আজ বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস
সরকারি সাহায্য মেলেনি, তবু মনের জোরেই লড়ছে জয়ন্ত
দু’টি পা-ই অকেজো। লাঠির ভরে কোনও মতে চলাফেরা করে। অনটনের সংসার। বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্বও অনেকটাই। বছর খানেক আগে তাই সরকারি সাহায্য চেয়েছিল বারাবনির প্রতিবন্ধী ছাত্র জয়ন্ত মোদক। আজও তা মেলেনি। কবে মিলবে তাও অজানা।
বারবানি ব্লকের পুচড়া পঞ্চায়েতের মহাবীর দিগম্বর জৈন শরাক উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ে জয়ন্ত। স্কুল থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে নতুনডিহি গ্রামে তার বাড়ি। হেঁটে স্কুলে পৌঁছতে তার সময় লেগে যায় প্রায় দু’ঘন্টা। একটি ট্রাইসাইকেল কেনার জন্য পঞ্চায়েত থেকে ব্লক, সব স্তরেই সাহায্যের আবেদন করে বিফল হয়েছে সে। জয়ন্ত বলে, “বাবা মারা গিয়েছে সেই ছোটবেলায়। মা কোনও মতে কাজ করে সংসার টানছে। যদি সরকারি সাহায্য পেতাম তবে চিন্তা অনেকটা দূর হত।” কিন্তু আদৌ সেই সাহায্য মিলবে কি না তা জয়ন্তও জানে না। এর পরেও দমে যায়নি সে। কষ্ট করে রোজ স্কুলে গিয়েছে। প্রতি বছর ভাল ভাবে পাশও করেছে।
সম্প্রতি ওই স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, পড়ার ফাঁকে বন্ধুদের সঙ্গে গল্পে মসগুল। তার আক্ষেপ, “২০১১ সালের গোড়ায় স্কুলের মাধ্যমে সরকারি সাহয্যের আবেদন করেছি। আজও পেলাম না।” স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ উপাধ্যায় জানান, জয়ন্তর আবেদন পত্রটি সর্বশিক্ষা দফতরে পাঠানো হয়েছে। এখনও কোনও খবর আসেনি।
বন্ধুদের সঙ্গে জয়ন্ত মোদক।—নিজস্ব চিত্র।
তিনি বলেন, “ওর স্কুলে আসা-যাওয়ার কষ্ট দেখে আমাদের স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা যৌথভাবে চাঁদা তুলে মাস কয়েক আগে একটি ট্রাইসাইকেল কিনে দিয়েছেন।” এখন অবশ্য ওই সাইকেল চেপেও স্কুল যায় জয়ন্ত।
আবেদন করার এক বছর পেরিয়ে গেলেও কেন ওই ছাত্রের হাতে সাহায্য পৌঁছায়নি সে বিষয়ে খোঁজখবর নিতে গিয়ে জানা গেল, সর্বশিক্ষা দফতরের পক্ষে প্রতি ব্লকে এক জন করে ‘স্পেশাল এডুকেটর’ নিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁর কাজ, ব্লকের সমস্ত স্কুল ঘুরে এ ধরনের প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের চিহ্নিত করে তাঁদের জন্য বরাদ্দ সরকারি অর্থ স্কুলের মাধ্যমে তাদের হাতে তুলে দেওয়া ও অন্য সুযোগ পাইয়ে দেওয়া।
বারাবনির শিক্ষা চক্রের স্কুল পরিদর্শক ভরত ঘোষ বলেন, “ওই স্পেশাল এডুকেটর গত দেড় বছর ধরে ছুটিতে রয়েছেন। এই অবস্থাতেও আমরা ওই ছাত্রকে ২০১০ সালে বরাদ্দ অর্থ সাহায্য পাঠিয়েছি। কাগজপত্র পরীক্ষা করে তার পাওনা কিছু থাকলে পাঠিয়ে দেব।” ওই ছাত্রের হাতে সরকারি সাহায্য এসে না পৌঁছনোয় বিরক্ত বারাবনির বিডিও উজ্জ্বল বিশ্বাস। তিনি বলেন, “সর্বশিক্ষা দফতরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। স্কুল পরিদর্শকের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে পাঠিয়েছি। দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।” এ রকম এক জন প্রতিবন্ধী ছাত্র আবেদন করেও সর্বশিক্ষার অনুদান না পাওয়ার বিষয়ে দফতরের ডিস্ট্রিক্ট প্রজেক্ট অফিসার (ডিপিও) বর্ষারানি বসুর আশ্বাস, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.