স্কুলভোটে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে তৃণমূলের হামলার মুখে পড়ার অভিযোগ তুলল সিপিএম। শুক্রবার বর্ধমানের শক্তিগড় গার্লস হাইস্কুলে সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীদের লাঠি, টাঙ্গি, কাটারি নিয়ে তৃণমূলের লোকজন তাড়া করে বলে অভিযোগ। তাতে তিন প্রার্থী-সহ কয়েক জন আহত হন। বর্ধমান-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের কালীপদ সরকারকে নিগ্রহ করা হয় বলেও অভিযোগ।
সিপিএম নেতাদের অভিযোগ, খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছনোর পরে তাদের ফের তাড়া করা হয়। শেষ পর্যন্ত তাদেঁর কেউ মনোনয়ন জমা দিতে না পারায় তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন। তৃণমূল অবশ্য হামলার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশের সামনে হামলার কথা মানেননি বর্ধমান থানার আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায়।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত স্কুলের পরিচালন সমিতির ভোটের জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার কথা ছিল। সকাল ১১টা নাগাদ মনোনয়ন জমা দিতে আসেন বাম সমর্থিত প্রার্থীরা। অভিযোগ, তৃণমূলের এখ দল সমর্থক তাঁদের ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাড়া করে। জখম হন সিপিএমের বর্ধমান ৪ লোকাল কমিটির সম্পাদক জহর দত্ত, স্থানীয় নেতা শেখ আজমত-সহ কয়েক জন। তাঁরা শক্তিগড়ে দলের সদর-৪ লোকাল কমিটি অফিসে গিয়ে ঢুকে পড়েন। |
জহরবাবুর অভিযোগ, “আমাদের ৬ প্রার্থীরা ১১টার আগেই মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন। সেখানে তৃণমূল নেতা গোলাম জার্জিস ও অম্বিকা দাসের নেতৃত্বে শ’খানেক সশস্ত্র লোক আক্রমণ করে। আমাদের তিন প্রার্থী বিশ্বজিৎ প্রামাণিক, চন্দন সিংহ ও শেখ আজমতকে মারধর করে। প্রবীণ নেতা কালীপদ সরকারকেও মারধর করে রাস্তায় ফেলে দেয়। আমার ডান হাতে লাঠি দিয়ে মারে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেও নিরাপত্তা দেয়নি।”
খবর পেয়ে বর্ধমান থানার আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। সিপিএমের নেতাদের দাবি, পুলিশ পৌঁছানোর পরে তাঁরা ভেবেছিলেন, তাঁদের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারবেন। কিন্তু দ্বিতীয় বার মনোনয়ন জমা দেওয়ার চেষ্টা করেও তাঁরা ব্যর্থ হন। জহরবাবুর অভিযোগ, “ফের মেরেধরে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই সময়ে পুলিশ চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল।”
তৃণমূল নেতা গোলাম জার্জিসের অবশ্য পাল্টা দাবি, “শক্তিগড়ে সিপিএম জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রার্থী খুঁজে না পেয়ে এ সব মিথ্যা অভিযোগ করছে। জহরবাবুরা তো আগে কোথাও ভোট হতেই দিতেন না। তাই এখন তাঁদের দেখে স্থানীয় মানুষই তাড়িয়ে দিয়েছেন। এর সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত নয়।” আইসি দিলীপবাবুর বক্তব্য, “আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পরে সিপিএম নেতাদের ফোন করে মনোনয়ন জমা দিতে আসতে বলি। কিন্তু কেউ আসেননি। পুলিশের পক্ষে তো প্রার্থীদের বাড়ি থেকে নিয়ে আসা সম্ভব নয়।” |