দুর্গাপুজোর ‘হ্যাংওভার’ এখনও কাটেনি। তার মধ্যেই আজ সোমবার কোজাগরি লক্ষ্মীপুজো। গৃহস্থের কল্যাণের জন্য ঘরে ঘরে পুজিত হন লক্ষ্মী। এই পুজোকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে জেলার বাজারগুলি।
কোজাগরি লক্ষ্মীপুজোয় ফল, মিষ্টি, নাড়ু, মুড়কির সঙ্গে ভোগ দেওয়ার প্রথাও প্রচলিত রয়েছে। ভোগের মেনু অবশ্য সর্বত্র এক নয়। কোথাও লুচি-সুজি, আবার কোথাও অন্নভোগ। এবছর পেট্রোল-ডিজেল, রান্নার গ্যাসের সঙ্গে সঙ্গে অগ্নিমূল্য দশকর্মা এবং কাঁচাবাজারেও। তাই গত বছরের থেকে এবছর পুজোর বাজেটও ঊর্দ্ধমুখী।
|
এবছর দাম বৃদ্ধি হয়েছে লক্ষ্মীমূর্তিরও। সাঁইথিয়া বাজারের লক্ষ্মী প্রতিমা বিক্রি করছিলেন কালোসোনা দে। তিনি বললেন, “গত বছর যে লক্ষ্মী প্রতিমা পাওয়া গিয়েছে ৩০ টাকায়, এবছর সেই প্রতিমারই দাম ৫০ টাকা। এখানে বড় লক্ষ্মী প্রতিমার দাম ৫০০ টাকা। গতবছর যা বিক্রি হয়েছে ৩২০ টাকায়।” দুবরাজপুর বাজারে আবার আকারে ছোট লক্ষ্মী প্রতিমা বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১৪০ টাকায়। দাম বেড়েছে পুজোর সরঞ্জামেরও। দুবরাজপুর বাজারের পুজোর সরঞ্জাম বিক্রেতা অর্জুন চৌধুরী বললেন, “গত বছর একটি মাটির প্রদীপের দাম ছিল ৪০ পয়সা। এবছর সেই মাটির প্রদীপই বিক্রি হচ্ছে ১ টাকা দামে। তবে দুর্গাপুজোর পর থেকে ফল বাজারের দামের অবশ্য সেরকম হেরফের হয়নি। তার মধ্যেও কলা, পেয়ারার দাম বেশ চড়া।”
লক্ষ্মীপুজোর অন্যতম অঙ্গ হল পদ্মফুল। তবে এবছর বৃষ্টি কম হওয়ায় বোলপুর, রামপুরহাট, দুবরাজপুর বাজারে পদ্মফুল তেমন দেখা গেল না। সাঁইথিয়া, সিউড়ির বাজারে কিছু পদ্ম থাকলেও তার এক-একটির দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা। |
ভোগ রান্নার জন্য মুদিখানার দোকানেও ছিল ক্রেতাদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি। রামপুরহাটের মুদিখানা দোকানের মালিক যোগেশ গুপ্ত বললেন, “মুগ ডালের দাম তেমন না বাড়লেও সরষের তেলের দাম বেড়েছে। গত বছরের থেকে দাম বেড়েছে আটা, ময়দা, চালেরও। কাঁচাবাজারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে ফুলকপির দামও। এক একটি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। বেড়েছে বাঁধাকপির দামও। রামপুরহাটের সব্জি ব্যবসায়ী বংশীধর মণ্ডল বললেন, “পুজোর পর থেকে আলুর দাম কেজি প্রতি ১ টাকা করে বেড়েছে। দাম বেড়েছে টম্যাটো ও করলারও।”
তবে বাজারে দাম ক্রমশ ঊর্দ্ধমুখী হলেও খামতি নেই উৎসাহে। লক্ষ্মী আসছেন। তাই কষ্ট হলেও আয়োজনে ত্রুটি না রেখে দেবীকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত বীরভূমবাসী। তাইতো দুবরাজপুরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বধূ ঝর্ণা হালদার বললেন, “কষ্ট হচ্ছে ঠিকই কিন্তু আয়োজনে ফাঁকফোকর রাখা চলবে না।” অন্য দিকে, বোলপুরের কলেজপল্লির বাসিন্দা ব্যাসদেব রায় ও তাঁর স্ত্রী কাজলদেবীর কথায়, “জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। তাই পরিমান কমিয়ে সব দিক বজায় রেখে পুজো করা হচ্ছে। যাতে কোথাও ত্রুটি না থাকে।” |