আজ বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস
রয়েছে সরকারি নির্দেশ, তবুও ‘বেকার’ প্রতিবন্ধীরা
রকারি নির্দেশ থাকলেও একশো দিনের প্রকল্পে কাজ পাচ্ছেন না জেলার প্রতিবন্ধীরা। এমনকী কাজ চাইতে গেলেও নানা জায়গা থেকেই তাঁদের খেদিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অথচ সরকারি নিয়মে বছরে যতগুলি শ্রমদিবস তৈরি হবে তার অন্তত ৩ শতাংশ প্রতিবন্ধীদের পাওয়ার কথা। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই সামাজিক তাচ্ছিল্যর পাশাপাশি সরকারি বঞ্চনারও শিকার হতে হয় তাঁদের। বঞ্চনার পরিমাণ এতটাই যে, নজর এড়ানোর উপায় নেই। পশ্চিম মেদিনীপুরে চলতি আর্থিক বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ৮৫ লক্ষ ৬২ হাজার শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে। জব কার্ড থাকা ৮ লক্ষ ৯৩ হাজার পরিবারের মধ্যে কাজে যোগ দিয়েছেন ৩ লক্ষ ৩২ হাজার পরিবার। অর্থাৎ ৩৮ শতাংশ। অথচ সেখানে প্রতিবন্ধীদের যোগদান মাত্র ১৩৯৮ জন বা ০.০১৬৩ শতাংশ।
জেলা প্রশাসনের পরিসংখ্যান বলছে, ২০০১ সালের জনগণনা অনুযায়ী জেলায় প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ১ লক্ষ ২০ হাজার ১৫৭। তার মধ্যে প্রতিবন্ধী শংসাপত্র পেয়েছেন ৫৯ হাজার ৬৩০ জন। অথচ একশো দিনের প্রকল্পে কাজ জুটেছে মাত্র ১৩৯৮ জনের কপালে। মেদিনীপুর সদর ব্লকের রসুল্লা গ্রামের বদ্যিনাথ হাঁসদা বছর তিনকে আগে একবার গ্রামে পুকুর খননের সময় কাজ পেয়েছিলেন। অন্য শ্রমিকদের জল দেওয়ার কাজ। কিন্তু সেই শেষ। তারপর থেকে কাজ চাইলেই শুনতে হয়, “তুই তো অন্ধ। কী কাজ করতে পারবি।” এমনকী পুরনো কাজের উদাহরণ দিলেও সুফল মেলে না বলে অভিযোগ তাঁর।
এমন অভিযোগ অবশ্য প্রশাসনিক কর্তাদের কানে পৌঁছয়না। সচেতনতার অভাবে প্রতিবন্ধীরা অভিযোগ বা আবেদন কোনওটাই জানান না অনেকক্ষেত্রে। কিন্তু নিয়ম বলে তাঁরা কাজের আবেদন জানালে এবং তারপরেও কাজ না পেলে তাঁদের ভাতা দিতে বাধ্য থাকত সরকার। প্রতিবন্ধীদের জন্য কাজ নির্দিষ্ট। যেমন, জল দেওয়া, মহিলারা কাজ করার সময় তাঁদের বাচ্চা সামলানো প্রভৃতি।
তবে পরিসংখ্যান দেখার পর টনক নড়েছে প্রশাসনের। সম্প্রতি একশো দিনের কাজ নিয়ে জেলায় একটি বৈঠক হয়। ছিলেন প্রকল্পের কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার। পরিসংখ্যান দেখার পর প্রশাসনিক কর্তাদের তিনি নির্দেশ দেন, কাজে প্রতিবন্ধীদের যোগদান বাড়াতে হবে। নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসনও। প্রতিটি ব্লককে লিখিত নির্দেশ পাঠানো হয়। কীভাবে যোগদান বাড়ানো যায় তা নিয়ে একটি কর্মশালাও হয়। একশো দিনের প্রকল্পের জেলা প্রকল্প আধিকারিক প্রিয়াঞ্জন দাস বলেন, “নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রতিবন্ধীরা যদি আবেদন নাও জানান, তবু তাঁদের কাজ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে তাঁদের কাছে গিয়ে একশো দিনের কাজ সম্বন্ধে বোঝাতে হবে।” অর্থাৎ প্রশাসনই এ বার কাজের প্রস্তাব নিয়ে যাবে তাঁদের কাছে যাঁদের এতদিন সমাজ, পরিবার সকলেই তাঁদের অসম্পূর্ণতার দোহাই দিয়ে কাজ থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিল। সরকারের এই পদক্ষেপে যদি সচেতনতা বাড়ে, বাড়ে কাজে যোগদান বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসে এই মানুষগুলোর জীবনে তা কিছুটা আশার আলো তো বটেই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.