উত্তরের সাহিত্যের আকাশে চিকরাশি
লেখা ও ছবি নিলয় দাস।
উত্তরের সাহিত্যের আকাশটার ব্যাপ্তি তো বিশাল, উত্তরের ছয় জেলার নানা প্রান্তে অসংখ্য লেখক, কবি, সৃজনশিল্পী নিমগ্ন রয়েছেন তাঁদের সৃষ্টিতে। তাঁদের সৃজন নিয়ে গবেষণা হয় না বলে মত অনেকের। যোগ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত থেকে অনেকে নীরবে হারিয়ে যান। এই কষ্ট ভীষণ ভাবে নাড়া দেয় উত্তরের কবি অমিত কুমার দে-কে। তাই উত্তরের লেখক সৃজন শিল্পীদের নিয়ে মৌলিক কাজ করার তাগিদে অমিত বাবু জন্ম দেন সাহিত্যপত্র চিকরাশি-র। ডুয়ার্সের বনাঞ্চলের একটি গাছের নামে পত্রিকাটির নাম। ২০১০-এর একুশে ফেব্রুয়ারি প্রথম সংখ্যার সম্পাদকীয় অমিত বাবু লেখেন, বহুদিন থেকে চেতন-অবচেতন ভাবনাটা ঘুরপাক খাচ্ছিল। এমন একটি কাগজ করব যার প্রতিটি অক্ষর থেকে উঠে আসবে আমাদের ডুয়ার্স, আমাদের উত্তরের পরিচিত-অপরিচিত গন্ধ। বর্ণমালায় মেশা থাকবে উত্তরের অনাবিল সারল্য। শব্দ বাক্যে আঁকা থাকবে এই জনপদের জীবনযাপন, নিসর্গ, লোকাচার মানুষের সাফল্য বা বিফলতার ছবি। একটি কাগজ যার নিঃশ্বাসে ও বিশ্বাসে ভালবাসা থাকবে, বৌদ্ধিক দেমাকের বদলে নির্ভেজাল মনন থাকবে। যার পৃষ্ট থেকে উঠে আসবে দোতারার আওয়াজ,পাহাড়ি নদীর কলস্বর, গাছগাছালি পাখপাখালির বৃত্তান্ত,চা বাগিচার কথা, মৃত্তিকার্ষনের অনুভূতি। বছরে দু’বার ধূপগুড়ি থেকে প্রকাশ পাচ্ছে চিকরাশি। ইতিমধ্যে শুধু উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণ বঙ্গের সাহিত্যের বড় পরিধিতে সাড়া ফেলেছে এই পত্রিকাটি। বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু-কিছু লেখা এ দিক-সে দিক বেরোলেও এমন ভাবে নিয়মিত গুছিয়ে কাজ করা একটি দৃষ্টান্ত। চিকরাশির প্রথম সংখ্যায় দুই কৃতী কথাকারের উপর বিস্তারিত কাজ হয়েছে; এঁরা হলেন জ্যোৎস্নেন্দু চক্রবর্তী ও জীবন সরকার। দ্বিতীয় সংখ্যায় কবি সন চট্টোপাধ্যায় ও কবি বিকাশ সরকারের উপর চর্চ্চা করা হয়েছে। তৃতীয় সংখ্যায় আলোচিত হন কিংবদন্তি সম্পাদক অজিতেশ ভট্টাচার্য, কবি ও পরিবেশবিদ জগন্নাথ বিশ্বাস ও কথাকার হরেন ঘোষ। চতুর্থ সংখ্যায় যাদের সৃষ্টি নিয়ে আলোচনা করেছে তারা হলেন, কবি অরুণেশ ঘোষ, কবি বেণু দত্তরায় ও কবি তুষার বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চম সংখ্যায় আলোচিত হয়েছেন উত্তরের বর্ষীয়ান কথা শিল্পী চোমং লামা (বিমল ঘোষ) এবং কথাকার অরুণ নিয়োগী। ষষ্ঠ সংখ্যায় ভ্রমণ লেখক গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য, নাট্টকার সমর চৌধুরী ও লেখক অর্ণব সেন-কে নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এই ভাবে উত্তরের লেখকদের নিয়ে গবেষণার কাজ তেমন ভাবে হয়নি বলে অমিত বাবুর দাবি। সম্পাদক জানান, চিকরাশি ক্রমান্বয়ে উত্তরের সফল লেখকদের নিয়ে কাজ করবে। লেখকদের পাশাপাশি উত্তরের মুখ পর্বে