সম্পাদক সমীপেষু ...
ধৈর্য হারালে কিন্তু চলবে না
কৌশিক সেন (‘কে জানে স্বদল কিনা প্রকৃত স্বজন’, ১৬-১০)বেশ কিছু দিন যাবৎ নাট্যশিল্পীদের নিজস্ব ‘স্পেস’ রাখার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু এক জন গুণী নাট্যশিল্পীর রাজনৈতিক টান দেখে তাঁর বিচার হয়, সভা ও টক শো হয়। তাই বিমল চক্রবর্তীর উপর আক্রমণের ঘটনাকে নিন্দা করার জন্য কৌশিকের উপর বর্ষিত হল অভাবনীয় গালমন্দ। এক চ্যানেলে তাঁর বন্ধুরা করলেন। ধরা যাক, বিভাস চক্রবর্তীর উপর কটূক্তির কথা। তাঁর এত দিনের নাট্যশ্রমের জায়গায় রাজনৈতিক মতই প্রাধান্য পেয়ে গেল।
এই অবাঞ্ছিত দলাদলির সময় কৌশিককে ধৈর্য হারালে চলবে না। একমনে চেষ্টা চালালে একদিন অনেক মানুষ তাঁর পাশে দাঁড়াবে। অনেক মানুষ যেমন না-বুঝে অপমান করে ত্রাতাকে। আজ শিল্পীরাও তাই করছেন। অল্পের জন্য বড় বেসামাল এঁরা। চেখভের ‘থ্রি সিস্টার্স’-এর ছোট বোন বলছে না? ‘অনেকটা সময় দেখলাম, মনে হচ্ছে ধৈর্যই সংগ্রাম।’ আমরা দেখছি আজ আবার এসেছে দর্শনের দারিদ্র। সাফল্য শিল্পীকে বেসামাল করে দিচ্ছে। অন্ধকার জগতের অপরাধপ্রবণতার প্রভাব পড়ছে তাঁর দেহভঙ্গিমায়, কথায়। বিমল অসামান্য অভিনয় করেছেন ‘রাজা লিয়র’-এ। তিনি মাসে দু’হাজার টাকা পান বলে আরেক শিল্পী খোঁটা দিচ্ছেন। ‘দালাল’ বলা হচ্ছে তাঁকে যিনি দুই প্রবল দলের চাপে নতিস্বীকার করতে চাইছেন না। সময়টা শ্রদ্ধা-সম্মানের প্রতিকূল। খ্যাতি আর অনুদানের লালসায় অনেক শিল্পী ঋজুতা হারিয়ে ফেলছেন। বি বি সি-তে দেখানো হল, উগো চাভেস জেতার পর ভেনেজুয়েলায় এই রকম কাদা ছোড়াছুড়ি চলছে। এক সাংবাদিক বললেন, ‘এই বিভাজনের সময় নিরপেক্ষ মত ধরে থাকা খুব কঠিন।’
সুভো ঠাকুর
বাঙালি সত্যই আত্মবিস্মৃত জাতি। সৃষ্টির বিচিত্র শাখাপ্রশাখায় বেশ কয়েক জন গুণী মানুষের জন্মশতবর্ষ চলছে বা অতিক্রম করে গেছে। এঁদের অনেকেরই নাম এবং অবদান আজ বিস্মৃতপ্রায়। এই রকমই এক জন সুভো ঠাকুর। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির এই উজ্জ্বল রত্নের পোশাকি নাম সুভগেন্দ্রনাথ ঠাকুর। জন্ম ১৯১২, মৃত্যু ১৯৮৫।
