ফুলহারের জলস্ফীতিতে পথ-ঘাট, মাঠ জলে ডুবে জলবন্দি বাসিন্দারা। জল ঢোকায় বাড়ি ছেড়ে উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন অনেকেই। নদী ভাঙনেও ঘরদোর তলিয়ে যাওয়ায় অন্যত্র সরে গিয়েছে বেশ কিছু পরিবার। কিন্তু ৪ দিন বাদেও ত্রাণ পাওয়া দূরের কথা, প্রশাসনের তরফে কেউই মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের দুর্গত এলাকায় খোঁজও নেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। ৪ দিনেও ত্রাণ না মেলায় প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হরিশ্চন্দ্রপুরের ফব বিধায়ক তজমুল হোসেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়াকে নালিশ জানিয়েছেন। শুধু বাম বিধায়ক নন। দুর্গতদের ত্রাণ না মেলায় ক্ষুব্ধ তৃণমূলও। বৃহস্পতিবার তৃণমূলের এক দল নেতা-কর্মী ওই এলাকায় যান। দুর্গতদের ত্রাণ না মেলায় ক্ষুব্ধ তারাও। প্রশাসনের তরফে ত্রাণ না দেওয়ার বিষয়ে তারা নালিশ জানান দলের জেলা সভানেত্রী নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রকেও। এ দিকে বৃহস্পতিবারও মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ায় বিপদসীমার উপর দিয়েই বইছে ফুলহার বলে সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। মালদহের জেলাশাসক শ্রীমতি অর্চনা বলেছেন, “জেলা থেকে তো ব্লকে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। ত্রাণ নিয়ে কোনও সমস্যার কথা বিডিও তার রিপোর্টে জানাননি। যাই হোক ওরা যখন অভিযোগ করছেন বিষয়টি দেখছি। বিডিওকে বলছি দ্রুত যাতে দুর্গতদের ত্রাণ দেওয়া হয়।” এ দিন ফুলহারের জলস্তর দাঁড়িয়েছে ২৭.৮০ মিটারে। যা অসংরক্ষিত এলাকায় বিপদসীমা থেকে ও সংরক্ষিত এলাকায় হলুদসীমা থেকে ৪৫ সেন্টিমিটার বেশি। বুধবার দুপুরে নদীর জলস্তর ছিল ২৭.৮৪ মিটার। সন্ধ্যায় তা বেড়ে হয় ২৭.৯২ মিটার। এ দিন দুপুরে ফের জলস্তর কমেছে। স্থানীয় ভাবে বৃষ্টি না হওয়ায় ফুলহারের জল স্থিতিশীল বলে সেচ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। সোমবার থেকে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করে ফুলহার। নদীর জল উপচে হরিশ্চন্দ্রপুরের ভাকুরিয়া এলাকার ১৫০টি পরিবার বাড়ি ছেড়ে উঁচু রাস্তার উপর আশ্রয় নেন। ভাঙনে খিদিরপুর মুসলিমপাড়ার ১৫টি পরিবার অন্যত্র আশ্রয় নেয়। জলবন্দি হয়ে রয়েছেন ১৫টি গ্রামের বাসিন্দা। এদিন দুর্গত এলাকায় যান তৃণমূলের এক দল নেতা-কর্মী। দলের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা কমিটির কার্যকরী সভাপতি তৈমুর রহমান বলেন, “মিহাহাটে নদী বাঁধে জল ধাক্কা মারছে। জল বাড়লে ওই বাঁধ বিপন্ন হয়ে পড়বে। তা ছাড়া অসংরক্ষিত এলাকার চার দিকে জল। বাড়িতে জল ঢোকায় ১৫০ পরিবার রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের কেউ এলাকায় যাননি। ত্রাণও দেওয়া হয়নি। জেলা সভানেত্রী তথা মন্ত্রীকে জানিয়েছি। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। বিধায়ক বলেন, “সেচমন্ত্রীকে জানিয়েছি ত্রাণ দূরের কথা, প্রশাসনের কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। উনি বলেছেন, ত্রাণের ঘাটতি নেই। বিষয়টি দেখছি।” খিদিরপুর মুসলিমপাড়ার দুই দুর্গত শেখ খালেক ও ইনতাজ আলিরা এই দিন বলেন, “ভাঙনে ভিটে তলিয়েছে! একটা ত্রিপলও জোটেনি।” |