বিশ্বকর্মা থেকে শুরু। মাঝে শারদোৎসব। শেষে আলোর উৎসব কালীপুজো। উৎসবের এই শৃঙ্খলায় কালীপুজোয় সেজে ওঠার জন্য তৈরি রেলশহর আদ্রা।
বিশ্বকর্মা পুজোর আনন্দের তাল-লয় বজায় রেখেই কালীপুজোতেও থিমের চমক থাকছে। একে অন্যকে পাল্লা দেওয়ার জন্য পুজো কমিটিগুলি এখন তাই তুমুল ব্যস্ত। আদ্রায় বড়মাপের কালীপুজোর সংখ্যা প্রায় ১০টি। তার মধ্যে প্রশ্নাতীত ভাবে প্রথমের দিকে থাকে হইচই সঙ্ঘ। মূলত রেলকর্মী সংগঠন মেনস কংগ্রেসের নেতা গৌতম মুখোপাধ্যায়ের পুজো হিসাবেই এই পুজোর পরিচিতি। ঘটনা হল মণ্ডপ, থিম, আলোকসজ্জাতে বরাবরই আদ্রার বড়মাপের পুজোগুলির মধ্যে প্রথম সরিতে থাকে হইচই সঙ্ঘ। এ বারেও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। দক্ষিণভারতীয় মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপটি সাজানো হচ্ছে কাঁচের চুড়ি দিয়ে। গৌতমবাবুর কথায়, “বরাবরই আমরা অপ্রচলিত জিনিস দিয়ে মণ্ডপ সাজাই। ফলে মণ্ডপ আরও বেশি দৃষ্টিনন্দন হয়। এবারও সেই ধারা বজায় রেখেছি।” বস্তুত কখনও পাটকাঠি, কখনও বাঁশ দিয়ে মণ্ডপ গড়ে তাক লাগানোর অতীত রেকর্ড রয়েছে হইচই সঙ্ঘের। তাঁদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কল্পতরু। এ বার ২৫ বছরে পা দেওয়া কল্পতরুর থিম ‘পাহাড়ের কালীপুজো’। উদ্যোক্তা ভৈরব দত্ত জানান, পাহাড়ের পাথর কেটে আটটি চুড়োর মন্দির দেখা যাবে তাঁদের মণ্ডপে। সেই মন্দিরের গর্ভগৃহে থাকবে কালী প্রতিমা। আসলে পুরো মণ্ডপটাই তাঁরা তৈরি করছেন চটের বস্তা ব্যবহার করে। পিছিয়ে নেই দেশবন্ধু ক্লাবও। শ্মশানের পরিবেশে কালীপুজোকে থিম করেছেন তাঁরা। দেশবন্ধু ক্লাবের তরফে বিধান কালিন্দী বলেন, “পুরোদস্তুর শ্মশানের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। জ্বলন্ত চিতা, শ্মশানবন্ধু থেকে শুরু করে ভগ্নপ্রায় স্মৃতিসৌধ থাকছে। শ্মশান চত্বরে থাকবে অতিপ্রাচীন বটগাছ। তার অসংখ্য ঝুরি নেমে এসেছে শ্মশানভূমিতে।” তিনি জানান, শ্মশানের পরিবেশেই বেশি জমে কালীপুজো। আলোয় ভরা শহরের তুলনায় নিঝুম শ্মশানের কালীপুজোয় যেন আলাদা রোমাঞ্চ রয়েছে। সেই রোমাঞ্চটাই দর্শকদের দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা। অন্য দিকে, বরাবরই ভালো পুজো করে মুক্তদল, এনসিসি, ফ্রেন্ডস ক্লাব। ছিমছাম মণ্ডপের সঙ্গে আলোকসজ্জা দর্শনীয়। এখন শুধু প্রহর গোনা। |