পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কমিশনকে চাপের কৌশল
ঞ্চায়েত ভোট নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপরে পাল্টা চাপের কৌশল নিচ্ছে সরকার।
রাজ্যে কবে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে, তাই নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কমিশনের কার্যত দড়ি টানাটানি চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছা পূরণ করতে কমিশনকে পঞ্চায়েত দফতর বলেছে, ভোট হোক ফেব্রুয়ারি মাসে। এই নিয়ে দু’পক্ষের কয়েক দফা আলোচনার পরেও কমিশনকে রাজি করাতে পারেনি সরকার। কমিশনের উপর পাল্টা চাপ তৈরি করতে এখন অন্য যুক্তি সাজাচ্ছে সরকার।
কী সেই যুক্তি?
সরকারের এক মুখপাত্র শুক্রবার জানান, রাজ্যের প্রস্তাব মতো কমিশন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করতে রাজি হচ্ছে না। এই অবস্থায় নির্দিষ্ট সময়ে, অর্থাৎ মে মাসে কমিশন যখন নির্বাচনের আয়োজন করার কথা বলবে, তখন সরকারও প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিতে পারে। ওই মুখপাত্রের কথায়, “সরকার প্রয়োজনীয় সাহায্য না করলে কমিশনের পক্ষে একা নির্বাচন পরিচালনা করা সম্ভব নয়।”
সরকারের এই নতুন কৌশল সম্পর্কে মুখ খুলতে নারাজ রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তবে তাঁর বক্তব্য, “মেয়াদ শেষের পরেও কোনও কারণে ভোট না করা গেলে কী ভাবে পঞ্চায়েতগুলি কাজ করবে আইনে সম্ভবত তার কোনও নির্দেশিকা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে আইনে আছে, পঞ্চায়েতগুলির মেয়াদ শেষের পরবর্তী ছ’মাসের মধ্যে ভোট করতেই হবে।”
পঞ্চায়েত নির্বাচন কবে হতে পারে, তাই নিয়ে বিরোধ তুঙ্গে উঠলেও নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, কোনও পক্ষই এখনও নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু বলেনি। সব কথাই হচ্ছে মৌখিক ভাবে। তা হলে সরকার কবে ভোট চাইছে? পঞ্চায়েতমন্ত্রী জবাব, “নির্বাচন কমিশনারকে জিজ্ঞাসা করুন সরকারের মনোভাব কি?” কমিশনের ওই মুখপাত্রের কথায়, রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে তারা জানিয়ে দিয়েছে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে ভোট করতে তাদের আপত্তি নেই। তবে সে ক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সূচি বদল করতে হবে। কমিশন চায়, চার দফায় ভোট করতে। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি দফার ভোটের পর অন্তত তিন-চার দিনের ব্যবধান রাখতে হবে।
কমিশনের বক্তব্য, ৫ জানুয়ারি বিধানসভা ভিত্তিক চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে। তবে মুর্শিদাবাদের ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে ২১ জানুয়ারি। সেই তালিকার ভিত্তিতে প্রায় ৪০ হাজার গ্রাম পঞ্চায়েত, ৮ হাজারের বেশি পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের সীমানার ভিত্তিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য নতুন করে ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে। এই কাজের জন্য কমপক্ষে ১০-১২ দিন সময় লাগবে। তার পরে সেই তালিকা যাবে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে। তাদের কোনও অভিযোগ থাকলে তা জানানোর জন্য অন্তত দু’দিন সময় দিতে হবে। তার পরে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া এবং তা পরীক্ষার জন্য অন্তত আরও ৮ দিন সময় দিতে হবে। তার পরে ২১ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। অর্থাৎ, পরিস্থিতি বিচার করে ন্যূনতম দিন ধরলেও মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহের আগে ভোট করা সম্ভব নয়।
এ দিকে, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আনার বিরুদ্ধে ফের সরব হল বিরোধী সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেবের নেতৃত্বে এক বাম প্রতিনিধি দল এ দিন নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডের কাছে দরবার করতে গিয়েছিলেন। তাঁদের দাবি, ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ ঠিক ভাবে না করে পঞ্চায়েত ভোট যদি এগিয়ে আনা হয়, তা হলে ভুলত্রুটির দায় বর্তাবে কমিশনের উপরে। রবীনবাবু বলেন, “ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ আগে শেষ করতে হবে। তার পরে পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে। ফেব্রুয়ারিতে মাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষার্থী, অভিভাবক থেকে শুরু করে শিক্ষকরা সেই পরীক্ষার সঙ্গে জড়িত। এই সমস্ত বিষয় মাথায় রেখে কাজ করার জন্য আমরা কমিশনের কাছে আর্জি জানিয়েছি।” পাশাপাশি তাঁরা দাবি জানিয়েছেন, শাসক দলের চাপে কোনও পক্ষপাতমূলক পদক্ষেপ কমিশন যেন না করে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.