আজ বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস
ভাতা চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ পূর্বের প্রতিবন্ধীরা
বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসের আগে নিজেদের সমস্যাগুলো আরও একবার প্রশাসনের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন কয়েক’শ প্রতিবন্ধী। গত বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক’শ প্রতিবন্ধী নানা দাবি নিয়ে জড়ো হলেন তমলুক শহরের হাসপাতাল মোড়ে। সেখান থেকে মিছিল করে জেলা প্রশাসনিক দফতরের সামনে আসেন তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির তরফে বিভিন্ন দাবি নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে একটি স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়।
প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর জেলা যুগ্ম সম্পাদক যোগেশ সামন্তর অভিযোগ, “জেলায় প্রায় ১ লক্ষের বেশী মানুষ প্রতিবন্ধী। কিন্তু এঁদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৬০ শতাংশ প্রতিবন্ধী সরকারি শংসাপত্র পেয়েছেন। আবার অনেকের শংসাপত্র থাকলেও কোনও সরকারি ভাতা পাননি।” সম্মিলনীর তরফে দাবি করা হয়, জেলার সমস্ত প্রতিবন্ধীদের অবিলম্বে সরকারি শংসাপত্র ও পরিচয় পত্র দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। শতাংশের বিচার নয়, প্রতিবন্ধী পরিচয় পত্রের ভিত্তিতে প্রতিমাসে ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে বরাদ্দ অর্থ যথা সময়ে প্রদান করতে হবে। সমস্ত প্রতিবন্ধীকে বিপিএল তালিকাভুক্ত করার ও বিপিএলের সুযোগ সুবিধারও দাবি জানান তাঁরা। জেলা প্রশাসনের দফতরের সামনে জড়ো হওয়া প্রতিবন্ধীদের অনেকেরই অভিযোগ, প্রতিবন্ধী শংসাপত্র থাকলেও ভাতা পাননি তাঁরা। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের খারু ২ পঞ্চায়েতের উত্তর মির্জাপুর গ্রামের ৬৪ বছরের ভৃগুরাম সামন্ত দু’পায়ের পাতা না থাকায় দাঁড়াতে পারেন না। ভরসা হুইল চেয়ার। তাঁর অভিযোগ, “১৯৯৫ সালে প্রতিবন্ধী সরকারি শংসাপত্র (৮০ শতাংশ) পাই। কিছু কাজ করতে পারিনা। কিন্তু এখনও প্রতিবন্ধী ভাতা জুটল না।” বল্লুক ১ পঞ্চায়েতের নোনাকুড়ি গ্রামের ৫৭ বছরের কানাই পালই-এর শিরদাঁড়া বাঁকা। সরকারি শংসাপত্রে ৫০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তাঁর। কানাইবাবুর অভিযোগ, “২০০৫ সালে শংসাপত্র পেয়েছি। কোনও ভারি কাজ করতে পারিনা। আয়েরও সুযোগ নেই। কিন্তু এখনও কোনও সরকারি সুবিধা পেলাম না।” ময়না থানার দেউলি গ্রামের ২৬ বছরের বানেশ্বর করের পা অকেজো। ৪০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তাঁর। চণ্ডীপুরের সরিপুর গ্রামের ৩৫ বছরের শঙ্কর গিরির ডান পা অচল (৪৬ শতাংশ)। তাঁদের অভিযোগ, “সরকারি হিসেবের ৮০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা আমাদের নেই। কিন্তু সাধারণ কাজ করতে পারি না। রোজগারও নেই। তা সত্বেও সরকারি ভাতা পাচ্ছিনা।” প্রতিবন্ধীদের সাহায্যে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা যোগেশবাবু বলেন, “প্রতিবন্ধীদের সরকারি শংসাপত্র দেওয়ার জন্য জেলা ও মহকুমা হাসপাতালে প্রতিবন্ধকতা পরীক্ষার পরিকাঠামো আরও উন্নত করতে হবে। প্রতিবন্ধকতা পরীক্ষার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হয় প্রতিবন্ধীদের। এছাড়া ৮০ শতাংশের পরিবর্তে অন্তত ৪০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা থাকলেই সরকারি ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ ৮০ শতাংশের কম প্রতিবন্ধকতাযুক্ত অনেক মানুষ আছেন যারা কাজ করতে পারেন না। তাঁদের বেঁচে থাকতে সরকারি সাহায্য প্রয়োজন।”
এখন কবে সরকারি ‘আনুকূল্য’ জোটে সেটাই দেখার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.