বিজেপির পর কংগ্রেস। রবিবার বিকেলে পূর্বস্থলী ২ ব্লকে দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন কংগ্রেসের ৯ জন। এর মধ্যে দু’জন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ও ৭ জন পঞ্চায়েত সদস্য। দলছাড়াদের মধ্যে রয়েছেন জেলা ব্লক ও শ্রমিক সংগঠনের কয়েক জন নেতাও। নেতাদের দাবি, এই ব্লকের বেশির ভাগ কর্মী-সমর্থক তাদের সঙ্গেই রয়েছে।
মাস খানেক আগে এই ব্লকের বিজেপির মধ্যেও বড় ভাঙন দেখা যায়। দলের প্রধান, উপপ্রধান-সহ কয়েক জন পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। রবিবার পূর্বস্থলী ২ ব্লকে পাটুলিতে তৃণমূলের তরফে তৈরি করা হয় একটি মঞ্চ। সেখানে দলের তরফে প্রথমে পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, ভূমি ও বস্ত্র দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রীকে সংবর্ধনা জানানো হয়। পরে জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপনবাবুই কংগ্রেস ছাড়াদের হাতে তুলে দেয় দলীয় পতাকা।
গত পঞ্চায়েত ভোটে এই ব্লকে তৃণমূল, কংগ্রেস, বিজেপি জোট গড়ে সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ক্ষমতায় আসে জোট। পঞ্চায়েত সমিতিতে ৩টি পঞ্চায়েতের ১১টি আসন পায় কংগ্রেস। এর মধ্যে মাজিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের মিসবাপুরের পঞ্চায়েত সদস্য আমজেদ শেখ ও মুকসিমপাড়া পঞ্চায়েতের হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের আলিম মণ্ডল আগেই দল ত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। মাস দুয়েক আগে দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বিধানসভার কংগ্রেস প্রার্থী তোড়া রায়চৌধুরী। রবিবার তিন পঞ্চায়েত সদস্যের মধ্যে দু’জন যোগ দিলেন তৃণমূলে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পিলা পঞ্চায়েত থেকে নির্বাচিত নুরুল ইসলাম শেখ (বর্তমানে পূর্বস্থলী ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি) ও নিমদহ পঞ্চায়েত এলাকা থেকে নির্বাচিত পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সোমা রায়। এছাড়াও পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পিলা পঞ্চায়েতের পিলা, পাঠানগ্রাম, খড়দত্তপাড়া ও গাছা এলাকার চার জন পঞ্চায়েত সদস্য যোগ দেন তৃণমূলে। তাঁরা হলেম পিলা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সাবির দফাদার ও সাফিয়া বিবি, মাজকুরা বিবি, হাসিবুল শেখ। এছাড়াও নিমদহ এলাকার দুই পঞ্চায়েত সদস্য বাঁকাশ্যাম মাঝি, বুলবুলি মাঝি ও মুকসিমপাড়া পঞ্চায়েত এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য জেবউন্নিসা বিবি দল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের পাশাপাশি তৃণমূলের ওই মঞ্চে যোগ দিয়েছেন আজিজুল রহমান, বিপ্লব পাল, জামাল দফাদার ও খোকন দাস। কালনা মহকুমা আদালতের আইনজীবী আজিজুলবাবু ছিলেন কংগ্রেসের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা ব্লক কংগ্রেসের সহ-সভাপতি। বিপ্লববাবু ছিলেন ব্লক যুব কংগ্রেসের সভাপতি। পিলা অঞ্চল কংগ্রেসের দায়িত্বে ছিলেন জামাল দফাদার। খোকনবাবু ছিলেন আইএনটিটিইউসির নেতা হিসেবে পরিচিত। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে আজিজুলবাবু বলেন, “১৯৭১ সাল থেকে কংগ্রেসে রয়েছি। বর্তমানে কংগ্রেস লড়াইয়ের মানসিকতা হারিয়ে ফেলেছে। উন্নয়নও কংগ্রেসের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই দল ত্যাগের সিদ্ধান্ত।” তাঁর দাবি, “রবিবার দল ছাড়ার পর পূবর্স্থলী ব্লকে কংগ্রেসের শক্তি কমে গেল। ২৫ শতাংশ আসনেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাল করে লড়াই সম্ভব নয়।” ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি রণকালী মোদকের কথায়, “যারা তৃণমূলে যোগ দিয়েছে, তাদের নামের তালিকা আমার কাছে নেই। তবে যারা যাচ্ছেন, ব্যক্তিগত স্বার্থ সিদ্ধির জন্য যাচ্ছেন।” পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে তার প্রতিক্রিয়া, “দল সাধ্যমতো প্রার্থী দাঁড় করাবে। চেষ্টা করা হবে বেশি সংখ্যক আসনে প্রার্থী দেওয়ার।” পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে এর সুফল পাবে দল।” এ দিন মুকসিমপাড়া এলাকার কিছু বিজেপি কর্মী-সমর্থকও তৃণমূলে যোগ দেন।
|
প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান। কৃষ্ণসায়ের পরিবেশ কানন। সকাল সাড়ে ৯টা। |