পুরসভার ভূমিকায় প্রশ্ন কংগ্রেস-তৃণমূলেই
অবৈধ নির্মাণ বন্ধে ‘গয়ংগচ্ছ’ মনোভাব
পুজোর ছুটির দিনগুলিতে শিলিগুড়ি শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় অবৈধ নির্মাণ চলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে একটি অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ পেয়ে সেখানে যান পুরসভার বিশেষ দল। এলাকার কাউন্সিলর অমরনাথ সিংহও ঘটনায় বিরক্ত। তিনি জানান, অন্তত ১২ দিন আগে পুরসভাকে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। পুর কর্তৃপক্ষ লোক পাঠালেও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। তাতে অবৈধ নির্মাণের প্রবণতা বন্ধ হয়নি। অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে দেখে তা বন্ধ করতে পুরসভা যে সব ক্ষেত্রে লোক পাঠালেও একশ্রেণির নির্মাতারা যেন বেপরোয়া। যেমন, চানাপট্টি এলাকায় একটি অবৈধ নির্মাণ বন্ধের জন্য বারবার পুরসভার তরফে বলা হয়। তার পরেও কী ভাবে সেখানে অবৈধ ভাবে গুদাম তৈরি করা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দাদের একাংশ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই অবৈধ নির্মাণে পুরসভার একাংশের মদত রয়েছে। ক্ষুব্ধ চানাপট্টির বাসিন্দারা লক্ষ্মীপুজোর পরে পুরসভা ঘেরাওয়ের হুমকিও দিয়েছেন। পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা বলেন, “৫ নম্বর ওয়ার্ডে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ পেয়ে এ দিন পুরসভার বাস্তুকারদের পাঠানো হয়েছে। আগেও সেখানে লোক পাঠিয়ে অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হয়েছিল। চানাপট্টি এলাকায় অবৈধ নির্মাণের ক্ষেত্রেও লোক পাঠানো হয়েছিল। ফের সেখানে লোক পাঠানো হবে।” এই সমস্ত অবৈধ নির্মাণের ক্ষেত্রে পুরসভা কী ব্যবস্থা নিচ্ছে? সীমা দেবী জানান, পুজোর ছুটির পর পুরসভা খুললে এ ব্যাপারে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেবক রোডে মেয়র হোটেলের নির্মাণ কাজ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তা আপাতত স্থগিত রাখতে প্রশাসনের তরফে নির্দেশ দেওয়া হলেও সেখানে কাজ চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেবক রোডের ফুটপাতে পুজোর দিনগুলিতেও মাজেমধ্যে বাড়ির তৈরির সরঞ্জাম, আবর্জনা ডাঁই করে রাখা হয় বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। হোটেলের মালিকপক্ষের অন্যতম কাজল সরকার বলেন, “আদালতে আবেদন করে কাজের অনুমতি মিলেছে।” পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের তরফে সম্প্রতি একটি বেআইনি গ্যাংওয়ে ভেঙে দেওয়া হয়। অথচ চানাপট্টি, সেবক রোডের হোটেলে নানাবিধি অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে পুরসভা ‘দেখছি-দেখব’ বলে এড়িয়ে যেতে চাইছে কেন সেই প্রশ্নেই চলছে নানা জল্পনা। প্রসঙ্গত, কংগ্রেস ও তৃণমূলের কাউন্সিলরদের একাংশের তরফেউ সাম্প্রতিক অতীতে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। খোদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব উভয় দলের কাউন্সিলরদের বৈঠকে একটি বহুতল নির্মাতা সংস্থার কাছে ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ চাওয়ার অভিযোগের প্রসঙ্গে টেনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এতদসত্ত্বেও চানাপট্টি, শেঠ শ্রীলাল মার্কেট, সেবক রোড, বর্ধমান রোডে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন পুরসভা, এই প্রশ্ন তুলেছেন শহরের প্রবণ বাসিন্দারা। কংগ্রেস-তৃণমূলের একাধিক প্রবীণ নেতার আক্ষেপ, “আমরা মনে করেছিলাম বাম জমানায় যে অভিযোগ উঠেছে তার পুনরাবৃত্তি হবে না। এখন দেখছি তার চেয়েও বেশি দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। সেবক রোডের হোটেল নিয়ে কয়েকজন কাউন্সিলর দুদিন সরব হয়েই চুপ করে গেলেন। গ্যাংওয়ে ভাঙা হল আরেক জায়গায়। অথচ সেখানে বেআইনি ভাবে যে টিনের শেড দেওয়া হয়েছে তা ছাড় দেওয়া হল। হাতে গোনা কয়েকজন প্রোমোটার, ধনী ব্যবসায়ী শহরে যা খুশি তা-ই করার সাহস কোথা থেকে পাচ্ছেন? এত লেনদেনের অভিযোগ ওঠা দুঃখজনক।” বছরখানেক ধরে গোটা শহরে বিধি ভেঙে নির্মাণের অভিযোগ বেড়ে গিয়েছে। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের উল্টো দিকে একটি ওষুধের দোকানের নির্মাণ কাজ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মালিকপক্ষের অন্যতম অলক পালের দাবি, “অস্থায়ী কাঠামো তৈরি করাই যেতে পারে। সে কারণে কংক্রিটের ঢালাইয়ের পরিবর্তে লোহার পরিকাঠামো দিয়ে দোকানের কাজ চলছে। রেলের অনুমতি রয়েছে।” রেলের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন এরিয়া ম্যানেজার পার্থ শীল বলেন, “কোনও কাজের অনুমতিই নেওয়া হয়নি। কী ভাবে নির্মাণ চলছে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।” রেলের কার্যনির্বাহী বাস্তুকার কে কে সিংহ জানান, অবৈধ নির্মাণের ক্ষেত্রে তারা অবিলম্বে পুলিশে অভিযোগ জানাবেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.