লুম্বিনী
মহিলা ওয়ার্ডে সারা দিনই ‘অবারিত দ্বার’ পুরুষ কর্মীদের
প্রেমনাথ প্রসাদ একা নন, লুম্বিনী পার্ক মানসিক হাসপাতালে রাতদুপুরে মহিলাদের শৌচাগারে পুরুষ কর্মীদের যাওয়ার ‘ট্র্যাডিশন’ অনেক পুরনো। মঙ্গলবার ওই হাসপাতালে ধর্ষণের অভিযোগে এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মীকে গ্রেফতার ও চাকরি থেকে সাসপেন্ডের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে চাঞ্চল্যকর এই তথ্যই সামনে এসেছে পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্তাদের।
হাসপাতালে নার্সদের একাংশ জানিয়েছেন, দোতলার মহিলা ওয়ার্ডের শৌচাগারে দিনভর দফায় দফায় পুরুষ কর্মীরা যান। এমনকী, তাঁদের কাছে চাবি থাকে বলে গ্রিলের দরজা খুলেও তাঁরা যখন-তখন ওয়ার্ডে ঢুকে পড়তে পারেন। সোমবার রাতের মতো ঘটনা ওই হাসপাতালে যে কোনও সময়ে ঘটতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় হওয়ার পরে স্বাস্থ্য দফতর থেকে এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবারই কর্তৃপক্ষ সমস্ত কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন, মহিলাদের শৌচাগারে যেন কোনও পুরুষ না ঢোকেন। এমনকী, দুপুরে আউটডোর শেষ হওয়ার পর থেকে চিকিৎসক ছাড়া কোনও পুরুষের মহিলা ওয়ার্ডে ঢোকা নিষিদ্ধ হয়েছে। হাসপাতালের সুপার জয়ন্ত মৈত্র বলেন, “সে দিন ওই কর্মী একটা চোখের ড্রপ পৌঁছে দিতে উপরে উঠেছিলেন। তার পরে এত কিছু সামলাতে হল আমাদের। এই জন্যই নিয়ম করে দেওয়া হয়েছে, সন্ধ্যার পরে যদি কোনও পুরুষ কর্মীকে ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার জন্য উপরে উঠতে হয়, তা হলে তিনি গ্রিলের বাইরে থেকে হাত বাড়িয়ে ওষুধ দিয়ে নীচে ফিরে যাবেন। আমরা কোনও রকম অনিয়ম বরদাস্ত করব না।”
প্রশ্ন উঠেছে, এত বড় একটা ঘটনা ঘটার পরে অনিয়ম বরদাস্ত করার প্রসঙ্গ উঠছে কেন? কেন কোনও পদক্ষেপ করার জন্য বড় কোনও অঘটনের প্রয়োজন হয়? সুপার জানিয়েছেন, তিনি ওই হাসপাতালে অল্প দিন হল এসেছেন এবং আগের ঘটনা তাঁর জানার কথা নয়।
কী বলছেন স্বাস্থ্যকর্তারা? স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বলেন, “এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত মানসিক হাসপাতালের সুপারদের নিয়ে বৈঠক ডাকছি। সেখানেই নির্দিষ্ট ভাবে কিছু নির্দেশ দেওয়া হবে। সোমবার রাতের ওই ঘটনা আমাদেরও চোখ খুলে দিয়েছে।”
সোমবার রাত ন’টা নাগাদ ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার জন্য ফিমেল ওয়ার্ডে ঢুকেছিলেন প্রেমনাথ। এর কিছুক্ষণ পরে এক রোগিণীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় তাঁকে শৌচাগার থেকে বেরোতে দেখেন ওয়ার্ডের এক নার্স। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। পরদিন ওই কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
লুম্বিনী পার্ক হাসপাতালের একতলায় পুরুষদের ওয়ার্ড। দোতলায় মহিলাদের। একতলা এবং দোতলা দু’জায়গাতেই পৃথক শৌচাগার রয়েছে। তা সত্ত্বেও একতলা থেকে পুরুষ কর্মীরা উপরে উঠে আসেন। ওয়ার্ডের এক নার্সের কথায়, “বহু সময়েই কোনও কোনও রোগিণীর পোশাক বিস্রস্ত থাকে। সেই সময়ে পুরুষেরা উপরে এলে সেটা অত্যন্ত অস্বস্তিকর। সব চেয়ে বড় কথা হল, সুস্থ হওয়ার পরেও বাড়িতে ফেরত নিচ্ছে না বলে কেউ কেউ এখানে থেকে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এই পরিস্থিতি তাঁদের পক্ষে মেনে নেওয়া খুব কঠিন।”
হাসপাতাল সূত্রের খবর, সুস্থ হওয়ার পরেও হাসপাতালে থেকে যেতে বাধ্য হওয়া কয়েক জন মহিলা এ বিষয়ে একাধিক বার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.