ভিড় কাঞ্চনজঙ্ঘায়
বৃহস্পতিবারের ডাকা বন্ধেও সচল থাকল শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম। এ দিন থেকে শুরু ফেডকাপের খেলা দেখতে বন্ধের মধ্যে স্টেডিয়ামে ভিড় করেছেন ফুটবলপ্রেমীরা।
তবে দর্শকদের সুযোগ সুবিধা দেওয়া থেকে ম্যাচের আয়োজনের বিভিন্ন ক্ষেত্রেই অব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তার মধ্যে দেশের ফুটবল প্রতিযোগিতাগুলির মধ্যে অন্যতম ফেডকাপের ম্যাচ টিভির পর্দায় দেখতে পাওয়া যাবে বলে রাজ্য তো বটেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই উৎসাহীরা আশা নিয়ে বসেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যে ‘আইএমজি’ সংস্থার উপর সেই দায়িত্ব ছিল তাঁরা ম্যাচ সম্প্রচারের ব্যবস্থাই করতে পারেনি। তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ফেডারেশনের কর্মকর্তারাও। তাঁরাই জানান, ফেডারেশন কাপ টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলি সম্প্রচারের সত্ত্ব কিনেছিল আইএমজি। তাদের সঙ্গে ‘টেন স্পোর্টস’-এর ৩ বছরের চুক্তি হওয়ার কথা ছিল ম্যাচের সম্প্রচারের ব্যবস্থা করতে। তবে ওই সংস্থার কিছু শর্ত মেনে নিতে পারেনি আইএমজি। তাই শেষ পর্যন্ত ম্যাচ সম্প্রচারের পুরো বিষয়টি এখন পর্যন্ত ভেস্তে রয়েছে। ফেডারেশনের তরফে আইএমজি’র উপর চাপ দেওয়া হচ্ছে। অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের ‘সিনিয়র’ সহ-সভাপতি সুব্রত দত্ত বলেন, “ফেডারেশন কাপের ম্যাচগুলি সম্প্রচার করে দেখাতে না-পারার বিষয়টি দুর্ভাগ্যের, হতাশাজনক। ফেডারেশনের সভাপতি প্রফুল পটেল আইএমজি’র কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ফেডারেশন কাপের সম্প্রচার এ ভাবে ভেস্তে যাওয়ার বিষয়টি আইএমজি’র পক্ষেও যে ভাল নয় তা তিনি জানিয়েছেন।”
এক নজরে ফেড নামচা
• উত্তরবঙ্গে বন-পাহাড়ের টানে ঘুরতে এসে বন্ধের দিন শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে খেলা দেখলেন একদল বিদেশি পর্যটক। অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা ১০ জনের ওই দলটি মহমেডান স্পোর্টিং-এয়ার ইন্ডিয়ার খেলা দেখে।

• উদ্বোধনে নেই ক্রীড়া মন্ত্রী মদন মিত্র। আয়োজক কমিটির তরফে জানানো হয়েছিল উদ্বোধনের দিন ক্রীড়া মন্ত্রীর আসার কথা রয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি আসতে পারেননি। ফেডকাপের উদ্বোধন করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী।

• ফেড কাপে ‘বল বয়’ হতে পেরে খুশি রিমিক, দাস রমেশ রায়দের মতো কচিকাঁচারা। শিলিগুড়ির বিভিন্ন কোচিং ক্যাম্পে অনুশীলন করে তারা। এমন ৩০ জনকে বল বয়ের সুযোগ দেওয়া হয়।

• কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম সাফাই করছেন শিলিগুড়ি পুরসভার সাফাই কর্মীরা। পুর কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হয়ে ওই পরিষেবার ব্যবস্থা করেছেন। যাঁরা ওই কাজে যুক্ত তারা স্টেডিয়ামে থাকছেন। তাঁরা জানান, কাজও হয়েছে, খেলাও দেখা হয়েছে।

