আজ কোজাগরী
বাজার দর আগুন, পকেটে টান গৃহস্থের
যে পদ্ম দিন কয়েক আগেই বাড়ির পুজোর জন্য ৫ টাকায় কিনেছেন শিলিগুড়ির বাসিন্দারা, লক্ষ্মীপুজোর প্রাক্কালে তার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ থেকে ৪০ টাকা। গাঁদা ফুলের মালার দামও ৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০ টাকা। হলুদ গাঁদা ফুলের মালার দাম আরও বেশি। তা হল ২০ টাকা। অন্য সময় কলাগাছের ডোঙা যা ফেলে দেওয়া হয়, তার ৩ ফুটের দাম এ দিন বিধান মার্কেটে ছিল ১০ টাকা। কলা গাছের ওই ডোঙা দিয়েই লক্ষ্মীপুজোর নৌকো তৈরি হয়। এক দেড় ফুটের বানানো নৌকো কিনতে হচ্ছে ২৫ টাকায়। পুজোর ঘটে দিতে ডাবের কুড়ি বিক্রি হয়েছে ১৫/২০ টাকায়। জলপাইগুড়ি শহরের বাজারে শাক-সব্জি-ফলের দাম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিগুণ বেড়েছে। বিজয়া দশমীর পরের দিন যে লঙ্কা, ফুলকপি ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, লক্ষী পুজোর আগের দিন তার দাম বেড়ে দাড়িয়েছে ৫০/৬০ টাকা।
রবিবার জলপাইগুড়িতে ছবি তুলেছেন সন্দীপ পাল।
জলপাইগুড়ি শহরের বিভিন্ন বাজারে শুক্রবার এবং শনিবারের বাজারদরে দ্বিগুণ ফারাকে বিপাকে পড়েছেন বাসিন্দারা। বেগুন প্রতি কিলোগ্রামের দাম একদিনে ২০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৫ টাকা। ৩০ টাকার নিচে একটি আখ বিক্রি হয়নি স্টেশন বাজারে। শিলিগুড়ির বিভিন্ন বাজারেও শাকসবজির দাম পাল্লা দিয়ে অনেকটাই বেড়েছে। রবিবার সকালে বিধান মার্কেট, ক্ষুদিরামপল্লি, গেট বাজার, সুভাষপল্লি, হায়দরপাড়া মার্কেটের মতো বিভিন্ন বাজারে প্রতি কিলোগ্রাম ফুলকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ২০ টাকা, কাঁচা লঙ্কা ৫০/৬০ টাকা, সিম, মিষ্টি আলু ৬০ টাকা, জলপাই ৩০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গাজর কোথায়ও ৪০ টাকা কোথাও ৫০ টাকা ১ কিলোগ্রামের দাম। পুজোর ফলের মধ্যে পানিফল দাম ৪০ টাকা থেকে ৬০ টাকা কিলোগ্রাম প্রতি। ১ কিলোগ্রাম আপেল ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা, ন্যাসপাতি ৭০ টাকা (ছোট) থেকে ১০০ টাকা (বড়, ভাল, নেপাল থেকে আমদানি করা), পেয়ারা ৪০থেকে ৬০ টাকা, কমলা ৬০ টাকা ডজন, গোটা আখ ১৫ থেকে ৩০ টাকা, গোটা নারকেল ২৫/৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। লক্ষীপুজোর আগে এক শ্রেণির পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেয় জেনেও তা ঠেকাতে প্রশাসন উদ্যোগী নয় বলে অভিযোগ। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “পুজোর সময়ে খুচরো বাজারে প্রশাসনের নজরদারি কিছুটা কম হয়েছিল একথা ঠিক। তবে সামগ্রিক বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে। সবজি বাজারের দাম খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিচ্ছি।” ফল আনাজের দাম বৃদ্ধিতে অবাক জলপাইগুড়ির মহকুমাশাসক সাগর চক্রবর্তী নিজেও। তিনি বলেন, “পুজোর সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি-সহ নানা কথা ভেবে বাজারে অভিযান চালানো যায়নি। লক্ষী পুজোর পরে অফিস খুললেই ফের অভিযান হবে। কালীপুজো-দেওয়ালির সময় বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে।”
শিলিগুড়িতে ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।
শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, লক্ষ্মী পুজোর জন্য ফুল, ফল, সব্জির দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে খুব বেশি দাম বেড়েছে বলে তাঁর কাছে অভিযোগ নেই। তিনি খোঁজ নিচ্ছেন। জলপাইগুড়ি স্টেশন বাজারের খুচরো ব্যবসায়ী তপন মোহান্তের দাবি, পাইকারদের থেকে যে দামে লঙ্কা কেনেন শনিবার তার দ্বিগুন দাম দিতে হয়েছে। তাই দাম বেড়েছে। কৃষি দফতর সূত্রে খবর, স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে শীতের শাক-সবজির যোগান আসছে বাজারে। তবে চাষি থেকে নানা হাত ঘুরে খুচরো বাজারে আসার জন্য দাম কিছুটা চড়েছে। লক্ষ্মী পুজোর জন্য বাসিন্দারা সব্জি-ফল কিনবেনই জেনে এক শ্রেণির মধ্যবর্তী ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়ে মুনাফা করছে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যেখানে খেতে ২০-২৫ টাকা কিলোগ্রাম দরে কৃষকরা শশা বিক্রি করেছেন, খুচরো বাজারে সেই শশার দাম ৫০ টাকা। একই ভাবে পালং শাক বিক্রি হয়েছে প্রতি কিলোগ্রামে ২৫ টাকা বেশি দরে। রবিবার শহরের বয়েলখানা বাজারে দাড়িয়ে শান্তিপাড়ার গৃহবধূ রূপসা নন্দী বলেন, “একেবারে ভোজবাজির মতো। গত কালকেও ফুলকপির দাম করেছি ৩০ টাকা। আজকে ৬৫ টাকার নিচে ভাল ফুলকপি পেলামই না। লঙ্কা, বেগুন দ্বিগুন দামে কিনতে হল। বাজারে কি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নেই।” শিলিগুড়ির পরেশ নগরের বাসিন্দা বাবু কর, সুকান্ত নগরের গৃহবধূ কানন চৌধুরীরা বলেন, “লক্ষ্মী পুজোর বাজারে ফুল, ফল, সব্জির দাম এমনিতেই বাড়ে। প্রশাসন তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে উদ্যোগী হলে ভাল হত।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.