|
|
|
|
বিপদের বার্তা দিচ্ছে বঙ্গোপসাগরের নীলম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ঝড়ের সঙ্কেত এল বঙ্গোপসাগরেও।
সোমবার সকালে শ্রীলঙ্কা উপকূল লাগোয়া বঙ্গোপসাগরের বায়ুপ্রবাহ ইঙ্গিত দিয়েছিল, সেখানে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে চলেছে। এক রাতের মধ্যে সেই বায়ুপ্রবাহ চলে এসেছে তামিলনাড়ু উপকূলের দিকে, মঙ্গলবার সকালে যা পরিণত হয়েছে পুরোদস্তুর একটি ঘূর্ণিঝড়ে। তার নাম রাখা হয়েছে নীলম। আটলান্টিকের ‘স্যান্ডি’ সাইক্লোনের মতো অত দুর্দান্ত না-হলেও নীলমের ধাক্কায় বিপদের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। পরিস্থিতি সাপেক্ষে ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গেও তার প্রভাব পড়তে পারে বলে আবহবিদেরা জানিয়েছেন।
উপগ্রহ-চিত্র বলছে, এ দিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ নীলমের অবস্থান ছিল চেন্নাই উপকূলের ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে বঙ্গোপসাগরের উপরে। সে স্থলভূমির দিকে সরছে খুব আস্তে আস্তে, গত বারো ঘণ্টায় পেরিয়েছে সাকুল্যে ৫০ কিলোমিটার পথ! এ হেন ধীর গতির দরুণ তার শক্তি ক্রমশ বাড়ছে। আহবিদদের ধারণা, আজ, বুধবার দুপুর নাগাদ নীলম তমিলনাড়ু-অন্ধ্রের মাঝামাঝি দিয়ে স্থলভূমিতে ঢুকবে, এবং তখন তা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিতে পারে। সেই মতো তামিলনাড়ু ও অন্ধ্র সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে মৌসম ভবন।
উপকূলের ৫০০ কিমির দূরে থাকলে কী হবে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ইতিমধ্যে তামিলনাড়ুর বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি নেমেছে। বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে চেন্নাই। উপকূলবর্তী এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এর প্রত্যক্ষ প্রভাব কি পশ্চিমবঙ্গে পড়বে? |
বিস্তারিত জানতে... |
সে বিষয়ে আবহবিদেরা এখনই পূর্বাভাস দিতে নারাজ। ওঁদের কেউ কেউ বলছেন, স্বাভাবিক নিয়মে কোনও ঘূর্ণিঝড় তামিলনাড়ু-অন্ধ্র উপকূল দিয়ে স্থলভূমিতে ঢুকলে তার অভিমুখ ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গের দিকে থাকে না। তা মহারাষ্ট্রের দিকে চলে যায়। কিন্তু নীলমের আশপাশের বায়ুপ্রবাহের ভাবগতিক একটু আলাদা ঠেকছে বলে আবহবিদেরা পশ্চিমবঙ্গকে এখনই বিপন্মুক্ত ঘোষণা করতে রাজি নন। আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথের কথায়, “ঘূর্ণিঝড়টি ভূখণ্ডে ঢোকার পরে তার স্বাভাবিক গতিপথ বদলে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।” আদতে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, ঝড় আজ স্থলভূমিতে ঢুকে পড়ার পরেই তার আঁচ মিলবে বলে জানিয়েছেন গোকুলবাবু। আলিপুর সেই অনুযায়ী পূর্বাভাস দেবে। তবে আবহবিদেরা জানিয়েছেন, প্রত্যক্ষ না-হলেও নীলমের পরোক্ষ প্রভাব আগামী দু’দিনের মধ্যে রাজ্যবাসী টের পেতে পারেন। কী ভাবে?
আবহবিদদের ব্যাখ্যা: ভূখণ্ডে ঢুকে পড়া ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগর থেকে স্থলভূমিতে বেশি পরিমাণে জলীয় বাষ্প টেনে আনবে। তার রেশ এসে পড়বে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলেও। আর তাতে উত্তর ভারত থেকে আসা উত্তুরে হাওয়া বাধাপ্রাপ্ত হবে।
অর্থাৎ গত দু’-তিন ধরে বঙ্গবাসী যে হাল্কা ‘শীতের আমেজ’ উপভোগ করছেন, ঘূর্ণিঝড়ের ধাক্কায় তার অনেকটাই উবে যেতে পারে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা। |
|
|
|
|
|