কালীপুজোর সময়ে অপরাধমূলক কাজকর্ম রুখতে জেলার গ্রামীণ এলাকাগুলিতে নানা উদ্যোগের কথা জানাল পুলিশ। নিষিদ্ধ শব্দবাজি ও বেআইনি মদ উদ্ধারে অভিযানের পাশাপাশি ইভটিজিং ও বেপরোয়া মোটরবাইক রুখতে সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েন রাখা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা। এ সবের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকায় জুয়া রুখতে নজরদারির সিদ্ধান্তও হয়েছে।
পুলিশ সুপার জানান, গত বার জেলার গ্রামীণ এলাকাগুলিতে কালীপুজো হয়েছিল শান্তিপূর্ণ ভাবেই। তবে বিসর্জনের দিন কালনায় এক মহিলাকে লক্ষ করে পটকা ছোড়াকে কেন্দ্র করে দু’টি ক্লাবের মধ্যে গোলমাল বেধেছিল। পুলিশ সুপার বলেন, “এ বার আমরা কোনও ঝুঁকি নিতে চাই না। বর্ধমান, কালনা, কাটোয়া, মেমারি ও কাঁকসায় প্রচুর সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েন রাখা হচ্ছে। ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটলেই সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা ব্যবস্থা নিতে পারবেন।” |
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বড় ধরনের ঘটনা না ঘটলেও, পুজোর দিনগুলিতে রাস্তায় কমবেশি ইভটিজিংয়ের ঘটনা প্রায় সর্বত্রই ঘটে। দুর্গাপুজোর মুখে ইভটিজিং রুখতে উদ্যোগী হয়েছিল জেলা পুলিশ। পুলিশ সুপার জানান, দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে পুলিশের একটি দল রাস্তায় অভিযান চালায়। বেপরোয়া ভাবে মোটরবাইক নিয়ে ঘোরাফেরা করা যুবকদের আটকানো ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য। এ ছাড়া একই বাইকে তিন জন, হেলমেট না থাকা সওয়ারি, ট্রাফিক সিগন্যাল না মানা আরোহীদের আটকে জরিমানা করে পুলিশ। পুলিশ সুপার জানান, শুধু পুজোর দিনগুলিতে চার হাজারের বেশি মোটরবাইক আরোহীকে জরিমান করে প্রায় ৪৬০০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। গোটা অক্টোবর জুড়েই এই অভিযান চলেছিল। তাতে সব মিলিয়ে জরিমান আদায় হয়েছে প্রায় ৭ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা। এই অভিযানের ফলে শহরে ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি পুলিশ সুপারের। |
পুলিশ জানায়, দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে গোলমাল রুখতে জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামীণ এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছিল। তাতে উদ্ধার হয়েছিল প্রায় ৫ কুইন্ট্যাল নিষিদ্ধ শব্দবাজি, ৩০টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২১৯টি বোমা। জুয়ার খেলার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল ১৫ জনকে। প্রায় ২০ হাজার লিটার মদ ও মদ তৈরির সরঞ্জামও ধরা হয়েছিল। কালীপুজোর আগেও ফের এমন অভিযানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে থানাগুলিকে। দাগী অপরাধীদের উপরে নজরদারির নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সুপার জানান, ১৩ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত এলাকায় যাতে কোনও ভাবেই জুয়া খেলা না হয়, সে ব্যাপারে নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে থানাগুলিকে। পুলিশ সুপারের কথায়, “জুয়ায় হারজিতকে কেন্দ্র করে বহু গোলমালের সূচনা হয়। তাই এই জুয়ার বোর্ড বসতে না দিলেই অনেক সমস্যা মিটবে।” পুলিশ সুপার আরও জানান, ইতিমধ্যে জেলার কয়েকটি এলাকায় চেকপোস্ট বসানোর উদ্যোগ হয়েছে। কেউ শব্দবাজি নিয়ে বর্ধমানে ঢুকছে কি না, তা জানতে চেকপোস্টগুলিতে বিভিন্ন বাস, ট্রাক, গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি হবে। নিয়মিত অভিযান চালিয়ে এলাকায় মজুত বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের নির্দেশও থানাগুলিকে দেওয়া হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার। |