তৃণমূল কর্মীকে খুনের ঘটনায় অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ার ঘুসিঘাটা এলাকায়। আজ, শুক্রবার এই জেলারই ঠাকুরনগরে একটি কলেজের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী জেলায় আসার ঠিক আগের মহূর্তে আমাদের দলের এক কর্মীকে নৃশংস ভাবে খুন করা হল। শুধু তা-ই নয়, দেহ লোপাটেরও চেষ্টা হয়েছে। গোটাটাই সিপিএমের চক্রান্ত। অপরাধীরা এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।” খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএম।
|
প্রসেনজিৎ মণ্ডল |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে ঘুসিঘাটা লকগেটের কাছে বিদ্যাধরী নদীর বালির চরে প্রসেনজিৎ মণ্ডল (২৪) নামে ওই তৃণমূল কর্মীর ক্ষত-বিক্ষত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তিনি ওই এলাকারই উত্তর কুলটির বাসিন্দা। বুধবার রাতে ‘যাত্রা দেখতে’ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন দুই বন্ধু। টগর মণ্ডল নামে তাঁদেরই এক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। স্বপন মণ্ডল নামে অন্য জন পলাতক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত ১০টা নাগাদ প্রসেনজিৎকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান স্বপন ও টগর। কাছেই যাত্রা দেখতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। রাতে বাড়ি ফেরেননি প্রসেনজিৎ। সকালেও খবর না মেলায় বাড়ির লোকজন হাড়োয়া থানায় আসেন। সে সময়েই টেলিফোনে খবর আসে, ঘুসিঘাটা মন্দিরের পাশে এক পাটি রক্তমাখা চটি পড়ে আছে। ওসি সুমিত মণ্ডল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। কিছুটা দূরেই বিদ্যাধরী নদীর চরে পড়ে থাকতে দেখা যায় ওই যুবকের দেহ। মাথার পিছনে ভারি কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন আছে। পুলিশের অনুমান, খুন করে দেহ টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল নদীর চরে। দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
তৃণমূল নেতৃত্ব খুনের পিছনে ‘সিপিএমের হাত’ দেখলেও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ‘মহিলা-ঘটিত’ কোনও কারণে খুন হয়ে থাকতে পারেন ওই যুবক। তদন্ত চলছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল অবশ্য দাবি করেছেন, পঞ্চায়েত ভোটের আগে এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে ‘সিপিএম-আশ্রিত দুষ্কৃতী’রাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। সিপিএম নেতা ভুবন মণ্ডল বলেন, “এই খুনের সঙ্গে আমাদের দলের কোনও যোগ নেই। ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কারণে ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে।” |