দলে গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব নেই, যা আছে তা আসলে ভুল বোঝাবুঝিরবিবার দুবরাজপুরে ‘শুভেচ্ছা সম্মেলন’ করে এই বার্তাই দিতে চাইলেন বীরভূম জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ।
দুর্গাপুজো, ঈদ ও দীপাবলি উপলক্ষে আয়োজিত ওই সম্মেলনে এ দিন হাজির ছিলেন সাম্প্রতিক কালে একাধিক বিষয়ে মতান্তর তৈরি হওয়া স্থানীয় দুই তৃণমূল নেতা মলয় মুখোপাধ্যায় ও প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব পুরোপুরি মিটেছে, এ কথা অবশ্য তাতেও বলা যাচ্ছে না। কারণ, এ দিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন না জেলা সভাপতির বিরোধী গোষ্ঠী বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা শৈলেন মাহাতো ও তাঁর অনুগামীরা।
তবে, জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এই সম্মেলনকে সামনে রেখে তৃণমূল আসলে আগামী বছর দুবরাজপুরের পুরভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিল। সম্মেলনে জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল থেকে নতুন মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের কংগ্রেস পরিচালিত দুবরাজপুর পুরবোর্ডকে চূড়ান্ত আক্রমণ সেই জল্পনাকেই উস্কে দিয়েছে। |
গত পুর নির্বাচনে ‘অলিখিত’ জোট গড়ে সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়েছিল কংগ্রেস, বিজেপি এবং তৃণমূল। ক্ষমতা দখল করেছিল জোটই। সর্বাধিক আসন দখলে থাকায় পুরপ্রধান হন কংগ্রেসের পীযূষ পাণ্ডে। একটি আসন পায় তৃণমূল, দু’টি বিজেপি। কিন্তু, রাজ্য স্তরে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই জোটের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে দেন একমাত্র তৃণমূল কাউন্সিলর আশিস সাহা। ২০১৩ সালের পুরভোটে যে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তা এক অর্থে মেনেই নিয়েছেন জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই আসন্ন নির্বাচনকে মাথায় রেখেই নিজেদের মধ্যে মতান্তর ‘ভুলে’ ওই নেতারা দুবরাজপুরের অনুষ্ঠানে একমঞ্চে হাজির হলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
দুর্বল পুর-পরিষেবা, অনুন্নয়ন ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলার পাশাপাশি ক্ষমতায় এলে উন্নত পুর পরিষেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিতে থাকেন নেতারা। মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “ক্ষমতাসীন পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে আমার কাছে বেশ কিছু দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। জেলাশাসককে দিয়ে তার তদন্ত করাব।” অনুব্রতবাবর অভিযোগ, “কংগ্রেস এখানে লক্ষ লক্ষ টাকা চুরি করেছে। এলাকার মানুষের উন্নতি করেনি। আমরা কাউকে ছাড়ব না।”
পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডের জবাব, “দুবরাজপুর পুরসভায় কোনও দুর্নীতি হয়নি। ওরা (তৃণমূল) যাকে দিয়ে তদন্ত করাতে চায় করুক।” তাঁর পাল্টা দাবি, “আসলে ভোট আসছে তো। তাই তৃণমূলের নেতারা গরম গরম কথা বলছেন। এখানকার পুরপরিষেবা আর পাঁচটা তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার থেকে অনেক ভাল। সাধারণ মানুষের তা নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই।” |