অসম বিদেশিদের যুদ্ধে মর্গ্যানের অস্ত্র পেন
তুর্দিক নিস্তব্ধ। ইস্টবেঙ্গল মাঠের চেনা ভিড় তখনও জমা হয়নি। অনুশীলনে নামার আগে ড্রেসিংরুমে সাজগোজ চলছে মর্গ্যান-ব্রিগেডের। শুধু তিনি-ই যেন ব্যতিক্রম!
মাঠে একা একা ঘূর্ণিপাক খাচ্ছেন। হোক না আই লিগের সবে তৃতীয় ম্যাচ, তাতে কী? চোখে-মুখে একটা অদ্ভুত উত্তেজনা। জেদ। আক্রোশ। যেন ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচে ‘জয় হো’-র দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছেন পেন ওরজি!
রহস্য কী? উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা গেল, পেনের আড়ালে বকলমে ছক কষছেন ট্রেভর মর্গ্যান-ই। হতে পারে শিলিগুড়ির অসমান মাঠ নেই। হতে পারে গ্যাংটকের ঢালু মাঠ, মেজাজি আবহাওয়ার চাদর নেই। কিন্তু যুবভারতীতে পুণে এফসি ম্যাচে যেটা শক্ত গাঁট হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেটা হল বিপক্ষের চতুষ্কোণ বিদেশি-ফাঁদ। দুই আফ্রিকান জেমস মোগা, চিকাওয়ালি এবং জাপানি দাইসুকে নিসিগুচি তো আছেনই, সঙ্গে বাড়তি সংযোজন সদ্য ভারতীয় নাগরিকত্ব নেওয়া আরাতা ইজুমি। আদতে যিনি জাপানি। আর সে কারণে আই লিগে অন্য দলগুলোর তিনের জায়গায় একমাত্র পুণেই ‘চার’ বিদেশি খেলানোর সুযোগ পাচ্ছে। ছত্রপতি শিবাজির শহরের ফুটবলারদের তরবারির মার ঠেকাতে ব্রিটিশ কোচ মর্গ্যানের অস্ত্র ধারালো পেন। যেন বিখ্যাত ইংরেজি প্রবাদের মতোই, ‘পেন ইজ মাইটিয়ার দ্যান সোর্ড’!
লাল-হলুদের ত্রিফলা। রবিবার অনুশীলনে পেন-ওপারা-চিডি। ছবি: উৎপল সরকার
ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ‘হোম’ ম্যাচ তো পুণের প্রথম ‘অ্যাওয়ে’ ম্যাচ। আই লিগের প্রথম দু’টো ম্যাচে ওএনজিসি এবং মুম্বই এফসি-কে বড় ব্যবধানে হারালেও, কলকাতার মাঠে ইস্টবেঙ্গলকে স্বভাবতই কঠিন ঠাঁই বলে মনে করছেন পুণে কোচ ডেরেক পেরিরা।
অনুশীলনের পরে বলছিলেন, “ইস্টবেঙ্গল সদ্য ফেড কাপ জিতেছে। ঘরের মাঠে ওদের হারানো মোটেই সহজ নয়। সবাই তিন পয়েন্টের জন্যই খেলতে নামে। আমি এখান থেকে এক পয়েন্ট পেলেই খুশি।” আসলে ডেরেকের দলে ‘চার’ বিদেশির সুবিধা থাকলে কী হবে, গোলকিপার নড়বড়ে। অভ্র মণ্ডল এখনও সম্পূর্ণ সুস্থ নন। দলের সঙ্গে কলকাতায় এলেও তাঁর জায়গায় খেলবেন অনভিজ্ঞ শাহিনলাল মেলোলি।
এবং এখানেই পেনকে কাজে লাগাতে চাইছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। ছোটখাটো চেহারা হলে কী হবে, লম্বা-লম্বা ‘স্ট্রাইডে’ অনেকটা জায়গা জুড়ে খেলতে পছন্দ করেন পেন। তাই, এক) আরাতা-দাইসুকেদের দৌড় থামাতে পাসিং ফুটবল দিয়ে শুরু থেকেই মাঝমাঠের দখল নেওয়া। দুই) চিডি-মননদীপদের জন্য অজস্র বল সাপ্লাই করাজোড়া কাহিনি পেন দিয়ে লেখার স্ট্র্যাটেজি নিচ্ছেন মর্গ্যান। কেননা যত সময় এগোচ্ছে, ততই ধারালো হচ্ছে চিডির অভিব্যক্তি। গোলের খিদে তরতর করে বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে সঠিক বল সাপ্লাই হলে, বিস্ফোরণ ঘটাতে অসুবিধা হবে না লাল-হলুদ গোলমেশিনের।
আগের ম্যাচের দলে একটাই পরিবর্তন করছেন মর্গ্যান। বলজিতের জায়গায় ঢুকছেন মননদীপ। তবে রবিন সিংহের রিজার্ভ বেঞ্চেও জায়গা হচ্ছে না। বুধবার কলকাতা লিগে বিএনআর ম্যাচে রবিনের খেলা দেখে তাঁর আই লিগ-ভবিষ্যত ঠিক করবেন মর্গ্যান। ইস্টবেঙ্গল কোচ বললেন, “আমাদের পরের দু’টো ম্যাচই খুব গুরুত্বপূর্ণ। ডেম্পো ম্যাচের আগে যদি এই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট তুলতে পারি, তা হলে ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে।” ইস্টবেঙ্গলের জন্য সুখবর, গোলকিপার অভিজিৎ মণ্ডল চোট সারিয়ে একেবারে সুস্থ।
দশ দিনের লম্বা ছুটি কাটানোর পরে আই লিগের ম্যাচে নামছেন পেন-চিডিরা। সোমবার বোঝা যাবে ছুটিটা বর হল, নাকি অভিশাপ!

সোমবার
আই লিগে- ইস্টবেঙ্গল : পুণে এফসি (যুবভারতী, ২-১৫)।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.