পুরসভার ব্যয় সংকোচে এ বার মেয়র পারিষদ এবং আধিকারিকদের গাড়ির খরচে রাশ টানতে চাইছেন শিলিগুড়ি পুর কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি মেয়র পারিষদদের নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠকে এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। পুরসভারই একটি সূত্র জানিয়েছে, হিসাবের তালিকায় দেখা যাচ্ছে মেয়র পারিষদ, বরো চেয়ারম্যান এবং আধিকারিকদের অনেকের জন্যই পুরসভার গাড়ির খরচ মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। অনেক ক্ষেত্রে তারও বেশি খরচের হিসাবও রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, মেয়র পারিষদদের গাড়ির তেল খরচ এবং চালকের বেতন মিলিয়ে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত সীমা বেঁধে দেওয়া হবে। তবে গাড়ির খরচে ছাড় পাবেন মেয়র, ডেপুটি মেয়র, পুর কমিশনার এবং চেয়ারম্যানরা। বরো চেয়ারম্যান এবং আধিকারিকদের গাড়ির খরচ মাসে ১০ হাজার টাকার মধ্যে রাখতে হবে। সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়াররা পুরসভার কাজ পরিদর্শনে বাইক নিয়ে যান। পুরসভার তরফে তাঁদের তেলের খরচ দেওয়া হয়। তার পরিবর্তে কত দূর তাঁরা যাচ্ছেন সেই হিসাব দেখে কিলোমিটার পিছু নির্দিষ্ট টাকা যাতায়াতের খরচের জন্য দেওয়া হবে। মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলে, “পুরসভার আয় বাড়ানো, ব্যয় সংকোচের বিষয়ে কিছু আলোচনা হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। বিস্তারিত কিছু বলতে চাই না।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়র পারিষদ, আধিকারিক, বরো চেয়ারম্যানদের জন্য পুরসভায় ২৪টি গাড়ি ব্যবহার করা হয়। তার মধ্যে পুরসভার নিজস্ব গাড়ি ৭টি। বাকিগুলি ভাড়া করা। গাড়ি পিছু ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা মাসে খরচ হওয়ায় বিপুল পরিমাণ টাকা ওই খাতে ব্যয় হচ্ছে। গাড়ির খরচ নির্দিষ্ট সীমায় বেঁধে দিলে বছরে প্রায় কোটি টাকারও বেশি সাশ্রয় সম্ভব হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। মেয়র পারিষদদের নিয়ে যে বিশেষ বৈঠক হয় তাতে ঠিকা নিযুক্ত কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে পর্যালোচনা হয়েছে। এক আধিকারিকের কথায়, বেতন বাড়াতে যে বাড়তি খরচ হবে আয় বাড়িয়ে এবং খরচের রাশ টেনে সে ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য ঘটাতে ওই বৈঠকে জোর দেন মেয়র পারিষদদের অনেকেই। সেই মতো গাড়ির খরচ কমানো, বিদ্যুতিক বিলের খরচ কমানো, বিভিন্ন জিনিস কেনার সময় ন্যুনতম খরচে যাতে তা কেনা যায় সেদিকে খেয়াল রাখার মতো বিষয়গুলি উঠে এসেছে। আয় বাড়াতে হোটেলগুলি থেকে ঠিক মতো ‘স্টে ট্যাক্স’ সংগ্রহ, ‘ট্রেড লাইসেন্স ফি’ সংগ্রহের মতো বিষয়গুলির উপর জোর দেওয়া হয়েছে। কবে কত জন হোটেলে থাকছেন তা সঠিক ভাবে বহু হোটেল কর্তৃপক্ষই জানাচ্ছেন না। তেমনই ট্রেডলাইসেন্স ছাড়া শহরে অনেক ব্যবসায়ী কারবার করছেন। তাই সে সব ক্ষেত্রে নজরদারি চালিয়ে আয় বাড়ানোর কথা ভাবা হয়েছে। বর্তমানে পুরসভার অধীনে ঠিকা চুক্তিতে অন্তত ১৮০০ কর্মী কাজ করেন। ১৩০ টাকা পারিশ্রমিকে তাঁরা কাজ করছেন। বিভিন্ন কর্মী সংগঠনগুলির তরফেও ঠিকাকর্মীদের বেতন বৃদ্ধির দাবি বারবার জানানো হয়েছে। বর্তমান পুর কর্তৃপক্ষও বিষয়টি সহানূভুতির সঙ্গে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁরাও চান ওই কর্মীদের বেতন বাড়িয়ে অন্তত ১৫০-১৬০ টাকা পারিশ্রমিক করা হোক। |