ভূতের গ্রামে লক্ষ্মী পুজো আড়ম্বরেই
হাসমারোহে দেবীলক্ষ্মীর আরাধনায় প্রস্তুত খনি ও শিল্পাঞ্চল। কোথাও পালিত হচ্ছে পারিবারিক পুজোর ৩০০ বছর, কোথাও আবার সর্বজনীন পুজো পা দিল ১০০ বছরে। বিভিন্ন জায়গায় থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও যাত্রার আয়োজনও।
জামুড়িয়ার বীজপুরে মাজিবাড়ির পুজো শুরু হয়েছিল ১৯৩৫ সালে। পুজোটি পারিবারিক হলেও কার্যক্ষেত্র সর্বজনীনের চেহারা নেয়। পুজোর পরের দিন থাকে বিচিত্রানুষ্ঠান। তার পরের দু’দিন আয়োজিত হয় যাত্রানুষ্ঠান। এই পুজোর আয়োজক তথা পরিবারের সদস্য কুশ মাজি জানান, পূর্বপুরুষ এই পুজো শুরু করেছিলেন। সর্বস্তরের মানুষ এই মণ্ডপে পুস্পাঞ্জলি দেন। এই পুজো ঘিরে চার দিন হয় মিলন মেলা। গ্রামের বাসিন্দা সুজিত তপাদার, সুকুমার বাউরিদের কথায়, “এই পুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামজুড়ে শুরু হয়ে যায় উৎসব।”
আসানসোলে ঘাঁটি পরিবারের প্রতিমা।—নিজস্ব চিত্র।
রানিগঞ্জের মহম্মদ আলি রোডে হিল বস্তি এলাকায় পূর্বপল্লি লক্ষ্মী মন্দিরের পুজো এ বার ৮৫ বছরে পা দিল। এই পুজো শুরু নিয়ে জনশ্রুতি হল, হিল বস্তিতে এসে বার্নস কোম্পানির তার পোঁতার সময়ে কাজ থমকে যায়। যেখানে কাজ আটকে যায়, সেখানে সংস্থার কর্মীরা লক্ষ্মীপুজো শুরু করেন। সেই শুরু। পুজোর পরের দিন পঙ্ক্তিভোজে বহু মানুষ যোগ দেন। পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ কল্যাণ মুখোপাধ্যায় জানান, ২০০৪ সালে স্থায়ী মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতি বছর বাসিন্দাদের সম্মতি নিয়ে কমিটি গঠিত হয়।
অন্ডালের খাঁদরায় সিংহ পরিবারের পুজো প্রায় ১৫৩ বছরের পুরনো। এই পুজোর আকর্ষণ, কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা ও দু’দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ওই পরিবারের সদস্য অনুপ সিংহ জানান, ওই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্থানীয় এবং কলকাতার শিল্পীরা যোগদান করেন।
অন্ডালের বহুলা গ্রামে মণ্ডল বাড়ির পুজোর বয়স প্রায় তিনশো বছর। তিন দিন পরে লক্ষ্মী প্রতিমার বিসর্জন হয়। এই পরিবারের সদস্য স্বপন মণ্ডল জানান, আগে প্রতি বছরই পঙ্ক্তিভোজের আয়োজন করা হত। এখন আর হয় না। মূর্তি বিসর্জনের পরে কাঠামো জল থেকে তুলে নিয়ে এসে সারা বছর নিত্যপুজো করা হয়।
আসানসোলের ঘাঁটি গলিতে ঘাঁটি পরিবারের পুজো ৭৫ বছরে পড়ল। পরিবারের সদস্য পরিমল ঘাঁটি জানান, ১৩৪৫ বঙ্গাব্দে স্বপ্নাদেশে তাঁর বাবা পুজো শুরু করেছিলেন। বাবার কাছে শুনেছেন, সেই সময়ে একটি প্যাঁচা নিয়মিত তাঁদের মন্দির প্রাঙ্গনে আসত।
কুলটির ডিসেরগড়ে চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজো ৬৯ বছরে পা দিল। এই পুজো মিলনমেলায় পরিণত হয়। জামুড়িয়ায় শেখপুরের ষোলআনা কমিটির পুজো এ বার ১৮ বছরে পা দিল। আকলপুরে দাস বাড়ির পুজোর এ বার শতবর্ষ।
ইকড়ায় মাজি পরিবারের পুজো ৮৫ বছরে পড়ল। এলাকায় একমাত্র এই পুজোয় মানুষের ঢল নামে। বীরকুলটির সূত্রধর বাড়ির পুজো ১৮৫ বছর এবং বাউড়ি পরিবারের পুজো প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে চলছে। বার্নপুরের পুরনোহাট সর্বজনীন ৬৭ বছরে এবং আপার পুরনোহাট তিন বছরে পা দিল।
কুলটির বেনা গ্রাম ভূতের গ্রাম বলে পরিচিত। সেখানে সারা বছর কোনও মানুষ থাকেন না। শুধু লক্ষ্মী পুজোর জন্য সপ্তাহ খানেক সব মানুষ এখানে ফিরে আসেন। গ্রামের স্থায়ী লক্ষ্মী মন্দিরে উৎসবকে কেন্দ্র করে মেতে উঠে সারা গ্রাম। পুজোর পরে আবার সকলে ফিরে যান।
দুর্গাপুর-ফরিদপুরের বাঙ্গুরিতে পাল পরিবারের পুজো শুরু হয়েছিল ১৩৬৫ বঙ্গাব্দে। নামে পারিবারিক হলেও কার্যত এলাকায় সবথেকে বড় সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে এই পুজো। পুজোর পরের দু’দিন থাকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও যাত্রার আয়োজন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.