ধোঁয়ায় সেই আমরিরই আতঙ্ক
পিজি-তে শিশু ওয়ার্ডে আগুন
মরি-কাণ্ডের এক বছর পার না হতেই ফের সেই ভয়াবহ স্মৃতি উসকে দিল এসএসকেএম হাসপাতাল। শনিবার রাত ১০টা নাগাদ আগুনের জেরে ধোঁয়ায় ঢেকে গেল হাসপাতালের মূল ভবনের পাঁচতলায় শিশুরোগীদের চিকিৎসার অ্যালেক্স ওয়ার্ড। এমনকী পাশের ইএনটি ওয়ার্ডেও। আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে এলেও আতঙ্কের ভাগে কম পড়েনি। সব ক’টি শিশুকে শেষ পর্যন্ত নিরাপদে বার করা গিয়েছে কি না তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাজ করেছে গভীর রাত পর্যন্ত। মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের ছ’বছরের রোহন শেখের মাসি যেমন, হাসপাতালের মূল ভবনের নীচে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছিলেন। ডামাডোলের মধ্যে রোহনকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তবে শেষ পর্যন্ত সব ক’টি শিশুই নিরাপদে আছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন।
বস্তুত, আমরি-কাণ্ডের পরেও রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলোতে যে ছিটেফোঁটা অগ্নি-সুরক্ষা কার্যকর হয়নি, এসএসকেএমের মতো সুপার-স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের দশাই সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে। দমকল সূত্রের খবর, আগুন লাগে এসি মেশিনের শর্ট সার্কিট থেকে। আগুন তেমন না ছড়ালেও ধোঁয়াতেই আতঙ্ক ছড়ায়। দমকল-কর্তাদের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে ধোঁয়া জরিপের স্মোক-ডিটেক্টর বা জল ছিটিয়ে আগুন নেভানোর স্বয়ংক্রিয় স্প্রিংক্লার থাকলে, ধোঁয়া এত দূর ছড়াতে পারত না।
আগুন লাগার পর এসএসকেএম থেকে বের করে আনা হচ্ছে শিশুদের। শনিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও হাসপাতালের এসি মেশিনের রক্ষণাবেক্ষণে ত্রুটির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “ডাক্তারদের বসার ঘরে এসি বেশি ক্ষণ চালিয়ে রাখার ফলেই এমনটা হয়েছে। কেন এমন হল, দেখা হবে।” স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিভ্রাটের জন্য পূর্ত দফতরের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর কথায়, “পিডব্লিউডি (ইলেকট্রিকাল)-এর কাজ এসি মেশিন বা লিফ্টে নজর রাখা। তারা কী করছিল, দেখতে হবে।” এ রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলি দমকলের ছাড়পত্র ছাড়াই পরিষেবা দিচ্ছে। আমরি-র পরেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি। পুর ও নগরোন্নয়ণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, “এই ঘটনা নিয়ে বিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা হবে।” ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “সুপারের নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়ে তদন্ত করানো হবে।” এসেছিলেন পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদারও। তিনি বলেন, “মেশিনগুলি দেখা হবে। অটো-কাট লাগানো হবে।”
অ্যালেক্স ওয়ার্ডের ডাক্তার-নার্সরা অবশ্য আমরি থেকে শিক্ষা নিয়ে দেরি করেননি। শিশু বিভাগের প্রধান সুপ্রতিম দত্ত বলেন, “সব শিশুকে চারতলা ও তিনতলায় অন্য ওয়ার্ডে সরানো হয়েছে। বাড়তি বেডেরও ব্যবস্থা হয়েছে।” সরানো হয় ইএনটি বিভাগের রোগীদেরও। শ’খানেকের বেশি শিশু, অনেকেরই অস্ত্রোপচার হয়েছিল। কয়েক জনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। ঘটনাস্থলে গিয়ে কিন্তু দেখা গিয়েছে, একতলায় রোগীর পরিজনদের থাকার ঘরেও ওয়ার্ডের বাচ্চাদের নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত পরিবারের লোকজন। কালীপুজোয় বাজিতে পুড়ে যাওয়া ধর্মতলার পারভিন বা আসানসোলের নাসরিনও সেখানেই। কার বাচ্চা কোথায় রয়েছে, তা নিয়েও বিভ্রান্তি তুঙ্গে। গভীর রাতে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, দুই ওয়ার্ডের সব রোগীকেই ওয়ার্ডে ফেরানো হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.