কেউ হাঁটতে পারে না, কারও বয়স অনুপাতে শারীরিক বিকাশ ঘটেনি। এমন সমস্যায় বহু ক্ষেত্রেই অন্যতম চিকিৎসা ফিজিওথেরাপি। কম খরচে নিয়মিত সেই ফিজিওথেরাপি করা যাবে পাশাপাশি নজরে রাখা যাবে সন্তানকে--সেই আশায় ২০০১ সালে অভিভাবকরাই তৈরি করেন মেদিনীপুর টাউন হ্যান্ডিক্যাপড ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। বর্তমানে সোসাইটিতে ১০ জনের নিয়মিত ফিজিওথেরাপি চলছে।
শহরে ভবঘুরে আবাসের পাশে কলেজ মাঠ লাগোয়া এলাকায় চলছে সোসাইটি। সংস্থার অন্যতম উদ্যোক্তা অলোককুমার ঘোষ জানান, “সন্তানকে নিয়ে ফিজিওথেরাপি করাতে গিয়ে অন্য প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের অভিভাবকদের সঙ্গে আলাপ হত। নিয়মিত থেরাপির স্বার্থে একজোট হয়ে প্রথমে নিজের দোকানে, তারপর একটা ভাঙা ঘরে শুরু হয় কাজ। ২০০৩ সালে প্রশাসন কিছুটা জমি ও তারও কয়েক বছর পরে বিধায়ক ও সাংসদ মিলিয়ে ৩ লক্ষ টাকা দিলে তৈরি হয় ভবন। পুরসভা জলের পাইপ লাইন করে দেয়। স্থানীয় কিছু উৎসাহীও সহযোগিতা করেন। তা দিয়েই নিয়োগ করা হয় ৪ জন কর্মী ও এক জন ফিজিওথেরাপিস্ট।” |
সকাল থেকেই চলে থেরাপি। অভিভাবকদের কথায়, “অনেক জায়গায় গিয়েছি। চিকিৎসকেরা বলেছেন নিয়মিত থেরাপি ছাড়া উন্নতি হবে না।” নিয়তি-র মা শর্মিষ্ঠা বসু বলেন, “মেদিনীপুরের বাসিন্দা হয়েও সব ছেড়ে এই সংস্থার দেওয়া বাড়িতে থাকি। বয়স বাড়ছে, মেয়ে প্রতিবন্ধী। মেয়ের অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য না করতে পেরে সব ছেড়ে মেয়েকে নিয়ে চলে এসেছি।” পেশায় জলকলের মিস্ত্রি হিমাংশু সেনাপতি বলেন, “একদিন এদিকে যেতে যেতে বোর্ডের লেখাটা দেখি। তারপর যোগাযোগ করে মেয়েকে এই কেন্দ্রে নিয়ে আসি।”
অলোকবাবু বলেন, “এখন পর্যন্ত ১০ জন ছেলেমেয়ের পরিবার আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। জেলার অনেকেই জানেন না বলেই আসতে পারেননি। আবার অনেকে জানলেও দূর থেকে আসতে পারেন না। তাছাড়াও ছেলেমেয়েগুলির ভবিষ্যৎ সুরক্ষার কথা ভেবে সোসাইটিকে আবাসিক করতে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছি।” |