আর্জেন্তিনা-১ (মার্তিনেজ)
ব্রাজিল-২ (পাওলিনহো, নেইমার-পেনাল্টি) |
ব্রাজিল-আর্জেন্তিনা ম্যাচ সব সময়েই আকর্ষণীয়। আর আমি যেখানেই থাকি, এই ম্যাচ দেখার লোভ কিছুতেই সামলাতে পারি না। ফেডারেশন কাপ খেলতে শিলিগুড়ি এসেও পারলাম না। বৃহস্পতিবার সকালে প্র্যাক্টিসে যাওয়ার আগে ঠিক সময় বের করে ফেললাম নেইমারদের জন্য। হোটেলের টিভিতেই দেখলাম “সুপারক্লাসিকো”-র প্রথম লেগের ম্যাচটা।
গোইয়ানিয়ার ঘরের মাঠে ম্যাচটা ব্রাজিল জিতল ঠিকই, তবে আর্জেন্তিনা যে খুব খারাপ খেলেছে তা কিন্তু মোটেই নয়। ম্যাচের যে ক’টা ব্যাপার আমার ভাল লেগেছে সেগুলোই জানাতে চাই
• ইউরোপে না খেলেও নেইমার তারকা: বুদ্ধিমান ফুটবলার বলতে যা বোঝায়, নেইমার ঠিক তাই। মেসির সঙ্গে তুলনায় যেতে চাই না। নেইমারের বয়স মাত্র কুড়ি। কিন্তু মাঝমাঠের বেশির ভাগ বলই ওকে লক্ষ করে আসছে। আর ওর পায়ে বল মানেই বিপক্ষ রক্ষণে অতিরিক্ত সতর্কতা। ভয় ধরছে ডিফেন্ডারদের মধ্যে।
আমার ফুটবলার বন্ধুদের অনেকের মত, ইউরোপে না খেললে নেইমার পরিপূর্ণ ফুটবলার হয়ে উঠতে পারবে না। আমার কিন্তু সেটা মনে হয় না। আফ্রিকা, এশিয়া, লাতিন আমেরিকা যেখানেই খেলো, তোমাকে নব্বই মিনিট নিজের দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করতেই হবে। সেই কাজটা নেইমার অনেকের থেকে ভাল পারে। যেমন ইনজুরি টাইমের শেষ মিনিটের পেনাল্টিটা। দল ১-১ আটকে। ওই সময় মাথা ঠান্ডা রেখে পেনাল্টি মারা যে কী কঠিন সেটা যারা মেরেছে তারাই জানে!
|
গোলের পর বলে চুমু নেইমারের। |
• মেসি-আগুয়েরোদের ছাড়াই আর্জেন্তিনার লড়াই: মেসি, ইগুয়াইন, আগুয়েরো, দি’মারিয়া, মাসচেরানো-সহ আর্জেন্তিনার প্রথম দলের প্রায় পুরোটাই এখন নিজের নিজের ক্লাবের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলতে ব্যস্ত। ব্রাজিলের নামী তারকাদের মধ্যে অস্কারই শুধু চেলসিতে। বেশির ভাগ উঠতি ফুটবলার, যাদের উপর কোচ মানো মেনেজেস ভরসা রাখছে, তারা সবাই ব্রাজিলে খেলে। ভেবেছিলাম আর্জেন্তিনা সে রকম খেলতে পারবে না। দেখলাম, দেশের জার্সি গায়ে নামলে তারকা-ফারকা কোনও ব্যাপার নয়। দুর্দান্ত লড়াই করল মেসির দেশের ছেলেরা। এমনকী ২০ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল আর্জেন্তিনাই।
• তারুণ্যে ভরপুর ব্রাজিলের মাঝমাঠ: মরসুম শুরুর আগে আমাদের টিম যখন প্র্যাক্টিস ম্যাচগুলো খেলছিল তখন অনেক তরুণ ফুটবলারকে কোচ ট্রেভর মাঝমাঠে খেলিয়েছেন। ওরা দেখিয়েছে গতি আর দক্ষতার মিশেলে কী ফলাফল হতে পারে। ব্রাজিলের এই মাঝমাঠটাও তারুণ্যের শক্তিতে ভরপুর। প্রতিভাবান এই ফুটবলাররা বেশ দক্ষতার সঙ্গেই আর্জেন্তিনীয় রক্ষণে বারবার হানা দিয়েছে। |
• লক্ষ্য ২০১৪ বিশ্বকাপ: ব্রাজিলের গত কয়েকটা ম্যাচ দেখে একটা জিনিস বুঝলাম, মানো মেনেজেসের লক্ষ্য খুব পরিষ্কার। আর সেটা হল মোটামুটি ভাবে এই টিমটাকেই দু’বছর পরের ঘরের মাঠের বিশ্বকাপের জন্য রেখে দেওয়া। তাতে নেইমার-লুকাসদের বোঝাপড়া দারুণ জায়গায় চলে যাবে। ২০১৪ বিশ্বকাপে সুযোগ আরও বাড়বে ব্রাজিলের। বার্সেলোনা থেকে ডেম্পোনিজের নিজের দেশে এই ক্লাবগুলো তো দেখিয়েছে একই টিম রেখে দিলে কী ফল পাওয়া যায়! |