কাজ হয়েছে ডুয়ার্সের বিঞ্জান ফেরিওয়ালা ডা. পার্থপ্রতিম, পঁচিশ বছর ধরে হাতে-লেখা পত্রিকা বৈঠার সম্পাদক আমিনুর রহমান,কালাচাঁদ দরবেশ, ডুয়ার্সের বিস্মৃত ইঞ্জিনিয়ার কিং সাহেব ও সর্পবিশারদ মিন্টু চৌধুরীকে নিয়ে। শুধু পত্রিকা প্রকাশ নয়, ফি বছর উত্তরের কৃতীজনদের সংবর্ধনার উদ্যোগ নিয়েছে চিকরাশি। অমিত কুমার দে-র এই উদ্যোগের সঙ্গে আন্তরিক ভাবে তার পাশে রয়েছেন সুব্রত বসু, নীপা ঘোষ, সাগরিকা দত্ত, মৌসুমী সাহা, মালবিকা চাকী, পাপিয়া ঘোষ তলাপাত্র, সমীর দাস, নিতাই হার, বিভাস চৌধুরী, রঞ্জন চক্রবর্তী, মলয় সরকার, দীপেশ সরকার প্রমূখ। অমিতবাবু জানালেন, চিকরাশি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই আর একটি বড় কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গের সমস্ত লেখকদের বই নিয়ে একটি সংগ্রহাশালার কাজ শুরু হয়েছে। চলছে গ্রন্থ সংগ্রহের কাজ। যাতে এই সংগ্রহশালায় উত্তরের সাহিত্য নিয়ে যারা গবেষণা করবেন তাঁরা উপকৃত হন।

কালিম্পংয়ের ক্যাথলিক চার্চ
লেখা ও ছবি অনিতা দত্ত
কালিম্পংয়ের পর্যটন তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে শতাব্দী প্রাচীন ক্যাথলিক চার্চ। স্থানীয় রোমান ক্যাথলিক ধর্মবিশ্বাসীদের জন্য স্কটিশ মিশনারীরা ১৮৯০ সালে এটি তৈরি করেন। পরের বছর নভেম্বর মাসে এটি জনসাধারণের উদ্দেশে খুলে দেওয়া হয়। এই চার্চ ভবনের নকশা তৈরি করেছিলেন এডিনবার্গের মি. হার্ডি। স্কটিশ মিশনারী রেভারেন্ড উইলিয়াম ম্যাকফারলেন-এর নামে এই চার্চের নামকরন করা হয় ম্যাকফারলেন চার্চ। এলাকার সর্ববৃহৎ ও প্রচীনতম এই চার্চ দেখতে দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা ভিড় জমান। ভিতরে রয়েছে সুদৃশ্য কাঠের কাজ। চার্চের শীর্ষে পিরামিড আকৃতির গড়ন দেখে বোঝা যায় এটি স্কটিশ চার্চ স্থাপত্য শিল্পের একটি নিদর্শন।

হারিয়েছে বকুলের মালা
‘চাই মালা, বকুল ফুলের মালা, মালা নিবেন বাবু...’। আজ আর মালা বিক্রেতারা সুর করে হাঁক দেয় না। উত্তরের আঙিনায় দু’একটা বকুলগাছ দেখা গেলেও হারিয়েই গেছে বকুল ফুলের মালা বিক্রেতারা। কিশোরীরাও এই মালা বিক্রির কাজে জড়িত ছিল। পেশায় পরিবর্তন এসেছে। সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বাজারে এসে গেছে বিভিন্ন সুগন্ধি। তাই আজ দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে বকুলের নির্যাস নিচ্ছে শিশি-প্যাকে। একটা সময় ছিল সকাল হতেই বকুলের মালা হাতে কিশোরীরা ছুটতো অলিতে-গলিতে। সৌখিন ফুলপ্রিয় মানুষ কিনত সেই মালা। এ দৃশ্য আজ আর চোখেই পড়ে না! বন কেটে বসত করতে করতে সমাজ থেকে অনেক গাছ হারিয়েই যাচ্ছে। এদের মাঝে বকুল ফুলের গাছও রয়েছে। দিনহাটার দু’একটা স্থানে বকুলগাছের দেখা মিললেও দেখা মেলে না ফুলমালা বালিকার।
লেখা শুভাশিস দাস।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.