ডাকঘর

চিঠি পড়ে হতাশ হলাম
আমার ২৯ অক্টোবরের চিঠির ও তুলসীচরণ মণ্ডলের ২২ সেপ্টেম্বরের চিঠির উত্তরে ৩ নভেম্বর প্রকাশিত সৈয়দ খালেদ নৌমানের চিঠি পড়ে হতাশ হলাম। কেননা, ওই চিঠিতে কোনও যুক্তিযুক্ত জবাব নেই। আছে কিছু অমার্জিত এবং অসত্য মন্তব্য। আমাদের চিঠি দু’টি স্বনামেই প্রকাশিত হয়েছিল। অথচ খালেদ নৌমান আমাদের নাম উল্লেখ না করে ‘জনৈক’ পত্রলেখক বলে অভিহিত করেছেন। এ কোন ধরনের সৌজন্য! আবারও আমি প্রতিভারঞ্জন মৈত্র সম্পাদিত ‘মুর্শিদাবাদ চর্চা’ গ্রন্থে সৈয়দ খালেদ নৌমানের লেখা ‘মুর্শিদাবাদের লোকসংস্কৃতি আলকাপ’ প্রবন্ধের ২১২ পাতা এবং ২১৪ পাতা ভাল করে দেখতে বলছি। সেখানে লেখা আছে, “সিরাজ সে সময় পার্শ্ব অভিনেতা হিসাবে ওস্তাদ ঝাঁকসুর দলে সামান্য কিছু দিন অভিনয় করার পরে নিজেই ওস্তাদ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করলে সুধীর সিরাজের দলেই চলে আসেন।” নৌমান ওই নিবন্ধের কোথাও বলেননি যে তাঁর দাদা শুধু ‘কাপে’ অভিনয় করেছেন। অথচ তিনি এ কথা নতুন করে চিঠিতে সংযোজন করছেন। ওই একই নিবন্ধের ১৯৩ পাতায় খালেদ লিখেছেন, “ওস্তাদ, কপে, হারমনিয়াম বাদক, তবলচি, জুড়ি বাদক, পার্শ্ব অভিনেতা, দোহারকিএঁদের সমন্বয়ে গঠিত হত আলকাপ দল।” ওই নিবন্ধের ১৯৫ পাতায় তিনি লিখেছেন, “আলকাপ দলের সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার ছিল যে, প্রয়োজন মাফিক ওস্তাদ থেকে শুরু করে দোহারকি ও বাদ্যশিল্পীরা পর্যন্ত সকলেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতো।” অথচ নৌমান জেনেশুনে চিঠিতে লিখেছেন, সিরাজ ঝাকসুর দলে কেবল কাপে অভিনয় করেছেন। যদিও তিনি প্রথম চিঠিতে লিখেছেন, সিরাজ কোন দিন ঝাঁকসুর দলে ছিলেন না। সিরাজ পার্শ্ব অভিনেতা হিসাবে ঝাকসুর দলে কেবল কাপে অভিনয় করেছেনএমন কথা খালেদের নিবন্ধে, বা অন্য কোনও লেখায় নেই। তবে তিনি নতুন করে ওই ‘তথ্য’ কোথায় পেলেন? পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্র’ থেকে ২০০০ সালে প্রকাশিত হয় লোকসংস্কৃতি গবেষক শক্তিনাথ ঝায়ের গ্রন্থ ‘ঝাকসু’। ওই গ্রন্থের ৪২ পাতায় লেখা রয়েছে, “সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ এবং সাগরদিঘির সুধীর দাস ঝাকসুর বাড়িতে থাকতেন।” অথচ ঝাকসুর বাড়িতে সিরাজের থাকার কথা কোনও যুক্তি তথ্য ছাড়াই খালেদ উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। সিরাজের দলের কাছে ঝাকসুর দলের হেরে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ঝাকসুর দলে সিরাজের থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আলকাপ, কবিগান ইত্যাদির পাল্লাপাল্লিতে হারজিত সাময়িক এবং সেটা আসরেই সীমাবদ্ধ। ওই জয়ী সিরাজ যে হেরো ঝাকসুর বাড়িতে থাকতে পারেন না এমন তথ্য-প্রমাণ নেই। আবার ওস্তাদ ঝাকসু যে প্রতি পাল্লায় হেরে ভূত হয়ে পিছিয়ে গিয়েছেন সেখানে সিরাজের থাকা অসম্ভবএমন তথ্য-প্রমাণও নেই। খালেদ নৌমান তাঁর ‘মুর্শিদাবাদের লোকসংস্কৃতি ঃ আলকাপ’ নিবন্ধের ২১৫ পাতায় লিখেছেন, “আলকাপের ফর্ম, বা আঙ্গিক এবং নাট্যরীতি অক্ষুণ্ণ রেখেই ঝাকসু প্রমুখেরা আলকাপকে আধুনিক, রুচিসম্মত ও কিছুটা উন্নত পর্যায়ে উন্নীত করার পক্ষপাতী ছিলেন।.... কিন্তু রীতি ও আঙ্গিকের পরিবর্তন ঘটিয়ে ‘পঞ্চরস’ অভিধায় মেকী ও কৃত্রিম করে তোলার প্রতি তাদের পক্ষপাত আদৌ ছিল না।” ‘বৈশাখী’ পত্রিকায় তাঁরই লেখা ‘মুর্শিদাবাদের লোকনাট্য ঃ আলকাপ’ নিবন্ধের ৭৫ পাতায় আছে, “তবু যুগের তাগিদে লোকসংস্কৃতির গতিপ্রকৃতির পালাবদল ঘটবেই। এবং তা একটা স্বাভাবিক ও অবশ্যম্ভাবী ঘটনা।” আমার প্রশ্ন ছিল, মহিলা শিল্পী প্রবেশ করলে পঞ্চরস হয়ে যাবে নাকি? তার উত্তর কিন্তু পাইনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.