ছ’বছরের এক বালককে অপহরণ করে মুক্তিপণের ৪ লক্ষ টাকা না পেয়ে তাকে ভাগীরথীর জলে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রঘুনাথগঞ্জ থানার কাটাখালিতে।
ওই বালকের নাম আলকারিম শেখ। পুলিশ ওই বালকের জ্যাঠামশায়, জ্যাঠতুতো দাদা ও সেই দাদার এক বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে খোঁজা হচ্ছে লালগোলার জনার্দনপুরের এক যুবক ও এক মহিলাকে খুঁজছে পুলিশ। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ওই শিশুর খোঁজ মেলেনি। ভাগীরথীতে খোঁজ চলছে।”
পুলিশ সুপার জানান, শুক্রবার বেলা ১০টা নাগাদ কাটাখালি গ্রামে বাড়ির সামনে খেলা করছিল ওই বালক। পুলিশ সুপার বলেন, “ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছি, সে সময়ে সাইকেলে করে ওই বালককে তুলে নিয়ে যায় শুকুর শেখ নামে এক যুবক। তার বাড়ি লালগোলার মুরগাওরি গ্রামে। সে ওই বালককে তার জ্যাঠতুতো দাদা ইসমাইল শেখের হাতে তুলে দেয় বলে আমাদের জানিয়েছে। |
তারপরে তারা দু’জনে মিলে আরকারিমের বাবা জাহাঙ্গির হোসেনকে ফোন করে বলে চার লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিলে তবে তিনি তাঁর ছেলেকে ফেরত পাবেন। পেশায় ট্রাক্টর চালক জাহাঙ্গির অত টাকা দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। সেই টাকা না পেয়ে বালকটিকে লালগোলার কদমতলার শ্মশানঘাটে ভাগীরথীর জলে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসমাইল ও সুকুর। তাদের দু’জনকেই আমরা গ্রেফতার করেছি। ইসমাইলের বাবা আব্দুল মান্নানকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, কাটাখালি গ্রামেই ১৫ কাঠা জমি নিয়ে বিবাদ থেকেই এই অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা হয়। তবে জাহাঙ্গির শেখের বক্তব্য অন্যরকম। তিনি দাবি করেছেন, “কোনও পারিবারিক বিবাদ থেকে এই ঘটনা ঘটেনি। রীতিমতো পরিকল্পনা করে মোটা টাকা আদায় করতে আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল ওরা। আমি মাঠে ছিলাম। মাঠ থেকে ফিরে দুপুরে ছেলের খোঁজ করতে দেখি সে নেই। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার দেখা মেলেনি। দুপুর নাগাদ আমার মোবাইলে ফোন আসে। প্রথম ফোনটি আমি ধরিনি। পরে আবার ফোন করে জানানো হয় চার লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিলে আমার ছেলেকে ফেরত দেওয়া হবে।” তিনি বলেন, “আমি সব কথা পুলিশকে বলেছি। পুলিশ ফোনের সূত্র ধরেই শনিবার রাতে ইসমাইলকে ধরে।” তারপরে একে একে ধরা হয় বাকি দু’জনকেও।
রবিবার ধৃতদের জঙ্গিপুর আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের ৩ জনকেই ৫ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। |