কেউ শেষ লগ্নে জ্বলে উঠলেন। কেউ আবার অভিষেকেই মহাতারকা। আর্জেন্তিনার লিওনেল মেসি এবং ব্রাজিলের অস্কার নিজেদের ক্লাবের হয়ে জোড়া গোল করে টিমের মান বাঁচালেন। সেলেকাওদের ঘরের মাঠে ব্রাজিল-আর্জেন্তিনা যুদ্ধ ২-১ হলেও ইউরোপের স্কোরশিট কিন্তু ২-২:
একা মেসি রক্ষা করে... টিমের বারোটা আর একটু হলেই বাজিয়ে দিয়েছিলেন দানি আলভেজ। স্পার্টাক মস্কোর বিরুদ্ধে উদ্বোধনী ম্যাচ নিজস্ব মেজাজেই শুরু করেছিল বার্সেলোনা। ক্রিশ্চিয়ান তেইয়োর গোলে বার্সা এগিয়েও যায়। কিন্তু ২৯ মিনিটে ম্যাচের গতিমুখ যে উল্টো দিকে আলভেজ একাই ঘুরিয়ে দেবেন, কে জানত! আলভেজের আত্মঘাতী গোল আচমকাই রাশিয়ার ক্লাবকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনে। দ্বিতীয়ার্ধে রোমুলোর গোল রীতিমত স্তব্ধ করে দেয় কাতালানদের।
এই অবস্থা থেকে বাঁচতে দরকার ছিল মহাতারকার স্ফুলিঙ্গের। মেসি সেটা করে দেখালেন শেষ কুড়ি মিনিটে। এক নয়, এক জোড়া গোলে। বার্সা শেষ পর্যন্ত ৩-২ জিতল বটে, কিন্তু প্রশ্ন রেখে গেল রক্ষণ নিয়ে।
|
জোড়া গোলের দুই নায়ক। মেসি ও অস্কার। ছবি: রয়টার্স ও এপি |
ফার্গির সেঞ্চুরি... কোচ হিসেবে বিশ্বফুটবলে কেউ যা করে দেখাতে পারেননি, স্যর আলেক্স ফার্গুসন সেটাই করে দেখালেন। বুধবার গালাতাসারে-কে ১-০ হারানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রথম কোচ হিসেবে একশোটা চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড তাঁর ঝুলিতে ঢুকে পড়ল। কিন্তু মাইকেল কারিকের গোলে ম্যাচ জেতার পরেও হতাশ ফার্গুসন। আন্তোনিও ভ্যালেন্সিয়ার একের পর এক খারাপ সেন্টার, গোল করার বদলে স্ট্রাইকারদের কার্ড দেখা, ফান পার্সি-নানি-হার্নান্ডেজদের গোল মিসের বহর দেখে কী-ই বা বলবেন ফার্গি? তাঁর টিমে ‘বলার মতো’ ঘটনা একটাই। সাত মিনিটে ক্যারিকের গোল। কাগাওয়ার রিটার্ন পাস ধরে একক দক্ষতায় বিপক্ষ রক্ষণে ঢুকে পড়েন ক্যারিক। গোলকিপার এগিয়ে এসে তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি।
দ্য অস্কার গোজ টু... নৌ কাম্প নয়, ওল্ড ট্র্যাফোর্ড নয়, বুধবারের সবচেয়ে উত্তেজনার ম্যাচটা হল স্টামফোর্ড ব্রিজে। গত বারের চ্যাম্পিয়ন চেলসি বনাম জুভেন্তাস ২-২ থাকলে কী হবে, এক ব্রাজিলীয় প্রতিভার রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে ম্যাচটাই অন্য মাত্রা পেয়ে গেল।
তিনি অস্কার। ব্রাজিলের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। যিনি চেলসির হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অভিষেকেই বিখ্যাত ইতালীয় রক্ষণের বিরুদ্ধে একাই দু’গোল করে শিরোনামে। পিছিয়ে পড়া অবস্থা থেকে টিমকেও তুলে আনলেন সমতার পাটাতনে। দু’টো গোলই প্রথমার্ধে। সবচেয়ে বেশি আলোচনা দ্বিতীয় গোলটাকে ঘিরে। দুই ডিফেন্ডারকে গায়ে নিয়ে জুভেন্তাস রক্ষণের দিকে এগোচ্ছিলেন অস্কার। আচমকা ব্যাক হিল করে বল থামিয়ে দেন। বিভ্রান্ত দুই ডিফেন্ডার তাঁকে ছেড়ে এগিয়ে যেতে ওই বলেই তিনি শট নেন। যা গোলকিপার বুঁফোকে বোকা বানিয়ে ‘ডিপ’ করে গোলে ঢুকে যায়। অস্কার বলছেন, “বলে প্রথম টাচটার সঙ্গে সঙ্গেই আমি বুঝেছিলাম ওটা গোলে যাবে।”
জিতেও বিপন্ন বায়ার্ন... ভ্যালেন্সিয়ার বিরুদ্ধে ২-১ জয় এসেছে, কিন্তু টিমের অবস্থায় খুশি নন বায়ার্ন কোচ জাপ হেইঙ্কেস। কী ব্যাপার? না, মনে করা হচ্ছে স্পেনীয় প্রতিপক্ষের যে ভাবে টুঁটি টিপে ধরা উচিত ছিল জার্মান ‘জায়ান্ট’-দের তা হয়নি। বায়ার্নের হয়ে দু’টো গোল সোয়াইনস্টাইগার এবং টনি ক্রুজের। কিন্তু সে সব ছাপিয়ে প্রশ্ন, কী ভাবে ফাঁকায় গোল করে গেলেন ভ্যালেন্সিয়ার নেলসন ভালদেজ? শেষ দিকে আবার পেনাল্টিও নষ্ট করল বায়ার্ন। |