ভগবানপুরে হয়নি সাবস্টেশন
জমি-জটে থমকে বিদ্যুদয়নের কাজ
ন্দীগ্রাম-সিঙ্গুর কাণ্ডের পরে এই রাজ্যে জমিই সবচেয়ে স্পর্শকাতর বিষয়। নিজের জমি সরকারি কাজের জন্যও ছেড়ে দিতে রাজি নয় কেউ। কেউ অস্বাভাবিক দর হাঁকছেন তো কেউ একচিলতে জমির জন্য সরকারি চাকরির দাবি করছেন। জমি নিয়ে এই ডামাডোলেই থমকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিদ্যুদয়নের কাজ। পটাশপুর, নন্দকুমারে বিদ্যুতের দু’টি সাবস্টেশন তৈরির কাজ আটকে আছে জমি-জটে। ভগবানপুরের বাজকুলেও বিদ্যুতের একটি সাবস্টেশন তৈরির কাজ তিন বছর ধরে আটকে থাকায় বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা পিছিয়ে রয়েছে। ক্ষুদ্র স্বার্থে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বৃহৎ জনস্বার্থ।
ভগবানপুর-১ ব্লকের বাজকুলে দিঘা-মেচেদা সড়কের ধারে পূর্ত দফতরের প্রায় ৬৮ একর জমি রয়েছে। ওই জমির ২৫ একরে আইটিআই কলেজ, ৫ একর জায়গায় সুপার মার্কেট তৈরি-সহ নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয় কয়েক বছর আগে। এরই মধ্যে ৫ একরেরও বেশি জায়গায় ১৩২/৩৩ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সাবস্টেশন তৈরিতে উদ্যোগী হয় রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর। কিন্তু ওই সাবস্টেশন থেকে বিদ্যুৎবাহী তার যে জমির উপর দিয়ে যাবে, তার মালিকেরা আপত্তি তোলে। ফলে প্রকল্পটির কাজ আর এগোয়নি। অথচ, প্রায় ৩০ কোটি টাকার ওই প্রকল্প রূপায়িত হলে ভগবানপুর ১-২, পটাশপুর ১-২, খেজুরি ১-২, নন্দীগ্রাম ১-২ ও চণ্ডীপুর ব্লক এবং কাঁথির কিছু এলাকায় লোডশেডিংয়ের সমস্যা অনেকটাই মিটত বলে বিদ্যু দফতরের কর্তাদের দাবি। জেলা বিদ্যুৎ দফতরের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার (ডিস্ট্রিবিউশন) আশিসনারায়ণ ভট্টাচার্য বলেন, “সাবস্টেশন তৈরির জন্য পূর্ত দফতরের কাছ থেকে জমি পাওয়া গেলেও সাবস্টেশন থেকে বিদ্যুৎবাহী তার নিয়ে যাওয়ার করিডরের জায়গা পেতে অসুবিধা হচ্ছে। ফলে ওই প্রকল্পের কাজ আর এগোয়নি। এলাকার বিদ্যুৎ পরিষেবার সমস্যাগুলিও তাই আর মেটানো যায়নি।”
স্রেফ জমি জটে ওই এলাকায় বিদ্যুদয়নের কাজ থমকে গিয়েছে স্বীকার করে তৃণমূল পরিচালিত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ স্বপন রায় বলেন, “পূর্ত দফতরের জমি চিহ্নিত করার পর বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জমির সংস্থান করতে গিয়ে ওই সমস্যা সামনে আসে। পূর্ত দফতরের জমি লাগোয়া ওই জমিতে চারটি বাড়ি রয়েছে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাঁদের অন্যত্র বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেকবার বোঝানোর পরেও তাঁরা কিছুতেই সম্মত হননি। বিকল্প হিসেবে কাছাকাছি এলাকায় জমি খোঁজা হচ্ছে।”
স্থানীয় গড়বাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান স্বপন দাস জানান, বিকল্প হিসেবে কাছেই কিসমত বাজকুল মৌজায় প্রায় ২ একর জমি পাওয়া গিয়েছে। দিন পনেরো আগে ওই জমির ১১ জন মালিক পঞ্চায়েত অফিসে এসে মৌখিক সম্মতি জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা জমির ক্ষতিপূরণ হিসেবে টাকা ছাড়াও চাকরি চেয়েছেন। ফলে জমি আদৌ মিলবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই যাচ্ছে। স্বপনবাবু বলেন, “পাশেই বাজকুল-নন্দীগ্রাম রেল প্রকল্পে জমিদাতা পরিবার পিছু এক জনকে রেল দফতর চাকরি দিয়েছে। তাই এখন এরাও বিদ্যুতের সাবস্টেশনের জন্য জমির বদলে চাকরি চাইছেন। বিষয়টি জেলা পরিষদ ও বিদ্যুৎ দফতরকে জানিয়েছি।” বিদ্যুৎ দফতর বিকল্প জমি খুঁজে দেওয়ার জন্য জেলা পরিষদে লিখিত আবেদনও জানিয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি গান্ধী হাজরা সমস্যার কথা মেনে নিয়ে বলেন, “প্রস্তাবিত সাবস্টেশন লাগোয়া জমি পাওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল। আমরা এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.