ক্রেডিট কার্ডের তথ্য জেনে প্রতারণা, দুর্গাপুরে ধৃত পাঁচ
ক্রেডিট কার্ডের তথ্য জেনে নিয়ে তার মাধ্যমে অনলাইনে লক্ষাধিক টাকার সামগ্রী কেনার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে দুর্গাপুর থানার পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে দুর্গাপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে তাদের ধরা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম শ্যাম দাস, অভিজিৎ দত্ত, সনাতন পাল, মহেশ চৌধুরী ও মহম্মদ কাদির আনসারি।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (পূর্ব) এস সিলভান মুরুগান জানান, সিটি সেন্টারের বাঘাযতীন পথের একটি সফটঅয়্যার বিক্রয় সংস্থার কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে সাদা পোশাকের পুলিশ স্টেশনের কাছে হাতেনাতে ধরে শ্যাম ও অভিজিৎকে। তাদের জেরা করে বাকি তিন জনের খোঁজ মেলে। ওই সংস্থার আধিকারিক কৃষ্ণ কুমার দাবি করেন, দেশি-বিদেশি ক্রেতাদের নাম, ফোন নম্বর, ঠিকানা, ই-মেল আইডি নথিবদ্ধ করা আছে সংস্থার ডিরেক্টরিতে। আগে ওই সংস্থায় কাজ করার সুবাদে সেই সমস্ত তথ্য তারা জোগাড় করেছিল। পরে তা ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে ঠকাতে শুরু করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস ছয়েক আগে ওই সফটঅয়্যার বিক্রয় সংস্থায় কাজ করত শ্যাম ও অভিজিৎ। পরে তারা কাজ ছেড়ে দেয়। ইদানীং ওই সংস্থার বহু ক্রেতা অভিযোগ করছিলেন, সংস্থার নাম করে তাঁদের ফোন করে বলা হচ্ছে, সংস্থাটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই বার্ষিক মেনটেন্যান্স বাবদ দেয় অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। তাঁরা যেন তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে দেন। কথোপকথন চলাকালীন কথার ছলে তাঁদের অনেকের কাছ থেকে ক্রেডিট কার্ডের নম্বর নিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং তা ব্যবহার করে বিভিন্ন সামগ্রী কেনা হচ্ছে। এই খবর জানার পরে সংস্থাটি নড়েচড়ে বসে। সংস্থার আধিকারিক কৃষ্ণ কুমার দাবি করেন, দিন কয়েক আগে নেলি রূপা নামে এক ব্রিটিশ মহিলা তাঁদের জানান, তাঁর ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে তাঁর দেশের এক সংস্থার কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ কেনার বরাত দেওয়া হয়েছে। তাঁর কাছে তেমনই একটি ই-মেল এসেছে। তিনি ই-মেলটি পাঠিয়ে দেন কৃষ্ণ কুমারের কাছে। কৃষ্ণ কুমারের কথায়, “আমাদের সংস্থারই কোনও কর্মী বা প্রাক্তন কর্মী ঘটনায় জড়িত বলে সন্দেহ হয়েছিল।”
ওই ব্রিটিশ মহিলা যে ই-মেলটি পাঠিয়েছিলেন সেখানে কোন ক্যুরিয়র মারফত ল্যাপটপটি পাঠানো হচ্ছে এবং ল্যাপটপ পাঠানোর ঠিকানায় একটি মোবাইল নম্বর দেওয়া ছিল। কৃষ্ণ কুমার খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, সোমবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ল্যাপটপটি দুর্গাপুর স্টেশন বাজারে ক্যুরিয়র সংস্থার অফিসে এসে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার কৃষ্ণ কুমার পুরো বিষয়টি লিখিত ভাবে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসককে জানান। মহকুমাশাসক আয়েষা রানি এ বিষয়টি পুলিশকে জানান। এর পর ক্যুরিয়র কর্মীর হয়ে ল্যাপটপ পাঠানো ঠিকানায় থাকা নম্বরটিতে ফোন করেন কৃষ্ণ কুমার। বলা হয়, সন্ধ্যায় এসে ল্যাপটপটি নিয়ে যেতে। সাদা পোশাকের পুলিশ সন্ধ্যায় গিয়ে হাজির হয় ওই ক্যুরিয়র সংস্থার অফিসে। ল্যাপটপটি নিতে যায় শ্যাম ও অভিজিৎ। তাদের দেখেই চিনে ফেলেন কৃষ্ণ কুমার। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। তাদের জেরা করে মেলে আর তিন জনের খোঁজ। রাতেই তাদেরও গ্রেফতার করা হয়।
এসিপি (পূর্ব) এস সিলভান মুরুগান জানান, প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃতেরা বিভিন্ন অনলাইন আর্থিক প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। প্রতারণার পরিমাণ বেশ কয়েক লক্ষ টাকা। বেনাচিতিতে একটি ভুয়ো সংস্থা খুলে অনলাইন প্রতারণার কাজকর্ম চালাচ্ছিল তারা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.