বনধে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি
প্রায় স্বাভাবিক অফিসে হাজিরা
ত ২৮ ফেব্রুয়ারির বনধে সংগঠনের নির্দেশ মেনে দফতরে না আসায় বেতন কাটা গিয়েছিল রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সক্রিয় সদস্য শৈবালকান্তি পালের। বৃহস্পতিবার তিনি অবশ্য অফিসে আসেন। তাঁর কথায়, “কী করব বলুন, সরকারি কর্মী তো! একদিনের বেতন কাটা যাক, এটা কেইবা চাইবে। আর তা ছাড়া এ দিনের বনধ নিয়ে সংগঠনের থেকে তেমন কোনও নির্দেশ ছিল না।”
শৈবালবাবুর মতোই সিপিএম প্রভাবিত সরকারি কর্মীদের সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্য বা মাঝারি স্তরের নেতাদের বেশিরভাগই এ দিন দফতরে উপস্থিত ছিলেন। জলপাইগুড়ি জেলাশাসকের দফতরের কর্মী উপস্থিতি হার ছিল ৯৫ শতাংশ। সিপিএম প্রভাবিত কর্মী সংগঠনের আধিপত্য থাকা জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের ১২০ জন কর্মীর মধ্যে ১১৮ জনই এদিন উপস্থিত ছিলেন। কো-অর্ডিনেশন কমিটির জেলা সম্পাদক অপূর্ব বসু বলেন, “সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বরা কেউই এ দিন দফতরে যাননি। সাধারণ কর্মীরা দফতরে গিয়েছেন বলে শুনেছি।” ঘটনা হল, বনধের সমর্থনে জলপাইগুড়ির সব সরকারি দফতরেই সিপিএমের পতাকা লাগানো থাকলেও পিকেটার দেখা যায়নি। জেলা পরিষদের দফতরের গেট থেকে পুলিশই পতাকা খুলে নিয়ে গেট খুলে দেয়। শহরের ব্যবসায়িক এলাকাগুলিতে এ দিন বনধের প্রভাব দেখা গিয়েছে. দিনবাজার, বেগুনটারি, কদমতলা, কামারপাড়া, ডিবিসি রোডের মত এলাকায় দোকানপাট বন্ধ ছিল। সরকারি দফতরে কাজ হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকার গায়ের জোরে বনধ ভেঙেছে। আমরা রাস্তায় নেমে বিরোধিতা করেছি। বৃষ্টির কারণে কিছু জায়গায় মিছিল যেতে দেরি হয়েছে। মানুষ বনধে সাড়া দিয়েছে।” বনধে শিলিগুড়িতে বেসরকারি যানবাহন ও দোকান বন্ধ থাকলেও অফিস-কাছারিতে হাজিরা ছিল স্বাভাবিক। কয়েকটি জায়গায় বনধ সমর্থনকারীরা সরকারি বাস আটকানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের বাগডোগরা থেকে ৩ জন বিজেপি সমর্থককে আটক করা হয়। ফাঁসিদেওয়া থেকে ২৯ জন সিপিএম সমর্থককে আটক করে পুলিশ। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার বলেন, “বনধে কোথাও গণ্ডগোলের ঘটনা ঘটেনি। বাগডোগরায় ৩ জন জাতীয় সড়কে গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।” দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল জানান, দার্জিলিংয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। ফাঁসিদেওয়ায় রাস্তা আটকানোয় ২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়।”
এ দিন সকাল থেকে শিলিগুড়িতে বনধ বিরোধিতায় রাস্তায় নামে তৃণমূল। পাল্টা বনধের পক্ষেও মিছিল করে সিপিএম ও বিজেপি। বৃষ্টির মধ্যেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের নেতৃত্বে তৃণমূলের মিছিল বের হয়। তাঁরা হিলকার্ট রোড ও সেবক রোডে মিছিল করে। গৌতমবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্যাস, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং খুচরো বাজারে বিদেশী বিনিয়োগ নিয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি করে আন্দোলন করছেন। এই সময় বনধ ডাকার মানে হয় না।” পাশাপাশি, সকাল ৯টা নাগাদ অশোক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে মিছিল বের করে বামফ্রন্ট কর্মীরা। তাঁরা হিলকার্ট রোডে মিছিল করে। অশোকবাবু বলেন, “মানুষ স্বতস্ফূর্ত ভাবে বনধে সাড়া দিয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব রাস্তায় নেমে বনধ ব্যর্থ করার চেষ্টা বিফল হয়েছে। বেশ কয়েকটি চা বাগানের শ্রমিকরাও ধর্মঘটে সামিল হয়েছে।” বনধে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর, শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, শিলিগুড়ি পুরসভায় হাজিরার হার ভাল ছিল। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে এ দিন ১০ জন আধিকারিকের মধ্যেই সকলেই উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন যুগ্ম সচিব তাসি ডেন্ডুক শেরপা। তিনি জানান, বাস্তুকারদের অধিকাংশই এ দিন দফতরে কাজ করেছেন। কর্মী আধিকারিকদের উপস্থিতি হার স্বাভাবিক। পরিষেবা ঠিক আছে কি না তা দেখতে এ দিন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান তথা বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। তিনি সকালে শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার এবং চম্পাসারি বাজার এলাকা যান॥বনধ পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.