মোহনবাগান-১ (মিকি ফার্নান্ডেজ-আত্মঘাতী)
এয়ার ইন্ডিয়া-০ |
মোহনবাগানে এখনও সশরীরে হাজির নন তিনি। কিন্তু ওডাফাদের শিবিরে ‘করিম চাচার’ ফুটবল-মগজ কাজ শুরু করে দিল। মরোক্কান কোচের মগজাস্ত্র ‘মোবাইল’ বাহিত হয়ে গোয়া থেকে পুণেতে সবুজ-মেরুন সহকারী কোচ মৃদুল বন্দ্যেপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছতেই আই লিগে প্রথম জয়ের স্বাদ পেলেন নবি-জুয়েলরা। অনেক দিন পর বাগানে ‘ঠান্ডা-ঠান্ডা কুল-কুল’ পরিবেশ। কোজাগরী পূর্ণিমার আগের বিকেলে লক্ষ্মীর ঝাঁপি পূর্ণ সবুজ-মেরুনের। বলেওয়াড়ি স্টেডিয়ামে এয়ার ইন্ডিয়াকে ওডাফার গোলে ১-০ হারিয়ে পুরো তিন পয়েন্ট নিয়ে শহরে ফিরছে মোহনবাগান।
ওডাফাদের জয়ের কিছুক্ষণ পরে গোয়া থেকে ফোনে করিম বেঞ্চারিফা যদিও আনন্দবাজারকে বললেন, “মোহনবাগান নিয়ে কোনও কথা বলছি না।” কিন্তু ওডাফাদের শিবিরে খোঁজ নিয়ে জানা যাচ্ছে অন্য খবর। বিমানকর্মীদের বিরুদ্ধে নামার আগে মৃদুলের দলের এক ‘গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের’ কাছে গোয়া থেকে এসএমএস এসেছিল।, “আমার ফুটবল দর্শন তোমার জানা। সেভাবেই খেলো।” যদিও হাজার চাপাচাপিতেও সেই সদস্য কোনও মতেই প্রেরকের নাম জানাতে নারাজ।
কিন্তু নবিদের বর্তমান কোচ মৃদুলের প্রথম দলে এ দিন বেশ কয়েকটা পরিবর্তন। ৪-৪-২ ছকে আক্রমণে ওডাফার সঙ্গে স্ট্যানলি। দীর্ঘদিন পরে স্টপারে আইবর। তেমনই মাঝমাঠে পছন্দের জায়গা ডানদিকে নবি। উদ্দেশ্য, দুই প্রান্ত ধরে নবি-স্নেহাশিস আক্রমণে উঠে বিপক্ষ বক্সে বল রাখবেন ওডাফা-স্ট্যানলির জন্য। আর মাঝখান থেকে বিপক্ষের আক্রমণ ভেঙে বল বাড়ানোর দায়িত্ব নেবেন জুয়েল-মণীশ। |
আর তাতেই কিস্তিমাত। বিমান মাটিতে। ফেড কাপ হারের মধুর শোধ। নবির কথায়, “আমাদের দলের ওপর চেপে বসা ডিপ্রেশনটা কেটে গেল।” গোটা ম্যাচ দুর্দান্ত খেলা আইবর বললেন, “কোচ স্টপারে খেলার কথা বলতেই দায়িত্ব বেড়ে গিয়েছিল।”
১০ মিনিটের মাথায় দেশোয়ালি সতীর্থ স্ট্যানলির থেকে বল পেয়ে জালে পাঠিয়েছিলেন ওডাফা। কিন্তু রেফারি সন্তোষ কুমার অফসাইডের কারণে ‘গোল’ বাতিল করেন। দমে না গিয়ে একের পর এক আক্রমণে মুম্বইয়ের দলটিকে যখন নাস্তানাবুদ করে দিচ্ছেন টোলগে-হীন বাগান, আক্রমণে শুধু জুনিয়রকে রেখে বিমানকর্মীরা তখন ৪-৫-১ ছকে চূড়ান্ত রক্ষণাত্মক ভূমিকায়।
গোল পেতে বিরতির পর তাই দুই চাল বাগানের। এক) জুয়েল বসে নামলেন ডেনসন। তাঁর পাস বিপক্ষের রক্ষণে ফাটল ধরাতে শুরু করল। দুই) স্ট্যানলি বিপক্ষের দুই স্টপারের মাঝে দাঁড়ানো মিকি ফার্নান্ডেজের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে তাঁকে উইংয়ে সরিয়ে নিতে শুরু করলেন। এই সুযোগে ৬৭ মিনিটে বাগানের বহু আকাঙ্খিত গোল। তবে সেটা কোনও সবুজ-মেরুন জার্সিধারীর নয়। ডেনসনের থেকে বল পেয়ে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ওডাফার নেওয়া জোরালো শট মিকির পায়ে লেগে গোলে ঢোকে। তবে শেষ দিকে ওডাফার দু’টো শট পোস্টেও লাগে। না লাগলে বাগানের জয়কে অনেক বেশি উজ্জ্বল দেখাত। ফোনে তাই হাসতে হাসতেও ওডাফার আক্ষেপ, “দল জয়ে ফিরল। কিন্তু প্রচুর গোল মিস হল।” মোবাইল বাহিত হয়ে গোয়া থেকে পুণেতে যা-ই টিপস আসুক না কেন, ওডাফা কিন্তু সাংবাদিকদের বলেছেন, “মৃদুল আমাদের লাকি ম্যান।” করিম কি সেটা শুনেছেন?
|
মোহনবাগান: শিল্টন, নির্মল, ইচে, আইবর, বিশ্বজিৎ, নবি, মণীশ, জুয়েল (ডেনসন), স্নেহাশিস (মাসি) স্ট্যানলি, ওডাফা। |