ছন্দে শিল্পাঞ্চল, অন্যত্র কর্মনাশা বনধের ছবি
তিন দিনের টানা বেসরকারি বাস ধর্মঘটের পর বৃহস্পতিবার বাম-বিজেপির ডাকা সাধারণ ধর্মঘটেও ব্যাহত হল স্বাভাবিক জনজীবন। পূর্ব মেদিনীপুরে অবশ্য ধর্মঘট সত্ত্বেও হলদিয়া শিল্পাঞ্চল, কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সচল ছিল অন্যান্য দিনের মতই। সরকারি অফিস, স্কুল-কলেজ খোলা থাকলেও সাধারণ মানুষ, ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি ছিল কমের দিকেই।
ধর্মঘটের জেরে এদিন সকাল থেকে জেলার কোনও সড়কে বেসরকারি বাস, মালবাহী গাড়ি চলাচল করেনি। হলদিয়া-মেচেদা, দিঘা-কলকাতা সড়কে সরকারি বাস চলেছে। হাওড়া-খড়গপুর, হলদিয়া-পাঁশকুড়া, দিঘা-হাওড়া শাখায় ট্রেন চলাচল করলেও যাত্রী সংখ্যা ছিল কম। যদিও সরকারি অফিস, স্কুলে হাজির থাকা বাধ্যতামুলক হওয়ায় অধিকাংশ কর্মী, শিক্ষক-শিক্ষিকারা ভোগান্তি নিয়েই কর্মস্থলে যান। এ দিন তমলুক, কাঁথি শহরে অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল। মানুষের আনাগোনাও ছিল কম।
জেলা ডাকঘরের সামনে বনধ সমর্থনকারীদের বিক্ষোভ। তমলুকে বৃহস্পতিবার ছবিটি তুলেছেন পার্থপ্রতিম দাস।
যদিও কিছুটা হলেও আলাদা ছবি ছিল হলদিয়া শিল্পাঞ্চল ও এগরা শহরে। তবে এখানে দোকানপাট খোলা থাকলেও ভিড় কম ছিল। শিল্পাঞ্চলের হলদিয়া বন্দর, তেল শোধনাগার, হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল, মিৎসুবিশি, টাটা কেমিক্যাল, ইসিএল প্রভৃতি কারখানায় এ দিন স্বাভাবিক কাজ হয়েছে। তেল শোধনাগারের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার এন কে পারমার বলেন, “ শোধনাগারে স্বাভাবিকভাবেই কাজ হয়েছে।” হলদিয়ার সিটু নেতা তথা সিপিএম জোনাল সম্পাদক সুদর্শন মান্না বলেন, “ধর্মঘটে মিশ্র প্রভাব পড়েছে। শ্রমিকরা তৃণমূলের চাপে পড়ে কারখানায় গিয়েছে। না গেলে ছাটাইয়ের হুমকি দেওয়া হয়েছিল”। যদিও তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “হলদিয়ায় শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকরা স্বত:স্ফূর্তভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন।” হলদিয়া মহকুমা প্রশাসনিক অফিস-সহ হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের অফিস এমনকি বামফ্রন্ট পরিচালিত হলদিয়া পুরসভার অফিসও এ দিন খোলা ছিল। যদিও পুরপ্রধান তমালিকা শেঠ অফিসে আসেননি। হলদিয়ার মঞ্জুশ্রী মোড় থেকে দুর্গাচক কলোনি বাজার পর্যন্ত ধর্মঘটের বিরুদ্ধে মিছিল করে তৃণমূল সমর্থকরা।
এ দিন কাথি শহরে পুরসভা, বিভিন্ন সরকারি অফিস, স্কুল-কলেজ খোলা ছিল। দিঘায় সরকারি বাস চললেও বেসরকারি বাস চলেনি। হোটেলগুলি খোলা থাকলেও ভিড় ছিল কম। এ দিন সকাল থেকে বিজেপি, এস ইউ সি সমর্থকদের রাস্তায় নেমে ধর্মঘট সফল করার চেষ্টা দেখা গিয়েছে। এমন কি তমলুক শহরের শঙ্করআড়ায় হলদিয়া-মেচেদা সড়কে একটি ট্যাক্সিতে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বি জে পি সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
এগরার একটি স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল প্রায় স্বাভাবিক। ছবি তুলেছেন কৌশিক মিশ্র।
জেলা শাসকের অফিসের সামনে গিয়ে গোলমালের চেষ্টার অভিযোগে ৩ জন বিজেপি সমর্থককে পুলিশ গ্রেফতার করে। হলদিয়ার সুতাহাটায় বিজেপি সমর্থকরা ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল করে। অন্যদিকে এ দিন ধর্মঘটের সমর্থনে তমলুকের রামতারকে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে পরে এসএউসি সমর্থকরা জেলা শাসকের অফিস, প্রধান ডাকঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। সিপিএমের জেলা সম্পাদক কানু সাহু বলেন, “এদিন জেলায় সর্বাত্মক ও শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মঘট হয়েছে। মানুষের সমর্থনেই ধর্মঘট সফল হয়েছে।” জেলা পুলিশ সুপার সুকেশ কুমার জৈন বলেন, “ধর্মঘটে জেলার কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সরকারি বাস, ট্রেন চলাচল করেছে। জেলার অধিকাংশ সরকারি অফিস, স্কুল-কলেজ খোলা ছিল। জোর করে কোথাও অফিস বন্ধ করার ঘটনা ঘটেনি। জেলা শাসকের অফিসের সামনে গোলমালের চেষ্টার অভিযোগে ৩ জন বিজেপি সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে।” অতিরিক্ত জেলা শাসক (সাধারণ) মলয় হালদার বলেন, “সরকারি অফিসে কর্মীদের উপস্থিতির হার ছিল ৯৬ শতাংশ। স্কুলগুলিতে শিক্ষকদের উপস্থিতির হার ৯০ শতাংশ।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.