সুভো ঠাকুর শৈশব থেকেই জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির নির্ধারিত শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে ‘কালাপাহাড়’ নামে চিহ্নিত হয়েছিলেন। ঠাকুরবাড়ির বাইরেও চলতি স্বাভাবিকতার ছন্দে তিনি কখনও পা মেলাননি। বেশভূষা, আদবকায়দা, ছবি আঁকা, সাহিত্য রচনা, প্রতি ক্ষেত্রেই ফুটে উঠেছে প্রথা-ভাঙা ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য। অলংকরণ মোটিফ, নকশা ও জ্যামিতিকতাকে মিলিয়ে মিশিয়ে তিনি চিত্রকলায় অভিনবত্ব এনেছিলেন। লেখায় প্রবর্তন করেছিলেন এক নতুন গদ্যরীতি ও কবিতায় ছন্দের। ঠাকুরবাড়ির আভিজাত্যকে ঝেড়ে ফেলে ‘নীল রক্ত লাল হয়ে গেছে’ গ্রন্থটি লিখে সাহিত্য মহলে আলোড়ন তুলেছিলেন। আরও কয়েকটি গ্রন্থের মধ্যে শেষ জীবনে ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল নিয়ে ‘বিস্মৃতিচারণা’ও বিতর্কের ঝড় তুলেছিল। কয়েকটি পত্রপত্রিকা প্রকাশনাতেও যুক্ত ছিলেন। শিল্প সংস্কৃতি বিষয়ক পত্রিকা ‘সুন্দরম’ উল্লেখযোগ্য তাঁর সম্পাদনার গুণে।
সংগঠক হিসাবেও মানুষটির কিছু অবদান আছে। ‘বেঙ্গল স্কুল’-এর শিল্পচিন্তা থেকে দূরে সরে এসে প্রদোষ দাশগুপ্ত, গোপাল ঘোষ, পরিতোষ সেন, কমলা দাশগুপ্ত প্রমুখ কয়েক জন তরুণ শিল্পী ১৯৪৩ সালে গঠন করেছিলেন ‘ক্যালকাটা গ্রুপ’। এই গ্রুপের সংস্থাপক সভ্যদের অন্যতম হলেন সুভো ঠাকুর। কারুশিল্পে আকৃষ্ট হয়ে কিছু শিল্পবস্তু সংগ্রহ করেছিলেন এবং অনাদরে অবহেলিত এই শিল্পের উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করেছিলেন। সংগ্রহের নেশা ছিল। ছবি, মূর্তি, পট, পাটা থেকে পুরনো আসবাব, ঝাড় লণ্ঠন, এমনকী দোয়াতকলম, সিগারেট চুরুটের পাইপ, পুরনো মানচিত্র এমন অদ্ভুত সব সংগ্রহে সমৃদ্ধ ছিল তাঁর বাসস্থান। ধর্মতলায় ‘কটেজ ইন্ডাস্ট্রি’র বাড়ির ফ্ল্যাটে এবং এক সময়ে রাসেল স্ট্রিটের বাসস্থানে প্রায়ই যেতাম নিত্যনতুন আসা সংগ্রহ দেখতে। প্রতিবেশী ছিলেন তাঁর বিশেষ বন্ধু,আর এক শিল্পকলা সংগ্রাহক নীহার চক্রবর্তী। ব্যক্তিগত সংগ্রহ নিয়ে একটি সংগ্রহশালা তৈরির স্বপ্ন তাঁর অতৃপ্তই থেকে গেছে।
অবিলম্বে রাস্তা সারানো দরকার
বেলুড় স্টেশন থেকে যে রাস্তাটা বেলুড় বাজার হয়ে জি টি রোডে গিয়ে মিশেছে তার অবস্থা খুবই খারাপ। এই রাস্তা দিয়ে অনেক মানুষ বেলুড় মঠ দর্শনে যান। রিকশা চালক ও যাত্রী উভয়ের খুবই কষ্ট হয়। দীর্ঘ দিন ধরে রাস্তাটির এই অবস্থা। স্বামী বিবেকানন্দ এই রাস্তায় প্রায়ই হাঁটতেন। তাঁর মৃত্যুর দিনেও প্রেমানন্দ স্বামীকে নিয়ে এই রাস্তায় হেঁটেছিলেন। সামনের বছর স্বামীজির জন্মের দেড়শো বছর বেলুড় মঠে পালিত হবে। বহু মানুষ সেই সময় মঠে আসবেন। রাস্তাটিকে ভাল ভাবে গড়ে তোলা হোক।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.