ডেঙ্গি মোকাবিলায় এ বার কলকাতা পুরসভার র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স তৈরি থাকবে প্রতিটি বরো অফিসেই। একই সঙ্গে প্রতি ওয়ার্ডে থাকবেন এক জন ভেক্টর কন্ট্রোল ইনচার্জ। যাতে ডেঙ্গির মোকাবিলা আরও জোরালো ভাবে করা যায়।
পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ জানান, ডেঙ্গি প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বর্তমানে পুরসভার যে দলটি রয়েছে, সেটি কাজ করে কেন্দ্রীয় ভাবে। একই সঙ্গে একাধিক জায়গা থেকে ডেঙ্গি সংক্রমণের খবর এলে যাতে তা নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করতে দেরি না হয়, সে জন্যই নেওয়া হচ্ছে বাড়তি ব্যবস্থা।
অতীনবাবু বলেন, “ডেঙ্গি প্রতিরোধে আরও জোরদার ব্যবস্থা নিতেই র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সকে প্রতিটি বরোতে আলাদা করে তৈরি রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে যে দলটি রয়েছে, সেটি কেন্দ্রীয় ভাবে কাজ করায় সময় মতো সব জায়গায় পৌঁছতে কিছু সমস্যা হয়।” একই সঙ্গে ডেঙ্গি মোকাবিলায় প্রতি ওয়ার্ডে এক জন করে ভেক্টর কন্ট্রোল ইনচার্জ রাখা হবে বলেও জানান অতীনবাবু।
এ বছরই কলকাতায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে কয়েক জনের মৃত্যুর জেরে সিপিএম এবং কংগ্রেস উভয় দলেরই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তৃণমূল পরিচালিত কলকাতা পুরবোর্ডকে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, আগামী বছর ফেব্রুয়ারি থেকেই ডেঙ্গি মোকাবিলার কাজ শুরু করতে হবে। কলকাতা পুরসভা ইতিমধ্যেই সেই নিয়ে পরিকল্পনা করা শুরু করে দিল।
র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের পাশাপাশি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ফাঁকা জমিতে আবর্জনা বা জল জমে মশার বংশ বৃদ্ধি রোধেও চিন্তাভাবনা শুরু করেছে পুরসভা। পুরকর্তারা জানান, এমন অধিকাংশ জমিতেই একটা বড় অংশ টিন দিয়ে ঘিরে ফেলে রাখা হয়েছে। কোনওটির মালিক হয়তো কলকাতায় থাকেন না, কোনওটি বিক্রি হয়ে গিয়েছে বহু বছর আগে। কিন্তু মিউটেশন না হওয়ায় নতুন মালিকের খোঁজ নেই পুরসভার খাতায়। ওই সব জায়গায় জমে থাকছে আবর্জনা বা জল। মশাও বাড়ছে।
অতীনবাবু জানান, পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ এবং সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট বিভাগ মিলিয়ে একটি যৌথ দল তৈরি হচ্ছে। প্রতিটি বরোয় থাকবে এমন একটি দল। যাতে এলাকার ফাঁকা জমিতে জমে থাকা আবর্জনা বা জলে মশা জন্মানোর অভিযোগ এলেই ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কলকাতা পুরসভার কর্তারা জানিয়েছেন, চলতি বছরে এই ধরনের বহু ঘেরা জায়গায় পুলিশের সাহায্য নিয়ে ঢুকে মশার ওষুধ দিতে বাধ্য হয়েছেন পুর-আধিকারিকেরা। অতীনবাবু জানান, জমি কারও ব্যক্তিগত হতেই পারে। কিন্তু তার কারণে যদি শহর অপরিচ্ছন্ন হয় বা রোগের জীবাণু ছড়ায়, তবে সেই জমির মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |