দুর্গাপুজোর ‘হ্যাংওভার’ এখনও কাটেনি। তার মধ্যেই আজ কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। গৃহস্থের গণ্ডী ছাড়িয়ে লক্ষ্মী এখন বিভিন্ন থিমের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে মণ্ডপে মণ্ডপে। আর সেই পথ ধরেই হাওড়ার জয়পুরের খালনায় চাকচিক্যে দুর্গার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে লক্ষ্মী।
এক সময় গোটা খালনায় মাত্র তিনটি বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো হত। সেই সংখ্যা এখন একশো ছাড়িয়েছে। গ্রামের পুজোর ইতিহাস জানেন এমনই এক প্রবীণের কাছে জানা গেল, আগে সোনা-রূপার ব্যবসায়ীরা গ্রামে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো করতেন। গ্রামের লক্ষ্মীবন্দনার ইতিহাসের সেই শুরু । সোনার চাকচিক্যর বদলে গ্রামে অবশ্য এখন প্রসার লাভ করেছে ইমিটেশন শিল্প। যদিও তা পুজোর চাকচিক্য, জৌলুসে ভাগ বসাতে পারেনি। গ্রামের মালিক পরিবারের লক্ষ্মীপুজো ১৩০ বছরের পুরনো। পরিবারের সদস্য মোহন মালিক বললেন, “আগে আমাদের সোনা-রূপার ব্যবসা ছিল। সেই সময়ে বাড়িতে লক্ষ্মীপুজের প্রচলন করেছিলেন স্বর্গীয় শশীভূষণ মালিক। আড়ম্বরের সঙ্গে পুজো করা হলেও বর্তমানে মূল্যবৃদ্ধির চাপে আড়ম্বর কমলেও ভক্তি ও আন্তরিকতা একই রকম রয়েছে। পুজোর দিনগুলিতে পরিবারের লোকেরা তো বটেই আনন্দে মেতে ওঠেন গ্রামবাসীও।”
শুধু বাড়ির পুজোই নয়। খালনায় বেড়েছে সর্বজনীন পুজোও। ক্ষুদিরামতলা বারোয়ারির পুজো এ বার ১১২ বছরে পড়ল। মণ্ডপ গড়ে উঠেছে পাহাড়ের উপর বৌদ্ধমূর্তির আদলে। ‘আমরা সবাই’-এর মণ্ডপ রাজস্থানের একটি মন্দিরের আদলে। মধ্যপাড়া বলাই স্মৃতি লক্ষ্মীমন্দিরের পুজোর এ বার ৭৫ বছর। মণ্ডপে উঠে এসেছে জঙ্গলমহল। ১০০ বছর পার হওয়া কৃষ্ণরায়তলা সর্বজনীন মণ্ডপ সাজিয়েছে স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ির আদলে। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য বারুইপাড়া মিতালি সঙ্ঘ ও মধ্যপাড়া করুণাময়ী কিশোর সঙ্ঘের পুজো। লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে গ্রামে বসে বিশাল মেলা, এবছরও তার ব্যতিক্রম নয়। খালনা পঞ্চায়েতের প্রধান গৌতম চক্রবর্তী বললেন, ‘‘লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে গ্রামে বহু মানুষ আসেন। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য স্থানীয় ক্লাব সংগঠন ও পুলিশ প্রশাসনও সজাগ।” |