|
|
|
|
পর্যটকদের কাছে ক্রমশ বাড়ছে ত্রিপুরার আকর্ষণ |
আশিস বসু • আগরতলা |
পর্যটকদের কাছে ক্রমশই ত্রিপুরার আকর্ষণ বাড়ছে। বিশেষ করে বিদেশি পর্যটকদের কাছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের পর্যটন পরিকাঠামোর খোলনলচে বদলাতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য পর্যটন দফতর। গত তিন-চার বছর ধরেই পর্যটকদের সুবিধার্থে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন পরিকল্পনা। লক্ষ লক্ষ পর্যটক প্রতি বছর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছোট্ট এই পার্বত্য রাজ্যে এখন আসছেন। পরিসংখ্যানও বলছে, গত চার-পাঁচ বছর ধরেই বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যাও বাড়ছে রাজ্যে।
কিন্তু কেন? ত্রিপুরা পর্যটন দফতরের এক কর্তার কথায়, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি রাজ্যে জঙ্গিদের উপস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় পর্যটকরা হয়তো সেখানে নির্ভয়ে ঘোরাঘুরি করার সাহস পাচ্ছেন না। আসছেন ত্রিপুরায়। ত্রিপুরায় উগ্রপন্থীদের হামলা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে, সেটা বিদেশি পর্যটকরাও খবর রাখেন। ত্রিপুরার মতো রাজ্যে দেশি-বিদেশি ভ্রমণপিপাসুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার এটা অন্যতম কারণ। ২০১০-২০১১ সালে ত্রিপুরায় এসেছিলেন ৩ লক্ষ ৫৯ হাজার পর্যটক। তার মধ্যে বিদেশি পর্যটক ছিলেন ৫২৯০ জন। ২০১১-১২ সালে ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার, এর মধ্যে বিদেশি পর্যটক ছিলেন ৬৫৫০ জন। চলতি আর্থিক বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার বিদেশি পর্যটক এ রাজ্য ঘুরে গিয়েছেন। রাজ্যের পর্যটনে আকৃষ্ট হয়ে এ ভাবে প্রতি বছরই দেশি-বিদেশি ভ্রমণপিপাসুরা ত্রিপুরাকে দেখতে আসছেন। ত্রিপুরা পর্যটন দফতরের অধিকর্তা কে আর চাকমার কথায়, সংখ্যাটা ক্রমশই বাড়ছে। পর্যটক টানতে আরও কিছু আকর্ষণীয় পরিকল্পনা তাঁরা হাতে নিয়েছেন বলে চাকমা জানান।
রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রের দুই আকর্ষণ—নীরমহল এবং রুদ্রসাগর। পর্যটকদের কাছে তাকে আরও আকর্ষণীয় করার উদ্দেশে দফতরের কর্তারা একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছেন। রুদ্রসাগরের পাড়ে নীরমহলের আদলেই তৈরি হতে চলেছে একটি নতুন পর্যটন আবাস। পাশেই তৈরি হবে আধুনিক মল। স্থানীয় শিল্পীদের তৈরি হস্তশিল্প সামগ্রীও পাওয়া যাবে সেখানে। ডম্বুর জলাশয়ের উন্নয়ন ঘটিয়ে সেটিকেও পর্যটন মানচিত্রে আনা যায় কি না, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে সংলগ্ন রাইমা নদীর দু’পাড়ের উন্নয়নও। পাশপাশি, ভারত-পাক সীমান্তের ওয়াঘা বর্ডারে যে ভাবে দু’দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়, প্রহরা পরিবর্তন হয়, সেভাবে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায়, আগরতলা-আখাউড়া সীমান্তেও পর্যটকরা যাতে একই রকম দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন সে জন্য উপযুক্ত গ্যালারি নির্মাণের পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। দফতরের এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানান, এর জন্য পর্যটন দফতর অর্থ দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের ট্যুরিষ্ট গাইড হিসেবে প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নীরমহলের বাৎসরিক পর্যটন উৎসবকে আরও আকর্ষণীয় করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য পর্যটন দফতর। জম্পুই পাহাড়ে পর্যটন দফতরের যে আবাসন রয়েছে সেখানেও লাগছে আধুনিকতার ছোঁয়া। বাড়ছে লজের ঘরের সংখ্যাও। |
|
|
|
|
|