রীতি মেনে রবিবার তারাপীঠে মা তারার আবির্ভাব তিথি পালিত হয়েছে। আবির্ভাব তিথি উপলক্ষে প্রচুর ভক্তের সমাগম ঘটেছে তারাপীঠে। শুক্লা চতুর্দশীর দিনে মায়ের মূল মন্দির সংলগ্ন চারিদিক খোলা ‘বিরাম মঞ্চে’ মা তারাকে নিয়ে আসা হয়। রাত তিনটের সময়ে ওই মন্দিরে আনা হয় এবং স্নান করিয়ে রাজবেশ পরানো হয়। বিরাম মঞ্চে শুধু মাত্র এই দিনেই পশ্চিম দিকে মুখ করে মা তারাকে বসানো হয়। বছরের অন্য সময়ে মূল মন্দিরের উত্তর দিকে মুখ করে রাখা হয়।
তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, “কথিত আছে বণিক জয় দত্তের ছেলে তারাপীঠের ‘জিবীত কুণ্ডে’র জলে প্রাণ ফিরে পেয়েছিলেন। পরে তারা মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে জয় দত্ত শুক্লা চতুর্দশী তিথিতে মাকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই থেকে এই তিথি তারা মায়ের আবির্ভাব তিথি হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।”
|
তিনি জানান, এ দিন দুপুরে মায়ের কোনও অন্নের ভোগ হয় না। এর জন্য তারাপীঠের সেবাভিতদের বাড়িতেও ভাত রান্না হয় না। রাতে ভোগ রান্নার এবং বিশেষ পূজাচর্না হয়। এ দিনের পুজো অনেকের কাছে তারাপুজো নামে প্রচলিত। আগে এই পুজো উপলক্ষে তারাপীঠে গ্রামীণ মেলা বসত। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই মেলা এখন অবলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।
অন্য দিকে, লাভপুরে এই দিনেই তারামায়ের পুজোর আয়োজন করেছেন তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের সদস্যরা। পুরোহিত সুভাষ ভট্টাচার্য জানান, শতাব্দী প্রাচীন এই পুজোর প্রচলন হয়েছিল ১৮৯৭ সালে। কথিত আছে, লাভপুরের জমিদার হরিদাস বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘদিন নিঃসন্তান ছিলেন। সন্ন্যাসী রামজী গোঁসাইয়ের নির্দেশে আশ্বিন মাসের শুক্লা চতুর্দশীতে তারামায়ের পুজো করেন এবং সন্তান লাভ করেন। ওই সন্তানের নামকরণ করা হয় তারাশঙ্কর। সাহিত্যিকের উপন্যাসে নানা ভাবে আরাধ্যদেবী তারামায়ের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। এই পুজো উপলক্ষে আশপাশের এলাকা থেকে প্রচুর লোকজন আসেন লাভপুরে। এ দিন ছিলেন সাহিত্যিকের ভাইপো চিত্র পরিচালক পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিশিষ্টজনেরা। |