানিয়ে অমলবাবু বলেছেন, “২১ ডিসেম্বরের সভায় প্রায় ২৫-৩০ হাজার মানুষের সমাবেশ হবে। কৃষির সমস্যা ও সরকারের ভ্রান্ত কৃষিনীতি সম্পর্কে আলোচনা করা হবে এই সভায়।”
রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সভার আগে সন্ত্রাসের আশঙ্কার অভিযোগ তুলতেন তৃণমূলের নেতারা। ক্ষমতার হাতবদলের পরে এখন সেই অভিযোগ তুলছে সিপিএম। অমলবাবুর অবশ্য দাবি, “আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে বাজার গরম করার চেষ্টা করত তৃণমূল। কিন্তু এই দেড় বছর ধরে আমরা সন্ত্রাসের শিকার। সামান্য সভা-সমিতিও করতে পারছি না। তাই প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছি।”
অমলবাবুর এমন সব অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলার তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটকের পাল্টা বক্তব্য, “সিপিএমকে মানুষ পরিত্যাগ করেছেন। তাই সভায় লোক টানতে ওঁদের নানা রকম নাটক করতে হচ্ছে।” তাঁর দাবি, “বামেদের আমলেই চাষিদের সমস্যা বেড়েছিল। আমরা তা সমাধানের চেষ্টা করছি।”
জেলা কৃষকসভার সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল জানান, আগামী ২৮-৩০ ডিসেম্বর পানাগড়ে সংগঠনের ৩৮তম জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। পূর্বস্থলীতে আগের সম্মেলনে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। এ বার সমাবেশে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ যোগ দেবেন বলে আশা করছেন তাঁরা। আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল বলেন, “সারের দাম কমানো, আলু চাষিদের ন্যায্য দাম দেওয়া, গ্রামে বিপিএল তালিকার গরমিল দূর ইত্যাদির দাবি তোলা হবে এই সন্মেলনে। গরিব মানুষকে রেশনের মাধ্যমে ২ টাকা কেজি দরে মাসে ৩৪ কিলোগ্রাম চাল দেওয়ার দাবিও জানানো হবে।” তিনি জানান, ২৮ ডিসেম্বর এই সভার প্রকাশ্য সমাবেশেও মুখ্য বক্তা সূর্যকান্ত মিশ্র। |