ভরদুপুরে খাস কলকাতা পুরসভার এক দফতরে ঢুকে পড়ল জনা পঁচিশ-তিরিশ অপরিচিত ব্যক্তি। শুধু ঢুকলই না, গাড়ির পার্কিং-ফি আদায়ের বরাতের টেন্ডার বাক্সের তালা ভেঙে নিয়ে গেল জমা পড়া টেন্ডারের কাগজপত্র। পুরোটাই ঘটল পুরসভার বিজ্ঞাপন ও গাড়ি পার্কিং বিভাগে, ঘরভর্তি কর্মীর চোখের সামনে। পুরসভার ইতিহাসে যা প্রথম বলে দাবি করেছেন খোদ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দুপুর দু’টোর এই ঘটনা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে পুরসভার নিরাপত্তার বেহাল দশা। যা দিনেদুপুরে এমন কাণ্ড ঘটানোর দুঃসাহস জোগায় ওই দুষ্কৃতীদের। এর পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে পুর-দফতরে টেন্ডার চক্রের সক্রিয়তা নিয়ে।
মেয়র জানান, এমন ঘটনার জন্য কেউই প্রস্তুত ছিলেন না। কর্মচারীদের মাঝখানেই বাক্সটি রাখা ছিল বলে সেটি রক্ষার জন্য আলাদা করে কোনও ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি। আর সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে দুষ্কৃতীরা বিজ্ঞাপন বিভাগে ঢুকে টেন্ডার বাক্স ভাঙচুর করে লুঠপাট চালায়। কলকাতা পুরসভার তরফে এ দিনের ঘটনার পুলিশি তদন্ত চেয়ে নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পুরসভার বিজ্ঞাপন বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতা পুলিশের নির্দেশিত শহরের কুড়িটি জায়গায় নতুন পার্কিং লট তৈরি করা হবে। সেই জায়গাগুলিতে পার্কিং-ফি আদায়ের বরাত দেওয়ার জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। এ দিন ছিল সেই টেন্ডার জমা দেওয়ার শেষ দিন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুষ্কৃতীরা টেন্ডার জমা দেওয়ার ভান করে টেন্ডার বাক্সের কাছে চলে আসে। তার পর হঠাৎই চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে দেয়। তারা টেন্ডার বাক্সের তালা ভাঙার চেষ্টা করলে কর্তব্যরত পুরকর্মীরা তাদের বাধা দেন। দু’পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিও হয়। পুরসভার কর্মীদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। তার পরেই টেন্ডার বাক্স ভেঙে কাগজপত্র লুঠ করা হয় বলে অভিযোগ পুর-কর্তৃপক্ষের। ওই টেন্ডার জমা দেওয়ার দিন আরও বাড়িয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র।
গাড়ি পার্কিং বিভাগের আধিকারিকদের ধারণা, ঘটনার পিছনে পার্কিং-ফি আদায়কারী সংস্থার লোকজনই জড়িত। তাদের নিজেদের মধ্যে টেন্ডার নেওয়া নিয়ে গোলমালের জেরেই এমন ঘটেছে বলে মনে করছেন ওই আধিকারিকেরা। |