ঝাড়খণ্ডের গুমলা জেলা পরিষদের বিজেপি সমর্থিত এক মহিলা সদস্যকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়েছে। নিহত মহিলার নাম কলাবতী দেবী (৩৯)। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার পিছনে উগ্রপন্থী সংগঠন পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া (পিএলএফআই)-এর হাত থাকার অভিযোগ করেছে নিহতের পরিজনরা। মহিলা জনপ্রতিনিধিকে অপহরণের পর হত্যা করার ঘটনা এর আগে ঝাড়খণ্ডে ঘটেনি। গুমলার পুলিশ সুপার যতীন নারওয়াল জানিয়েছেন, নিহত মহিলার পরিজনের দায়ের করা এফআইআর-এ অভিযুক্ত পরমেশ্বর গোপ নামে এক পিএলএফআই কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপহরণ এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও কয়েক জনের খোঁজ চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত কলাবতী দেবীর বাড়ি গুমলা জেলার পালকোট থানার নাসপুরা গ্রামে। গত কাল রাত আটটা নাগাদ জনা দশেক সশস্ত্র যুবক তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। এই খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ সুপারের নেত্ৃত্বে বিশাল বাহিনী পালকোট থানা জুড়ে তল্লাশি শুরু করে। রাত ১১ টা নাগাদ পালকোট জঙ্গলের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয় গুলিবিদ্ধ কলাবতীদেবীর
নিথর দেহ।
প্রাথমিক তদন্তে এই ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত বলেই মনে করছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, কয়েক মাস আগে পিএলএফআই-এর তরফে কলাবতী দেবীর কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছিল। টাকা দিতে তিনি অস্বীকার করেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ওই ঘটনার যোগাযোগের সম্ভবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ জানায়, জঙ্গি উপদ্রুত ঝাড়খণ্ডে এই ঘটনা নজিরবিহীন। এই ঘটনায় আলোড়ন উঠেছে রাজ্যের প্রশাসনিক স্তরেও। শুধু মাওবাদী জঙ্গিই নয়, অন্য জঙ্গি সংগঠনের বাড়বাড়ন্ত এবং বেপরোয়া হয়ে ওঠাও ঝাড়খণ্ড প্রশাসনের যথেষ্ট মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে উঠছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মাওবাদীদের পাশাপাশি পিলএফআই রাজ্যের সব জেলাতেই কম বেশি সংগঠন গড়েছে। ইতিমধ্যেই কিছু জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে গড়ে উঠেছে তৃতীয় প্রস্তুতি কমিটি (টিপিসি), ঝাড়খণ্ড প্রস্তুতি কমিটি (জেপিসি) প্রভৃতি জঙ্গি সংগঠন। মূলত এই সংগঠনগুলি মাওবাদীদেরই দলছুট সংগঠন।
একদা সিপিআই (মাওবাদী) নেতারাই মূল সংগঠন থেকে মতবিরোধের কারণে বেরিয়ে এসে এই সংগঠনগুলি তৈরি করেছে। পরবর্তী ক্ষেত্রে মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় বেড়েছে তাদের প্রভাবও। |