• জলের বোতল নিয়ে মাঠে ‘ফেন্সিং’-এর ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না সংবাদ মাধ্যমের চিত্র সাংবাদিকদের। কর্মকর্তারা আলোচনা করে তাদের জলের বোতল নিয়ে যেতে অনুমতি দেন।
ঘরে বসে টিভির পর্দায় চোখ রেখে ম্যাচ না-দেখতে পেয়ে যেমন হতাশ হয়েছে উৎসাহীরা তেমনই ম্যাচের আয়োজন নিয়েও অব্যবস্থার অভাব ছিল না। তা নিয়ে এ দিন মাঠে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ম্যাচ কমিশনার ওয়ালটার পেরেইরা। বিশেষ করে স্টেডিয়ামে প্রেসবক্স ঠিক জায়গায় তৈরি না-হওয়ায় এবং তাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ঠিক মতো না দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ফুটবলারদের হোটেল থেকে অনুশীলন মাঠে বা স্টেডিয়ামে আনার ক্ষেত্রেও যানবাহনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা নেই বলে কয়েকটি দলের তরফে জানানো হয়েছে। অভিযোগ, খেলার আগে সংবাদ মাধ্যমের কাছে ‘টিম লিস্ট’ পৌঁছে দেওয়া, কোথায় কখন অনুশীলন করছে দলগুলি সঠিক সময়ে সেগুলি জানানো এ সব কিছুতেই অব্যবস্থা রয়েছে। তা ছাড়া যেখানে প্রেসবক্স বানানো হয়েছে তা খেলা দেখার পক্ষে অনেকটাই দূরে বলে বিস্তর সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের। ম্যাচের শেষে সঠিক জায়গায় সাংবাদিক বৈঠকের ব্যবস্থাও হয়নি। ম্যাচ কমিশনার বলেন, “যেখানে বসানো হয়েছিল যেখান থেকে ম্যাচ দেখতে সমস্যা হচ্ছিল। এমন বেশ কিছু অব্যবস্থার বিষয় নজরে এসেছে।” মাঠের মোটা ঘাস থাকার জন্য সমস্যার কথা জানিয়েছেন এয়ার ইন্ডিয়া, মহমেডান স্পোর্টিংয়ের মতো কয়েকটি দলের কোচ ফুটবলাররাও। ফেডারেশনের অন্যতম কর্তা সুব্রতবাবু বলেন, “২৫ বছর আগে শিলিগুড়ির এই মাঠে নেহেরু কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা হয়েছিল। তার পর বড় খেলা হয়নি। যাঁরা আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছেন তাদের অভিজ্ঞতার কিছুটা অভাব রয়েছে। তবে তাঁরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। উৎসাহ নিয়ে কাজ করছেন। আয়োজনের বিভিন্ন দিকগুলি নিয়ে যে ঘাটতি রয়েছে দু’ এক দিনের মধ্যেই তা মিটে যাবে বলে মনে করি। তাই একটু ধৈর্য ধরতে হবে।” তিনি জানান, দেশে এ ধরনের ম্যাচ খেলানোর বিশেষ পরিকাঠামো নেই। ফ্লাড লাইট রয়েছে এমন স্টেডিয়াম হাতে গোনা। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে সেই সুযোগ রয়েছে। তা ছাড়া ম্যাচ খেলানোর নতুন জায়গা তৈরি করতে না পারলে এ ধরনের ফুটবল প্রতিযোগিতা ভবিষ্যতে বন্ধ হয়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন।
এ দিন বেলা ৩ টা থেকে এয়ার ইন্ডিয়া-মহমেডানের ম্যাচ দেখতে বন্ধ উপেক্ষা করেই ভিড় জমান দর্শকরা। সন্ধ্যায় ফ্লাডলাইটে মোহনবাগান-চার্চিল ব্রাদার্সের ম্যাচ দেখতে ভিড় ছিল আরও অনেক বেশি। বন্ধের সমর্থক দলগুলির স্থানীয় নেতৃত্বও ঘোষণা করেছিলেন তাঁরা ফেডা কাপের এই খেলাকে বন্ধের আওতার বাইরে রাখছেন। যাঁরা খেলা দেখতে আসবেন তাঁদেরও বাধা দেওয়াও হবে না। কাঞ্চনজঙ্ঘার দর্শক নিয়ে উৎসাহী লাল-হলুদ কোচ মর্গ্যানও। আজ, শুক্রবার তাদের খেলা স্পোর্টিং ক্লাব দা গোয়ার সঙ্গে। বৃহস্পতিবার রানিডাঙায় এসএসবি মাঠে অনুশীলন সেরে তিনি বলেন, “এ শহরে ইস্টবেঙ্গলের প্রচুর দর্শক রয়েছে শুনেছি। লাল-হলুদকে সমর্থন করতে মাঠে তাঁরা দল বেঁধে আসবেন বলে আমি আশাবাদী। আশা করি আমাদের ফুটবলাররাও তাদের ভাল কিছু করে দেখাতে পারবে।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.