|
|
|
|
ভরসা গাছতলা, ঘর তৈরি হল না অঙ্গনওয়াড়ির |
সুমন ঘোষ • মেদিনীপুর |
গাছের শুকনো ডালে ঝুলছে ‘দিদিমণি’র ব্যাগ। নীচেই উনুন। বড় হাঁড়িতে টগবগ করে ফুটছে খিচুড়ি। খোলা আকাশের নীচে দিদিমণি প্রতিমা রজক আর তাঁর খুদে পড়ুয়ারা।
এই ভাবেই চলছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। মেদিনীপুর সদর ব্লকের জামকুণ্ডা-৩ গ্রাম পঞ্চায়েতে চলে এই কেন্দ্রটি। জেলার ৯০০৯টি অঙ্গনওয়াড়ির মধ্যে নিজস্ব ভবন নেই ৫৫০৯টির। কোনওটি গ্রামের আটচালা, ক্লাবে চলে। অনেকগুলিই চলে খোলা আকাশের নীচে। হঠাৎ বৃষ্টি এলেই রান্না বন্ধ।
অথচ দেড়শোটিরও বেশি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির অনুমোদন পেলেও, তা তৈরি করা হবে না বলে রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। সমাজকল্যাণ দফতর থেকে ২০০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল বছর তিনেক আগে। তার মধ্যে ১৫৩টির টাকাই ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল (আরএইডিএফ) থেকে ২০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের অনুমোদন পেয়েও ৯টির টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “সরকার মাত্র ২০ শতাংশ অর্থ দিয়েছিল। সে টাকায় যে কাজ করা গিয়েছে, তা করেছি। বাকি টাকা চেয়েও পাইনি। তাই ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে।” |
|
এ ভাবেই চলছে স্কুল। নিজস্ব চিত্র। |
কিন্তু অন্য খাতের টাকা থেকে শিশুদের জন্য কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে না কেন? অন্তরা দেবী বলেন, “এই কাজ করতেই সব টাকা দিয়ে দিলে অন্য কাজ হবে কী করে?”
যদিও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্বাদশ অর্থ কমিশনের টাকায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাকে ৪১১টি অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র তৈরি করতে বলা হয়েছিল। সময়সীমার মধ্যে শেষ করতে না পারায় নির্মাণের খরচ ২ লক্ষ টাকা থেকে দাঁড়ায় ৩.৫ লক্ষ টাকা। বাকি টাকা পশ্চাদপদ এলাকা উন্নয়ন তহবিল (বিআরজিএফ) থেকে দিয়ে কেন্দ্রগুলি তৈরি করা হয়। বর্তমানে বাড়ি-পিছু খরচ ৩.৯ লক্ষ টাকা। ফলে অসম্পূর্ণ ১৬২টি প্রকল্প রূপায়ন করতে চাইলে আরও ৪০ হাজার টাকা করে দিতে হবে জেলা পরিষদকে। সময়ে কাজ না করতে পারায় হয়রানি হচ্ছে শিশুদের। নষ্ট হচ্ছে করদাতাদের টাকাও।
|
|
|
|
|
|